যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘটনায় বিশ্ব অর্থনীতি এখন দোলাচলে, যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ক্রীড়াজগতেও। খেলাধুলার দুনিয়ায় আয়োজনের ব্যাপকতা, অর্থের সমাগম ও বিশ্বজুড়ে সম্পৃক্ততা বিচারে সবচেয়ে বড় দুটি ইভেন্ট ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ ও অলিম্পিক। এ দুটি ইভেন্টেরই পরবর্তী আয়োজক যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া গোটা বিশ্বে খেলাধুলা পণ্যের সবচেয়ে বড় বাজারও যুক্তরাষ্ট্র।

এমন প্রেক্ষাপটে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক আরোপের কারণে খেলাধুলায় স্পনসরদের অর্থের জোগান, ক্রীড়া স্থাপনা ও ব্র্যান্ড এবং ক্রীড়াপণ্য প্রস্তুত ও দামে নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে স্টক মার্কেটে থাকা ক্রীড়াসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শেয়ারে দরপতনও ঘটেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক ঘোষণার পর প্রথমেই বড় ধাক্কা লাগে স্টক মার্কেটে। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ক্রীড়াসামগ্রী বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান আন্ডারআর্মারের শেয়ারের ১৮.

২৫ শতাংশ দরপতন ঘটেছে, যা নাইকির বেলায় ১৪.৪%, পুমার ১১.৮% এবং অ্যাডিডাসের ১১.৭%।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার হিসাব অনুসারে, ২০২৪ সালে ১০৩০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের ক্রীড়াপণ্য আমদানি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, যার ৬২৭ কোটিরই রপ্তানিকারক চীন। বিশ্ববাজারের বেশির ভাগ ক্রীড়াপণ্যই নির্মিত হয় চীন, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়াসহ এশিয়ার দেশগুলোতে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন, এতে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী দেশ এশিয়ারই। কম্বোডিয়ার জন্য ৪৯%, ভিয়েতনামের ৪৬%, চীনের ৩৪% এবং ইন্দোনেশিয়ার জন্য ৩২% পাল্টা শুল্ক আরোপ হয়েছে। এসব দেশে তৈরি হয় খেলারসহ সব ধরনের ফুটওয়্যার, সাঁতারের পোশাক, ট্র্যাকশুট, আর্টিকলস, বল, গলফ, রেকেটসহ অন্যান্য সামগ্রী।

কোন দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে কত শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, আর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে তিনি কত শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, সেই তালিকা তুলে ধরছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রোজ গার্ডেন, হোয়াইট হাউস, ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র, ২ এপ্রিল ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ল ক আর প

এছাড়াও পড়ুন:

সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে

সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।

পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।

অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ  ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।

একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের  প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। 

অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে,  মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে  ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।

বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্বকাপে জায়গা করতে বিশ্বকাপজয়ীকে কোচের দায়িত্ব দিল ইতালি
  • টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ: এবার কাদের বিপক্ষে, কবে খেলবে বাংলাদেশ?
  • টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়
  • সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
  • প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হয়েছে
  • প্রধান উপ‌দেষ্টা একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন: জামায়া‌তে ইসলামী
  • ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ: কী, কেন, কীভাবে