ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের তারিখ পেছানোর সম্ভাবনা নেই: বাণিজ্য উপদেষ্টা
Published: 6th, April 2025 GMT
বাংলাদেশি পণ্যের ওপর নতুন করে ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। উচ্চ হারে নতুন এ শুল্ক কার্যকর হবে ৯ এপ্রিল থেকে। কিন্তু রোববার বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন নির্ধারিত তারিখ থেকেই পাল্টা শুল্ক কার্যকর করবে। এটি পেছানোর কোনো সম্ভাবনা নেই।
তিনি জানান, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়াসহ বেশকিছু দেশ পাল্টা শুল্কারোপ কার্যকরের সময়সীমা পেছানোর আবেদন করেছে। বাংলাদেশও নির্ধারিত তারিখে কার্যকর না করার অনুরোধ জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে চিঠি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আজ বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের গুলশানের বাসভবনে এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার হাইরিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।
পরে সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বৈঠকে আমরা জানতে চেয়েছিলাম– বর্ধিত শুল্ক বাস্তবায়নের তারিখ পেছানোর কোনো সম্ভাবনা আছে কি না? এর কোনো সুযোগ নেই বলে তারা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ৯ এপ্রিল কিছু দেশের ওপর শুল্ক স্থগিত রাখা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। কিন্তু তার কোনো সম্ভাবনা নেই। এখন আমাদের মূল কার্যপদ্ধতি হবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো। সেক্ষেত্রে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের কিছু জানায়নি। তারা বাণিজ্য সংলাপের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। এসব আলোচনার মাধ্যমেই সামনে এগোনোর উপায় বের হবে।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আমরা জানানোর চেষ্টা করেছি– আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ব্যক্তিগতভাবে এসব আলোচনায় যুক্ত থাকবেন। বাকি কাজগুলো ধাপে ধাপে করা হবে। আমাদের পক্ষ থেকে কোন ধরনের যোগাযোগের উপায় গ্রহণ করতে পারি, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যেসব শুল্ক ও অশুল্ক বাধা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি, আমরা সেগুলো বোঝার চেষ্টা করছি। এর মধ্যে যেগুলো আমাদের অর্থনীতির জন্য উপকারী, আমরা অবশ্যই সেগুলো বাস্তবায়ন করতে চাইব। কিন্তু, যেগুলো উপকারী নয়, সেগুলোর ক্ষেত্রে আমরা আরও আলোচনা করব।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ণ জ য উপদ ষ ট ক র যকর আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’