ফিলিস্তিনের গাজায় সংঘাতের প্রতিক্রিয়ায় ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস।

আজ সোমবার ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ ও এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে দেওয়া পোস্টে এ পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

পোস্টে বলা হয়, আজ সোমবার (৭ এপ্রিল ২০২৫) দিনব্যাপী বিক্ষোভ হতে পারে। গাজায় সংঘাতের প্রতিক্রিয়ায় ঢাকাসহ সারা দেশে গণবিক্ষোভে অংশ নেওয়া এবং প্রতিবাদ দেখানোর পরিকল্পনা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সম্ভাব্য যানজট ও দূতাবাস অভিমুখে প্রতিবাদ সমাবেশের কারণে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস আজ সোমবার (৭ এপ্রিল) বিকেলের সেবা সীমিত করবে।

পোস্টে আরও বলা হয়, মার্কিন নাগরিকদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। মনে রাখা উচিত, শান্তিপূর্ণভাবে করার উদ্দেশ্যে আয়োজিত বিক্ষোভগুলো সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে। সহিংসতায় পরিণত হতে পারে।

পোস্টে বলা হয়, মার্কিন নাগরিকদের বিক্ষোভ এড়িয়ে চলা উচিত। যেকোনো বড় সমাবেশের আশপাশে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

সতর্কবার্তায় মার্কিন নাগরিকদের পরামর্শ দিয়ে বলা হয়, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পরিকল্পনা পর্যালোচনা করুন। স্থানীয় ঘটনাবলিসহ আশপাশের পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন থাকুন। হালনাগাদ তথ্যের জন্য স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো পর্যবেক্ষণ করুন।

সতর্কবার্তায় কিছু করণীয় পদক্ষেপের উল্লেখ রয়েছে। এগুলো হলো—

*এলাকা এড়িয়ে চলুন।

*হালনাগাদ তথ্যের জন্য স্থানীয় গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণ করুন।

*ভিড় এড়িয়ে চলুন।

*বিক্ষোভ এড়িয়ে চলুন।

*জরুরি যোগাযোগের জন্য সর্বদা চার্জযুক্ত মোবাইল ফোন সঙ্গে রাখুন।

এ-সংক্রান্ত যেকোনো সহায়তার জন্য ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য সতর ক

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ