গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের ডাক
Published: 6th, April 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে দেশজুড়ে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী। আজ রোববার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, আগামীকাল সোমবার তাঁরা কোনো ধরনের একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নেবেন না। বেলা ৩টায় তাঁরা রাজধানীর আফতাবনগরে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হবেন। তাঁদের দাবি, ইসরায়েলের এই গণহত্যা বন্ধের পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বকে জোরালো অবস্থান নিতে হবে।
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অস্তিত্ব কখনো বিলীন হবে না উল্লেখ করে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফ্রান্সিস ফরিদ বলেন, গাজায় যা হচ্ছে এটা সম্পূর্ণ যুদ্ধাপরাধ। গাজাকে নিজেদের দখলে নিতে ইসরায়েল এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। কিন্তু এটা স্পষ্ট, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে সব সময় ফিলিস্তিন, গাজাকে গাজা হিসেবেই মানুষ চিনবে।
ওআইসিভুক্ত ৫৭টি মুসলিম রাষ্ট্রকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সাকিব হাসান বলেন, যুদ্ধবিরতি বলতে কিছু নেই। ইসরায়েল গোলকধাঁধা তৈরি করে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে সব মুসলিম দেশকে একত্র হয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ওআইসিভুক্ত দেশগুলোকে রাজনৈতিক ও সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ, বিশ্বব্যাপী ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে যুব আন্দোলন গড়ে তোলা, যুদ্ধাপরাধ প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে আইনি দায়বদ্ধতা নিশ্চিত এবং যুদ্ধ সমর্থনকারী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়নে চাপ তৈরির আহ্বান জানান।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাবাব হোসেন মেহেরের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে স্কলার ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থী রাইয়ান রুদ্র, নাঈম ইসলাম, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ইফতেখার হোসেন নাহিদসহ বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’