সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী কেরামত আলীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তাঁকে রাজবাড়ী সদর আমলি আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গতকাল রোববার রাতে ঢাকা মহানগরের গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ তাঁকে মহাখালী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে রাজবাড়ী থেকে পুলিশের একটি দল তাঁকে আনতে ঢাকায় যায়। কাজী কেরামত আলীর বিরুদ্ধে রাজবাড়ী সদর থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে মামলা আছে।

আজ সোমবার সকাল নয়টার দিকে কাজী কেরামত আলীকে রাজবাড়ী কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো.

জসীম উদ্দিনের কক্ষে বসিয়ে রাখা হয়। বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে রাজবাড়ী সদর আমলি আদালতে তোলা হয়। ১১টা ৫১ মিনিটে আদালতকক্ষ থেকে বের করে কারাগারে নেওয়া হয়। পুলিশের কড়া পাহারায় আদালতে তোলার সময় আদালত পাড়ায় বহিরাগত কিছু লোক ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দেয়।

কাজী কেরামতের জামিনের বিরোধিতা করেন আইনজীবী নেকবার হোসেন। তিনি বলেন, কাজী কেরামত এবং তাঁর ভাই কাজী ইরাদতসহ কাজী পরিবার জেলার রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতেন। ১৫ বছর ৭ মাসের ক্ষমতায় তাঁরা সব ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করতেন। চাকরি, টেন্ডার বাণিজ্য, বালু মহাল দখলসহ সব ক্ষেত্রে তাঁরা নিয়ন্ত্রণ করতেন।

আরও পড়ুনঢাকায় গ্রেপ্তারের পর সাবেক এমপি কেরামত আলী রাজবাড়ীর আদালতে৪ ঘণ্টা আগে

রাজবাড়ী আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুর রাজ্জাক বলেন, রাজবাড়ী সদর থানায় ৩০ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থী রাজীব মোল্লার দায়েরকৃত মামলার এজাহারভুক্ত ২ নম্বর আসামি ছিলেন কাজী কেরামত আলী। মামলায় ১৭০ জনকে চিহ্নিত এবং অজ্ঞাত আরও ৩০০ জনকে আসামি করা হয়। ১৮ জুলাই বেলা ৩টার দিকে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের রাজবাড়ী শহরের বড়পুল এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে ছাত্র-জনতা, শিক্ষক, অভিভাবক সমবেত হয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের ওপর মামলার আসামিরা দেশি অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। ওই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় আদালত তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বেড়েছে মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম

উৎপাদন ও বাজারে সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে ডিমের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন কম হওয়ায় খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন এবং টানা বৃষ্টিপাতের জন্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

শুক্রবার (১ আগস্ট) রাজধানীর নিউ মার্কেট, রায়েরবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি ডজন ১২০ টাকায়, এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। সেই হিসেবে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

সবজির দাম স্বাভাবিক
এ সপ্তাহে বাজারে টমেটো ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিক আছে। গত সপ্তাহে টমেটো বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, শশা ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, গাজর (দেশি) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, প্রতিটি পিস জালি কুমড়া ৫০ টাকা এবং লাউ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুদিবাজারে চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে। তবে, পেঁয়াজের দাম সামান্য বেড়েছে। এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে ৫৫ টাকায় কেজিতে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং দেশি আদা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বেড়েছে মাছ ও মুরগির দাম
বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির জন্য জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ছে এবং উজানের পানিতে খামারিদের পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় মাছের দাম বেড়েছে। বাজারে এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে থেকে ৩৫০ টাকায়। চাষের পাঙাসের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মাঝারি সাইজ কৈ মাছ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি শিং ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৬০০ টাকা এবং এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়।

এ সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে  ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহ ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ঢাকা/রায়হান/রফিক 

সম্পর্কিত নিবন্ধ