রংপুরের বদরগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে একজন নিহতসহ অন্তত ১০ আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার দুপুরে বদরগঞ্জ শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তবে শনিবারই দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ করে আইনশৃখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অভিযোগ এনে স্থানীয় তিন নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জেলা বিএনপি। তারা হলেন, বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকার, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মানিক এবং সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির মানিক। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও সদস্যসচিব আনিছুর রহমান লাকু’র নিকট নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বদরগঞ্জ শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন একটি দোকানঘর নিয়ে ব্যবসায়ী জাহিদুল হক জোয়ারদার এবং দোকান মালিক ইশতিয়াক বাবুর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। ইশতিয়াক বাবু দোকানঘর ছাড়ার জন্য চাপ দিলে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। বিষয়টি রাজনৈতিক রূপ নেয় যখন জাহিদুল হক আশ্রয় নেন কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা শহিদুল হক মানিকের কাছে এবং দোকান মালিক ইশতিয়াক বাবু আশ্রয় নেন সাবেক এমপি ও উপজেলা বিএনপির সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকারের কাছে। 

শনিবার দুপুরে দোকানঘর খুলে দেওয়ার দাবিতে শহীদ মিনার এলাকায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে বিএনপি নেতা শহিদুল হক মানিকের নেতৃত্বে জাহিদুল হকের অনুসারীরা। কিন্তু মোহাম্মদ আলী সরকারের সমর্থকরা তা পণ্ড করে দেন। ফলে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়, শুরু হয় দুই পক্ষেরই নেতাকর্মীদের দেশীয় অস্ত্রসহ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ সময় পৌর শহরের বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করে। একপর্যায়ে সৃষ্ট সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন দু’জন পথচারীসহ অন্তত ১০ জন। এর মধ্যে বিএনপিকর্মী লাভলু মিয়া (৫০), মোক্তারুল ইসলাম (৪৫), মুন্নাফ আলী (৫০), শফিকুল ইসলাম (৪৫) ও ময়নাল হোসেনকে (২৫) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় লাভলু মিয়া মারা যান। তারা সবাই উপজেলা বিএনপির নেতা ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকারের কর্মী-সমর্থক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুপুর ২টার দিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ শহরে টহল শুরু করে। 

বদরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ কে এম আতিকুর রহমান একজন মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এলাকার পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং দোষীদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর সংশ্লিষ্টদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশের জবাবসহ তাদের সশরীরে হাজির হতে বলা হয়েছে। জবাব পেলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বদরগঞ জ হ দ ল হক ব এনপ র ল ইসল ম সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

গভীর রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আমল মাসঊদের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিনোদপুরের মণ্ডলের মোড় এলাকায় তাঁর বাড়ির দরজার সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ আহত হয়নি।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছে, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও কেউ করেনি। তাঁরা দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টা করছেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইফতিখারুল আমল মাসঊদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে ঘটনার পর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘ফ্যাসিবাদী অপশক্তির জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। কোনো রক্তচক্ষুর ভয়ংকর হুমকি অন্যায়ের প্রতিবাদ করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। তবে তারা কখনো বাড়ি পর্যন্ত আসার ঔদ্ধত্য দেখাতে পারেনি। কিন্তু আজ আমার বাড়ির দরজায় গভীর রাতের অন্ধকারে হামলার সাহস দেখিয়েছে কাপুরুষের দল! এরা কারা? এদের শিকড়সহ উৎপাটনের দাবি জানাই।’

এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ভেবেছিলাম বাড়ির গেটে কিংবা গেটের বাইরে। কিন্তু গিয়ে দেখলাম একেবারে বাড়িতে হামলা হয়েছে। গতকালই ওনার অসুস্থ বাবা হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় এসেছেন। জানি না শেষ কবে একজন শিক্ষকের বাড়িতে রাতের আঁধারে এভাবে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। আমরা শঙ্কিত, স্তম্ভিত।’

এদিকে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজন চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ