সংস্কার শেষ করেই নির্বাচন হবে: জামায়াত নেতা রফিকুল ইসলাম
Published: 5th, April 2025 GMT
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘‘প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করেই নির্বাচন দিতে হবে। কারণ, নির্বাচন ব্যবস্থার আমুল সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হবে না।’’
শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে স্থানীয় শহীদ টিটু মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বগুড়া জেলা শাখা আয়োজিত ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কর্মী, সার্থী ও সদস্যদের প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘যারা জামায়াত-শিবিরের দিকে চোখ রাঙানোর চেষ্টা করছেন, তারা সাবধান হয়ে যান। এই দেশ কারো বাপের কিংবা কারো পারিবারিক সম্পত্তি নয়। এই দেশ ১৮ কোটি মানুষের। দেশের মানুষ যাকে চাইবে তারাই দেশ শাসন করবে।’’
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘ইসলামী ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে সৎ, যোগ্য, দূর্নীতিমুক্ত নেতৃত্ব তৈরি করছে। শিবিরের তৈরি এই নেতৃত্বই একদিন জাতিকে দূর্নীতি ও চাঁদাবাজ মুক্ত, মানবিক ও কল্যাণময় বাংলাদেশ উপহার দিবে।’’
যারা সংস্কারের বিরোধিতা করে দ্রুত নির্বাচনের তাড়া দিচ্ছেন তাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘‘যারা সংস্কার না করেই নির্বাচন দাবি করছেন তারা মূলত শেখ হাসিনার দুঃশাসনকেই ফিরিয়ে আনতে চান। যারা তাদের নেত্রীর বাড়ির সামনে থেকে বালুর ট্রাক সরাতে রাস্তায় নামার সাহস পায়নি, তারা আজ চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানী করছেন।’’
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘‘সরকারের ভেতরে-বাইরে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা সক্রিয় রয়েছে। পলাতক নেত্রীর কথায় অনেকেই উঁকি-ঝুঁকি মারছেন। যতই উঁকি-ঝুঁকি মারেন লাভ নাই। যত উঁকি-ঝুঁকি মারবেন বিপদ ততই বাড়বে। গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা ও তার দোসররা কেবলমাত্র ফাঁসির আসামি হিসাবেই দেশে ফিরবেন। যারা জামায়াতের নিরপরাধ শীর্ষ নেতাদের হত্যা করেছেন, তাদের বিচার বাংলাদেশের মাটিতেই হবে।’’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বগুড়া জেলা শাখার আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হক সরকারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি গোলাম রব্বানী, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি দেলোয়ার হোসেন সাঈদী, আন্তর্জাতিক ছাত্র ও যুব ফেডারেশনের (ইফসু) সেক্রেটারি জেনারেল ড.
অনুষ্ঠান শেষে বিশাল র্যালী শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র্যালিতে ছাত্রশিবিরের দুই হাজারেরও অধিক সাবেক নেতাকর্মী অংশ নেন। পরে দেশের সুনামধন্য শিল্পীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
ঢাকা/এনাম/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাগত জানাল জেএসডি
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের আলোচনা ও ঐকমত্যের সূচনাকে স্বাগত জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)। দলটি বলেছে, আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, জনগণ শুধু কথায় নয়, বাস্তবে সংস্কার ও বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতির পদক্ষেপ দেখতে চায়।
শুক্রবার জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
তারা বলেন, এই উচ্চপর্যায়ের সংলাপ দেশে রাজনৈতিক সমঝোতা ও জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের কাঙ্ক্ষিত অভিপ্রায় অনুযায়ী রাষ্ট্র সংস্কার, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, অধ্যাপক ইউনূস এবং তারেক রহমানের বৈঠক ও বিবৃতিতে আগামী বছরের পবিত্র রমজানের আগেই একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ এবং তার পূর্বশর্ত হিসেবে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের বিচারের প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জনের ঘোষিত প্রত্যয়ে রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, গণমানুষের রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম দাবি- গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কাঠামোগত মৌলিক সংস্কার এবং গণহত্যাকারী ফ্যাসিবাদী শক্তির বিচারের ব্যবস্থা। এই বিষয় দুটির দৃশ্যমান অগ্রগতিই কেবল একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ভিত্তি রচনা করতে পারে।
রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সমাজের শ্রমজীবী, কর্মজীবী ও পেশাজীবীদের মতামত, আকাঙ্ক্ষা ও অংশগ্রহণে রাষ্ট্রীয় রাজনীতির মৌলিক সংস্কারের লক্ষ্যে দ্রুত ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়নের আহ্বান জানায় জেএসডি।