ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার হাজিগঞ্জ বাজার এলাকার পদ্মা নদী ঘাটে গঙ্গাসান অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার ভোরে শুরু হয়েছে গঙ্গাসান যা চলবে বিকেল পর্যন্ত।  

গঙ্গাশান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর-৪ আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মো. শহিদুল ইসলাম বাবুল। এ সময় অন্য অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি নেতা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এজিএম বাদল আমিন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো.

কুদ্দুস আলী, সাবেক উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নুরু মোল্লা, সাবেক উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. ফজল প্রামানিক, সাবেক উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ওবায়দুল বারী দিপু খান, গাজিরটেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ইয়াকুব আলী, সাবেক যুবদল নেতা আব্দুল কুদ্দুস বাদশা।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, গাজীরটেক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. আলী প্রামানিক। এতে ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ভক্তরা পবিত্র এই গঙ্গাস্নানে অংশগ্রহণ করেন। গঙ্গাসান অনুষ্ঠানে মনোবাসনা পূর্ণ ও স্বর্গ লাভের আশায় ভক্তরা এই পবিত্র গঙ্গাসানে অংশগ্রহণ করেন। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে চরভদ্রাসন থানা পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে।  

চরহাজিগঞ্জ গঙ্গাসান পরিচালনা কমিটির দায়িত্বে থাকা বিধান দাস বলেন, এ বছর সকাল থেকে গঙ্গাসানে মানুষের ঢল অনেক বেশি। আমরা স্নান কমিটির পক্ষ থেকে ভক্তদের প্রসাদ বিতরণসহ নানা ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। গঙ্গাস্নানে হাজার হাজার ভক্ত এসেছেন।

গঙ্গার স্নান নিয়ে সনাতন ধর্মে বলা আছে- শিব পার্বতীকে নিয়ে মত্ত থেকে স্বর্গে যাওয়ার সময় অনেক মানুষ একত্রিত হয়ে গঙ্গা নদীতে স্নান করছেন, এই সময় শিবের কাছে পার্বতী জানতে চান কেন সবাই মিলে নদীতে স্নান করছেন। তাদের মধ্যে কারাই বা স্বর্গে যেতে পারবেন? শিব এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, যাদের মধ্যে পূর্ণ বিশ্বাস নিয়ে আমার এই গঙ্গা স্নান করবে তারাই স্বর্গে যাওয়ার অধিকার রাখেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ব ক উপজ ল ব এনপ র স অন ষ ঠ স বর গ

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ