বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘‘প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করেই নির্বাচন দিতে হবে। কারণ, নির্বাচন ব্যবস্থার আমুল সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হবে না।’’  

শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে স্থানীয় শহীদ টিটু মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বগুড়া জেলা শাখা আয়োজিত ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কর্মী, সার্থী ও সদস্যদের প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘যারা জামায়াত-শিবিরের দিকে চোখ রাঙানোর চেষ্টা করছেন, তারা সাবধান হয়ে যান। এই দেশ কারো বাপের কিংবা কারো পারিবারিক সম্পত্তি নয়। এই দেশ ১৮ কোটি মানুষের। দেশের মানুষ যাকে চাইবে তারাই দেশ শাসন করবে।’’ 

রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘ইসলামী ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে সৎ, যোগ্য, দূর্নীতিমুক্ত নেতৃত্ব তৈরি করছে। শিবিরের তৈরি এই নেতৃত্বই একদিন জাতিকে দূর্নীতি ও চাঁদাবাজ মুক্ত, মানবিক ও কল্যাণময় বাংলাদেশ উপহার দিবে।’’ 

যারা সংস্কারের বিরোধিতা করে দ্রুত নির্বাচনের তাড়া দিচ্ছেন তাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘‘যারা সংস্কার না করেই নির্বাচন দাবি করছেন তারা মূলত শেখ হাসিনার দুঃশাসনকেই ফিরিয়ে আনতে চান। যারা তাদের নেত্রীর বাড়ির সামনে থেকে বালুর ট্রাক সরাতে রাস্তায় নামার সাহস পায়নি, তারা আজ চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানী করছেন।’’

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘‘সরকারের ভেতরে-বাইরে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা সক্রিয় রয়েছে। পলাতক নেত্রীর কথায় অনেকেই উঁকি-ঝুঁকি মারছেন। যতই উঁকি-ঝুঁকি মারেন লাভ নাই। যত উঁকি-ঝুঁকি মারবেন বিপদ ততই বাড়বে। গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা ও তার দোসররা কেবলমাত্র ফাঁসির আসামি হিসাবেই দেশে ফিরবেন। যারা জামায়াতের নিরপরাধ শীর্ষ নেতাদের হত্যা করেছেন, তাদের বিচার বাংলাদেশের মাটিতেই হবে।’’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বগুড়া জেলা শাখার আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হক সরকারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি গোলাম রব্বানী, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি দেলোয়ার হোসেন সাঈদী, আন্তর্জাতিক ছাত্র ও যুব ফেডারেশনের (ইফসু) সেক্রেটারি জেনারেল ড.

মোস্তফা ফয়সাল পারভেজ। 

অনুষ্ঠান শেষে বিশাল র‌্যালী শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র‌্যালিতে ছাত্রশিবিরের দুই হাজারেরও অধিক সাবেক নেতাকর্মী অংশ নেন। পরে দেশের সুনামধন্য শিল্পীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। 

ঢাকা/এনাম/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাবি শিবিরের ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচি

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা।

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন শাখা সভাপতি এসএম ফরহাদ।

আগামী ৫, ৬ ও ৭ আগস্ট এই কর্মসূচিগুলো অনুষ্ঠিত হবে। আয়োজনে থাকছে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, বিপ্লবী নাটক, গান, কবিতা, আলোচনা সভা ও বিশেষ চিত্র প্রদর্শনী। কর্মসূচির সূচনা হবে ৫ আগস্ট (মঙ্গলবার) ভোর ৫টায় প্রতীকী সাইকেল র‌্যালির মাধ্যমে, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে গণভবন পর্যন্ত যাবে।

আরো পড়ুন:

মেয়াদোত্তীর্ণ অগ্নিনির্বাপকে চলছে বেরোবি

তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন

সকাল ৯টায় টিএসসিতে থাকবে সাধারণ নাস্তার আয়োজন। এর পরপরই প্রদর্শিত হবে ‘জুলাই বিপ্লব’ ভিত্তিক একটি প্রামাণ্যচিত্র। একইসঙ্গে বিপ্লবী গান ও কবিতা পরিবেশিত হবে । সকাল ১০টা থেকে শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের মুখে অভ্যুত্থানের অভিজ্ঞতা শোনার আয়োজন থাকবে।

দুপুর ২টায় একটি মাইম পরিবেশনা ও নাটক মঞ্চস্থ হবে। এরপর বিকেল সাড়ে ৩টা ও সাড়ে ৫টায় পরপর আরো দুটি নাটক প্রদর্শিত হবে। সন্ধ্যা ৬টায় ব্যতিক্রমী আয়োজন ‘প্ল্যানচ্যাট বিতর্ক’ অনুষ্ঠিত হবে। এটি একটি প্রতীকী বিতর্ক, যেখানে গণআন্দোলনে নিহতদের উত্তরাধিকার ও আত্মিক উপস্থিতিকে ঘিরে আলাপ-প্রতিআলাপের একটি রূপক পরিসর গড়ে উঠবে ।

৬ আগস্ট দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচির শুরুতেই থাকবে রাজনৈতিক ও দার্শনিক আলোচনা সভা। সকাল ১০টার দিকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও ফ্যাসিবাদ পলায়নের ১ বছর: প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বিকেল ৩টার দিকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্ররাজনীতি ও ডাকসু নির্বাচন’ বিষয়ে আলোচনা হবে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ‘নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্তে ইসলাম প্রসঙ্গ’ শীর্ষক মতবিনিময়ের মাধ্যমে পর্দা নামবে দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচির।

কর্মসূচির তৃতীয় দিন ৭ আগস্ট দিনব্যাপী চলবে বিশেষ চিত্র প্রদর্শনী ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন। সেখানে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ ও গণআন্দোলন সংশ্লিষ্ট নানা দলিল, ছবি ও ভিডিও উপস্থাপন করা হবে।

সার্বিক বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি এসএম ফরহাদ বলেন, “২০২৪ সালের জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া গণজাগরণ ও ছাত্র প্রতিরোধ ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক। সেই ঘটনার স্মরণে এবং তা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের পথরেখা নির্ধারণের প্রয়াসে ঢাবির টিএসসি প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখা আয়োজন করতে যাচ্ছে তিন দিনব্যাপী ‘আমরাই ৩৬ জুলাই: আমরা থামবো না’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।”

তিনি বলেন, “এ আয়োজন হবে শিল্প, সংস্কৃতি, স্মৃতি ও রাজনৈতিক ভাবনার এক সংমিশ্রণ। জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের অভিজ্ঞতা আমাদের অনুপ্রেরণা। আর সংস্কৃতির মাধ্যমে আমরা সেই প্রতিরোধ চেতনাকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাই।”

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাঁধন-সাবার ভার্চুয়াল দ্বন্দ্বে যোগ দিলেন অরুণা বিশ্বাস
  • ‘বিচার প্রক্রিয়া ও সংস্কারের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে’
  • তিতুমীর কলেজে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী
  • হাসিনাকে ১০ বার ফাঁসিতে ঝোলালেও তার অপরাধ কমবে না: নাহিদ 
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা
  • গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাবি শিবিরের ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচি
  • নরসিংদীতে আজ এনসিপির পদযাত্রা 
  • এনসিপির অনুরোধে সমাবেশের স্থান পরিবর্তন করল ছাত্রদল