ফুটেজ দেখে শনাক্ত, সাজ্জাদের দুই সহযোগী গ্রেপ্তার
Published: 3rd, April 2025 GMT
চট্টগ্রামে জোড়া খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা পুলিশকে জানান, ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেনকে মারতেই মোটরসাইকেল থেকে প্রাইভেট কারে গুলি করেন। ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেনকে ধরিয়ে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁরা এই কাজ করেন।
বাকলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেল হক আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। শুনানির দিন ধার্য হয়নি। আসামিদের কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন মো.
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে হামলায় অংশ নেওয়াদের শনাক্ত করা হয়। এর মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার দিন তাঁদের মোটরসাইকেল থেকে প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলিবর্ষণ করতে দেখা গেছে।
ওসি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা তাঁদের বস ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেনকে ধরিয়ে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে আরেক ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ারকে প্রাণে মারতে গুলি করেছিলেন প্রাইভেট কারে। এ জন্য তাঁরা টাকাও পান। তবে এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া লোকজন মোট কত টাকা পেয়েছিলেন, তার বিস্তারিত তদন্ত করা হচ্ছে।
জোড়া খুনের ঘটনাটি ঘটে গত শনিবার রাতে। ওই দিন রুপালি রঙের একটি প্রাইভেট কার কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে বাকলিয়া অ্যাকসেস রোডে আসতে থাকে। গাড়িটি শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে কিছু দূর যাওয়ার পর পেছন থেকে পাঁচটি মোটরসাইকেল সেটিকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। প্রাইভেট কারের ভেতর থেকেও মোটরসাইকেল আরোহীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। গুলিতে অনেকটা ঝাঁঝরা হয়ে যায় গাড়িটি। নিহত ব্যক্তিরা হলেন বখতিয়ার হোসেন (৩০) ও মো. আবদুল্লাহ (৩২)। তাঁরা সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। গাড়িতে সরোয়ারও ছিলেন, তবে বেঁচে যান।
এই ঘটনায় নিহতের পরিবারের করা মামলায় বলা হয়েছে, দুই সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ ও সরোয়ার হোসেনের বিরোধের জের ধরে আলোচিত জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে। সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেওয়ায় জন্য দায়ী করে ক্ষুব্ধ হয়ে সরোয়ার ও তাঁর অনুসারীদের ওপর এই হামলা চালানো হয়।
সন্ত্রাসী সাজ্জাদ, তাঁর স্ত্রী তামান্না শারমিনকে হুকুমের আসামিসহ সাতজনর নাম উল্লেখ করে গত মঙ্গলবার বাকলিয়া থানায় মামলা করেন নিহত বখতিয়ারের মা ফিরোজা বেগম। মামলার বাকি পাঁচ আসামি হলেন মো. হাছান, মোবারক হোসেন, মো. খোরশেদ, মো. রায়হান ও মো. বোরহান। তাঁরা সবাই সাজ্জাদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
সাজ্জাদ ও সরোয়ার দুজনই বিদেশে পলাতক আট খুনের মামলার আসামি শিবির ক্যাডার হিসেবে পরিচিত সাজ্জাদ আলীর অনুসারী ছিলেন। দুজনের বিরুদ্ধে ১৫টি করে মামলা রয়েছে। তবে এক দশক ধরে সরোয়ার সাজ্জাদ আলীর গ্রুপ থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপর সরোয়ার ও ছোট সাজ্জাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। ৫ আগস্টের পর দুজনই জামিনে বেরিয়ে আসেন। জোড়া খুনসহ সরোয়ারের পাঁচজন অনুসারী গুলিতে মারা যান। ওসিকে মারার হুমকি দেওয়ার পর গত ২৯ জানুয়ারি সাজ্জাদকে ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করে পুলিশ। পরে গত ১৫ মার্চ ঢাকার একটি শপিং মল থেকে এক দম্পতি তাঁকে পুলিশে ধরিয়ে দেন। হুমকির পর তাঁরাও থানায় মামলা করেন সাজ্জাদ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র অন স র ব কল য় পর চ ত র দ জন
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ কিলোমিটারজুটে যানজট
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নিমশার থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটারজুড়ে যানজট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকেরা। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কাভার্ড ভ্যান উল্টে যাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এ যানজট দেখা দেয়।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে মহাসড়কে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নূরীতলা এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ফেনী থেকে রেকার এনে কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধারের কাজ শুরু করে পুলিশ।
সকাল সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।
ঢাকাগামী রয়েল পরিবহনের চালক রমিজ উদ্দিন বলেন, সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা করে বুড়িচংয়ের নিমশার বাজারে যানজটে এক ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। ৫ মিনিট গাড়ি চললে ২০ মিনিট বসে থাকতে হয়। এভাবে ১০টা ৪০ মিনিটে চান্দিনায় পৌঁছেছি। এ সময়ে ঢাকার কাছাকাছি থাকার কথা ছিল।
নিমশার বাজারে আটকে থাকা প্রাইভেট কারের যাত্রী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ভোর থেকে যানজট অথচ সড়কে হাইওয়ে পুলিশ দেখছি না।
ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন বলেন, মহাসড়কের নূরীতলা এলাকায় উল্টে কাভার্ড ভ্যানটি আড়াআড়িভাবে পড়ে ছিল। পরে ঢাকামুখী লেনের বেশ কিছু গাড়ি উল্টো পথে ঢোকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফেনী থেকে ক্রেন এনে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিওনের পুলিশ সুপার অতিরিক্ত ডিআইজি মো. খাইরুল আলম সমকালকে বলেন, দুর্ঘটনার কারণেই যানজট দেখা দিয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে।