জুনের আগে কোচ নিয়োগের ঘোষণা ব্রাজিলের
Published: 5th, April 2025 GMT
আর্জেন্টিনার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ৪-১ গোলে হারের পর দরিভাল জুনিয়রকে বরখাস্ত করেছে কনফেডারেশন অব ব্রাজিল ফুটবল (সিবিএফ)। সেলেসাওদের পরবর্তী ম্যাচ জুনের প্রথম সপ্তাহে। ইকুয়েডর ও প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ওই ম্যাচের আগে কোচ নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে সিবিএফ।
শুক্রবার সিবিএফ প্রেসিডেন্ট এডনাল্ড রদ্রিগুয়েজ কনফেডারেশনের নির্বাহী সমন্বয়ক রদ্রিগো কায়তানো ও টেকনিক্যাল সমন্বয়ক হুয়ানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সভা শেষে কায়তানো সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘জাতীয় দলের কোচ নিয়োগের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ও টেকনিক্যাল সমন্বয়কের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। জুনের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচের আগে আমরা নতুন কোচ নিয়োগ দেব।’
জুনের আগে অন্তবর্তীকালীন কোচ নিয়োগ দেওয়া হবে নাকি বিশ্বকাপ পরিকল্পনা মাথায় নিয়ে স্থায়ী কোচ নিয়োগ পাবে তা পরিষ্কার করা হয়নি। সিবিএফের কোচের তালিকায় যে নাম আছে তাদের বর্তমান চাকরির অবস্থা বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, অন্তবর্তীকালীন কোচ নিয়োগের পথেই হাঁটতে পারে ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন।
ব্রাজিলের সংবাদ মাধ্যম গ্লোবো জানিয়েছে, ব্রাজিলের কোচের তালিকায় নাম আছে চারজনের। তারা হলেন- কার্লো আনচেলত্তি, হোর্হে জেসুস, আবেল ফেরেইরা ও হোসে মরিনহো। এর মধ্যে জেসুস, ফেরেইরা ও মরিনহো পর্তুগিজ কোচ। আনচেলত্তি ইতালিয়ান।
ব্রাজিল কনফেডারেশন এখনো মনে করছে, আনচেলত্তিকে কোচ করতে পারা হবে স্বপ্নের প্রজেক্ট। তবে তাকে পাওয়াই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে জটিল প্রক্রিয়া মনে করা হচ্ছে। জুন-জুলাইয়ের ক্লাব বিশ্বকাপের পরে ছাড়া তাকে পাওয়ার কোন সম্ভাবনাই দেখছে না ব্রাজিল।
ব্রাজিলের কোচ হিসেবে হোর্হে জেসুসকে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রার্থী মনে করা হচ্ছে। আল হিলালের জেসুসের সামনেও আছে জুনের ক্লাব বিশ্বকাপ। আবার আবেল ফেরেইরার পালমেইরাসও ক্লাব বিশ্বকাপে অংশ নেবে। তবে ২৬ মে লিগ মৌসুম শেষে তাকে পাওয়া যেতে পারে। একই শর্তে আবেল ফেরেইরাকে পাওয়া যেতে পারে জুনের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচের আগে।
ব্রাজিলের কোচের সংক্ষিপ্ত তালিকায় সবার পরে যুক্ত হয়েছে হোসে মরিনহোর নাম। তিনি বর্তমানে তুরস্কের ক্লাব ফেনেরবেচের ডাগ আউটে আছেন। তাকে কোচ করা হলে ১ জুনের পর পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তুরস্কের লিগে আচরণজনিত কারণে সমালোচনার শিকার হওয়া মরিনহোকে শক্তিশালী প্রার্থীই মনে করা হচ্ছে। ব্রাজিলের সংবাদ মাধ্যমের মতে, এটা এক প্রকার নিশ্চিত যে সেলেসাওদের ডাগ আউটে একজন বিদেশি কোচই আসছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব র জ ল ফ টবল ব শ বক প স ব এফ
এছাড়াও পড়ুন:
বিগ-বির মাধ্যমে জাপানের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী বাংলাদেশ
এক দশক আগে বঙ্গোপসাগর ঘিরে বাংলাদেশের জন্য বিগ-বি নামে পরিচিত বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট গ্রহণ করেছিল জাপান। বঙ্গোপসাগরীয় শিল্প প্রবৃদ্ধির ওই উদ্যোগে রয়েছে মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর, বিদ্যুৎ প্রকল্প আর আধুনিক পরিবহনব্যবস্থার বিকাশ। মে মাসের শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফরে বিগ–বির মাধ্যমে সহযোগিতা জোরদারের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। তাঁর জাপান সফরের আগে টোকিওতে ১৫ মে অনুষ্ঠেয় দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকেও বিষয়টিতে প্রাধান্য দেবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের ষষ্ঠ বৈঠকের প্রস্তুতি হিসেবে বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে জাপানের আলোচনায় কোন কোন বিষয়গুলোতে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার থাকবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
১৫ মে টোকিওতে দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকে জসীম উদ্দিন বাংলাদেশের এবং জাপানের জ্যেষ্ঠ উপমন্ত্রী আকাহোরি তাকেশি তাঁর দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে কোন কোন বিষয়গুলো ১৫ মের আলোচনায় প্রাধান্য পেতে পাবে, তা নিয়ে মতামত নেওয়া হয়। পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন সফরসহ সচিব পর্যায়ের সফর নিয়ে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বিগ–বিতে সহযোগিতা জোরদারের পাশাপাশি ব্যবসা, বিনিয়োগ, নবায়নযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ খাতভিত্তিক সহযোগিতা জোরদারের ওপর অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়।
জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার নানা বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন সফর নিয়ে আলোচনা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, টোকিওতে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকটি দুই ভাগে বিভক্ত থাকবে। প্রথম ভাগে থাকবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নানা বিষয়। আর দ্বিতীয় ভাগে থাকবে আঞ্চলিক ভূরাজনীতি ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি।
আঞ্চলিক বিষয়াদিতে জাপানের বিগ–বি নিয়ে আলোচনা হবে। এ সময় ঢাকার পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কের বাস্তবতা তুলে ধরা হবে। সেই সঙ্গে এ প্রকল্প সামনে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিও বলা হবে। পরে ভারত যদি এর সঙ্গে যুক্ত হতে চায়, তবে তার ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হবে।
বিগ–বির সঙ্গে ২০২৩ সালে ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলকে যুক্ত করে জাপান। কিন্তু ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে চরম টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্ক। এমন এক প্রেক্ষাপটে বিগ–বিকে বিশেষ করে সংযুক্তিকে বাংলাদেশের পরিমণ্ডলে নেওয়ার পরিকল্পনায় আপাতত একটা ধাক্কা এসেছে। এ নিয়ে জাপান নানাভাবে নিজেদের অস্বস্তির বিষয়টি বাংলাদেশকে জানিয়েছে। বিগ–বি জাপানের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের অগ্রাধিকার প্রস্তাব হওয়ায় এটিতে বিশেষ গুরুত্ব আছে টোকিওর। তাই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে আগ্রহী জাপান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক এবং প্রধান উপদেষ্টার টোকিও সফরে জাপান প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিবিড় করার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশের কাছ থেকে সমরাস্ত্র বিক্রির ওপর কয়েক বছর ধরে আগ্রহ প্রকাশ করে আসছে জাপান।
বাংলাদেশকে ২০২৩ সালে জাপানের সরকারি নিরাপত্তা সহায়তায় (ওএসএ) যুক্ত করা হয়েছে। মূলত জাপান নিজের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে এই কাঠামো তৈরি করেছে। ওএসএর মাধ্যমে জাপান বন্ধুরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও গভীর করার এবং ওই দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা দিয়ে থাকে। ওএসএর মাধ্যমে জাপান একটি দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে ঋণের পরিবর্তে অনুদান দিয়ে থাকে।