যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের বিষয়টিকে সুযোগ হিসেবেই দেখছি
Published: 6th, April 2025 GMT
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলো আমাদের সঙ্গে একই নৌকায় আছে। সুতরাং, তাদের যাত্রা যে পথে হবে, আমাদেরটাও সম্ভবত সে দিকেই হবে।”  
তিনি বলেন, “আমি এটা নিয়ে একেবারেই চিন্তিত না যে, বিনিয়োগ সম্মেলনের ঠিক ৪ দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তিত নীতি আমাদের জন্য নেতিবাচক হয়ে গেলো কি না। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এটা একটি ভালো সংকেত। আমরা এটাকে ব্যবহার করে সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে আরো উন্নত বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করব।”
রবিবার (৬ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিনিয়োগ সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
ট্রাম্পের শুল্ক
প্রভাব পড়বে না পুঁজিবাজারে, আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ বিশ্লেষকদের
মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধিতে রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে না: বাণিজ্য উপদেষ্টা
আশিক চৌধুরী বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের বিষয়টিকে আমি সুযোগ হিসেবেই দেখছি। কারণ যে দৃষ্টিভঙ্গী থেকে যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে-ইউনাইটেড স্টেটস ট্রেড রিপ্রেজেন্টটেটিভের একটা রিপোর্ট আছে বাংলাদেশের বিষয়ে। বাংলাদেশে বিনিয়গের যে অবস্থা সেটির বিষয়ে রিপোর্ট করা হয়েছে। সেই রিপোর্টের ওপর নির্ভর করে যুক্তরাষ্ট্র অনেকগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই রিপোর্টে আমাদের জন্য বেসিক কিছু সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। আমাদের রেগুলেটরি কিছু রিফর্ম, কাস্টম ডিউটির ক্ষেত্রে, দুর্নীতি-এরকম বেশ কয়েকটি বিষয়ে রিফর্মের কথা বলা হয়েছে। এই সংস্কারগুলো কিন্তু আমরাও করতে চাচ্ছিলাম। অন্তর্বর্তী সরকার চাচ্ছিল যে, বাংলাদেশের যে বিনিয়োগ ব্যবস্থা এখানে একটা বড় ধরনের সংস্কার হোক, যাতে বিনিয়োগকারীদের জন্য ভবিষ্যতে বাংলাদেশে ব্যবসা করা সহজ হয়।”
তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই অতিরিক্ত চাপিয়ে দেওয়া শুল্ক আমাদের জন্য একটি লাভবান হওয়ার মতো অবস্থা। আমি মনে করি, এই সুযোগে আমরা আমাদের বিনিয়োগ ব্যবস্থার ওপর অনেকগুলো সংস্কার করে ফেলতে পারব। সেটা আমাদের জন্য আসলে ভালোই হবে। এটার মধ্যে নেতিবাচক আমি একদমই কিছু দেখি না। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমাদের সর্বোপরি বিনিয়োগ পরিবেশের অগ্রগতি আনা সম্ভব।”
আশিক চৌধুরী বলেন, “ট্রাম্পের নতুন নীতির কারণে বাংলাদেশে শুধু এককভাবে প্রভাব পড়বে তা কিন্তু নয়। মূল্যস্ফীতি, সুদের হারের ভেতর দিয়ে শুধু বাংলাদেশ যাবে তা নয়, অন্যান্য সবার ক্ষেত্রেও হবে। এখানে বাংলাদেশকে আলাদা করে দেখার মতো কিছু নেই। পুরো পৃথিবী যদি একটা মূল্যস্ফীতিজনিত চাপের মধ্যে দিয়ে যায় নীতির কারণে, সেটা সবার জন্য প্রযোজ্য হবে। সেজন্য আমার কাছে মনে হয়- অন্যান্য দেশের তুলনায় এককভাবে বাংলাদেশে অনেক বেশি প্রভাব পড়বে না।”
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি অপূর্ব জাহাঙ্গীর।
ঢাকা/হাসান/সাইফ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’