রমজান মাসের শুরুতে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার রানীগঞ্জ উদয়ন কিন্ডারগার্টেন স্কুল মাঠে নাটক মঞ্চায়নের কথা ছিল। স্থানীয় মুসল্লিদের বাধায় তা স্থগিত রাখতে বাধ্য হন আয়োজকরা। বুধবার একই জায়গায় মঞ্চ তৈরি করে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নাটকটি মঞ্চায়নের প্রস্তুতি চলছিল। আবারও মুসল্লিদের বাধায় নাটক মঞ্চে গড়াতে পারেনি।

রানীগঞ্জ বাজার মসজিদের সভাপতি ও ব্যবসায়ী মো.

সিরাজুল ইসলাম জানান, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খন্দকার আজিজুর রহমান পেরার উপস্থিতিতে দুর্গাপুর ইউনিয়নের কোনো স্থানে অশ্লীল নৃত্য করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই মঞ্চের স্থানে সন্ধ্যায় কয়েকশ মুসল্লির অংশগ্রহণে মিলাদ ও দোয়া আয়োজন করা হয়। গত কয়েক বছর ধরে এখানে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা নাটক মঞ্চায়নের নামে অশালীন কর্মকাণ্ড করে আসছিলেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

নাটক আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত উপজেলা যুবলীগের সাবেক সদস্য খন্দকার শাহাদাত হোসেন সেলিম জানান, বুধবার রাতে তারা বাজারে বসেছিলেন। এ সময় বাজার মসজিদের ইমাম মো. আজিজুল হক তুষার, মসজিদের সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলামসহ কয়েকজন মুসল্লি এসে নাটক মঞ্চায়ন করতে নিষেধ করেন। ‘চিরদিনের জন্য এখানে নাটক বন্ধ’ রাখার কথা বলেন। এর পর নাটকের জন্য তৈরি মঞ্চ ও প্যান্ডেল গতকাল সকাল ৯টার মধ্যে ডেকোরেটরের লোকজন খুলে নিয়ে যায়।

খন্দকার শাহাদাত হোসেন সেলিম দাবি করেন, ‘আপন দুলাল’ একটি গীতিনাট্য। এতে নারী চরিত্র বা অভিনয় নেই। পরিশীলিত নাটক। অথচ এই নাটক মঞ্চে গড়াতে দেননি তারা। এতদিনের প্রস্তুতি, শ্রম ও উদ্যোগ সব ভেস্তে গেছে।

এ বিষয়ে রানীগঞ্জ বাজার মসজিদের ইমাম মো. আজিজুল হক তুষার জানান, সমাজে খারাপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কায় মুসল্লিরা আয়োজক কমিটিকে নাটক মঞ্চায়ন না করতে অনুরোধ করেন। তারাও সমাজের ভালোর জন্য শেষ পর্যন্ত সেই নাটক অনুষ্ঠান করেননি। এখানে এককভাবে কেউ নিষেধ করেননি। স্থানীয় মুসল্লি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সিদ্ধান্ত নিয়ে আয়োজকদের অনুরোধ করেছেন।

কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আজিজুর রহমান পেরা বলেন, নাটক মঞ্চায়নের নামে কয়েক বছর ধরে রানীগঞ্জ বাজার এলাকায় মাদক ও অশালীন কর্মকাণ্ডের আসর বসত। তাই এটি সর্বস্তরের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও যেন কাপাসিয়াকে মাদকমুক্ত করা যায় সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যে রানীগঞ্জ, ফুলবাড়িয়া, কামড়ামাশকসহ বেশ কয়েকটি স্থানে মাদকবিরোধী সমাবেশ করা হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে নাশেরা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে একটি মাদকবিরোধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আব্দুল বারিক জানান, নাটক আয়োজক কিংবা বাধাদানকারী কোনো পক্ষ থানায় কিছু জানায়নি। তিনি কিছুই জানেন না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তামান্না তাসনিম জানান, তাঁর কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ধ র অভ য গ ন টক মসজ দ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

চুম্বন দৃশ্যের অভিজ্ঞতা ভয়ংকর ছিল: মধু

বলিউড অভিনেত্রী মধু শাহ। নব্বই দশকের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী মধু নামেই পরিচিত। মনি রত্নম নির্মিত ‘রোজা’ সিনেমায় অভিনয় করে প্রশংসা কুড়ান। নব্বই দশকে একটি সিনেমায় চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করেন মধু, যা ভীষণ তিক্ত অভিজ্ঞতা ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।

কয়েক দিন আগে নিউজ১৮-কে সাক্ষাৎকার দেন মধু। এ আলাপচারিতা তিনি বলেন, “আজকাল সিনেমায় যে ধরনের চুম্বন দৃশ্য দেখা যায় এটি তেমন ছিল না। এটি ঠোঁটে খোঁচা দেওয়ার মতো অভিজ্ঞতা ছিল। সত্যি এটি আমার খারাপ লেগেছিল।”

চুম্বন দৃশ্যের অভিজ্ঞতা ভয়ংকর ছিল। তা জানিয়ে মধু বলেন, “শুটিং শুরু করার আগে আমাকে চুমু খেতে বলা হয়। কিন্তু তার আগে এ বিষয়ে আমাকে জানানো হয়নি। এ নিয়ে যখন প্রশ্ন করি, তখন তারা আমাকে পাশে নিয়ে গিয়ে কথা বলে। তারা আমাকে ব্যাখ্যা করে, এই দৃশ্যটি কেন গুরুত্বপূর্ণ এবং সেই কারণেই আমি চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করি। কিন্তু এটা ছিল আমার করা সবচেয়ে ভয়ংকর কাজ।”

চুম্বন দৃশ্যে যখন অভিনয় করেন, তখন মধুর বয়স ছিল ২২ বছর। তা স্মরণ করে এই অভিনেত্রী বলেন, “সিনেমায় চুম্বন দৃশ্যটির কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। সিনেমায় দৃশ্যটি অন্তর্ভুক্ত না করার জন্য পরিচালকের সঙ্গে কোনো কথাও হয়নি। আমি এটি এড়িয়ে গিয়েছিলাম। কেবল বয়সের দিক দিয়ে নয়, আমি সবদিক থেকেই তখন খুব ছোট ছিলাম। এখনকার ২২-২৪ বছর বয়সি ছেলে-মেয়েরা ভীষণ চালাক। কিন্তু ২২ বছর বয়সে আমি খুব বোকা ছিলাম।”

১৯৯৬ সালে দীপা মেহতা নির্মাণ করেন ‘ফায়ার’ সিনেমা। এতে শাবানা আজমি, নন্দিতা দাস সমকামী চরিত্রে অভিনয় করেন। এ সিনেমা পর্দার ঘনিষ্ঠতা সম্পর্কে মধুর ধারণা বদলে দিতে শুরু করে। এ তথ্য উল্লেখ করে মধু বলেন, “আমি বলছি না, পর্দায় চুম্বন করা খারাপ। ‘ফায়ার’ সিনেমায় যখন শাবানাজির মতো অভিনেত্রীর অভিনয় দেখি, তখন আমার মনে হয়েছিল সত্যি তারা তাদের প্রতিবন্ধকতা ভেঙে ফেলেছেন, যা আমি তখন করতে পারিনি। আমি সেই সব শিল্পীদের প্রশংসা করি, যারা মাথা ন্যাড়া করতে পারেন বা সিনেমায় সমকামীর ভূমিকায় অভিনয় করতে পারেন।”

১৯৯১ সালে তামিল ভাষার সিনেমার মাধ্যমে রুপালি জগতে পা রাখেন মধু। একই বছর ‘ফুল আউর কাঁটা’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন এই অভিনেত্রী। হিন্দি সিনেমায় পা রেখেই নজর কাড়েন। ৫৬ বছরের মধু অভিনয়ে এখন খুব একটা সরব নন। তবে প্রতি বছরে দুই একটা সিনেমায় দেখা যায় তাকে। 

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ