‘সিআইডি’তে এসিপি প্রদ্যুমনের বদলে কে আসছেন
Published: 7th, April 2025 GMT
আলোচিত হিন্দি সিরিয়াল ‘সিআইডি’–তে অভিনয়ের সুবাদে দর্শকমহলে ‘এসিপি প্রদ্যুমন’ নামেই পরিচিতি পেয়েছেন ভারতীয় অভিনেতা শিবাজী সত্যম। ২৭ বছর ধরে ‘এসিপি প্রদ্যুমন’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
মাঝখানে ছয় বছর পর বিরতির পর আবারও এসিপি প্রদ্যুমন রূপে পর্দায় ফেরেন এই জনপ্রিয় অভিনেতা। গত বছরের ডিসেম্বরে অনেকটা চমকে দিয়ে স্মৃতিজাগানিয়া সিরিয়ালটি ফিরিয়েছে সনি টিভি। সিরিয়ালটি প্রচারের মধ্যে গত শনিবার সনি টিভি জানিয়েছে, পর্দায় এসিপি প্রদ্যুমন চরিত্রের মৃত্যু ঘটছে।
খবরটি ছড়িয়ে পড়ার পর দর্শকেরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এর মধ্যে আলোচনা চলছে, এসিপি প্রদ্যুমনের বদলে কোন চরিত্রটি ‘সিআইডি–২ ’–এ পর্দায় আসছে। এবিপি আনন্দ জানিয়েছে, এই ধারাবাহিকে অভিনেতা পার্থ সামথন যোগ দিতে পারেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে শিবাজী সত্যম বলেছিলেন, তিনি এই ধারাবাহিক থেকে কিছুটা সময়ের জন্য বিরতি চেয়েছেন। সেই কারণেই নির্মাতা তাঁর মৃত্যুর ঘটনা দেখিয়েছেন। তবে তিনি ভবিষ্যতে আবার ফিরে আসবেন কি না, তা কেবল নির্মাতারাই জানেন।
আরও পড়ুনফিরছেন এসিপি প্রদ্যুম্ন, ৬ বছর পর ‘সিআইডি’২৭ অক্টোবর ২০২৪কেউ কেউ ধারণা করছিলেন, পার্থকে এসিপি প্রদ্যুমনের চরিত্রে দেখা যাবে। তবে তা নয়, পার্থকে এসিপি অংশুমান নামে নতুন একটি চরিত্রে পাওয়া যাবে।
‘সিআইডি’ দিয়ে বেশ কয়েক বছর পর ছোট পর্দায় ফিরছেন পার্থ সামথন। এর আগে হিট শো ‘কাইসি ইয়ে ইয়ারিয়ান’-এ অভিনয় করে পরিচিতি পান। তাঁকে শেষবার ‘কসৌটি জিন্দেগি কে’ ধারাবাহিকে অভিনয় করতে দেখা গেছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শালবনে ছেচরা কই ও পাটখই
বিভতিভূষণের আরণ্যক উপন্যাসে একজন যুগলপ্রসাদ ছিলেন, যিনি লবটুলিয়ার জঙ্গলে সরস্বতী কুন্ডের পাড়ে নানা জায়গা থেকে নানা প্রজাতির গাছপালা এনে লাগাতেন। সেসব গাছে ফুল ফুটলে আনন্দে তিনি আত্মহারা হয়ে যেতেন। আমারও একজন যুগলপ্রসাদ ছিলেন, নাম আজাহার। প্রায় আমারই সমবয়সী।
টাঙ্গাইলের সখীপুরে বিভিন্ন শালবনে ঘুরতে গেলে মাঝেমধ্যে তিনি আমার সাথি হতেন। শালবনে কত গাছ! তেমন কিছুই চিনি না। কিন্তু সেই শালবনের কোলে জন্ম নেওয়া ও বেড়ে ওঠা আজাহার ঠিকই সেসব গাছ চিনতেন, আর জিজ্ঞেস করলে টপাটপ নাম বলে দিতেন। কিন্তু গোলমাল বাধত সেসব নাম শুনে। কেননা সেসব নাম বলতেন, তাঁদের স্থানীয় ভাষায়। বইয়ে সেসব নাম খুঁজে পাওয়া যেত না।
একদিন শালবনের মধ্যে একটা ছোট গাছ দেখলাম, গাছের গুঁড়ির চারদিকে তীক্ষ্ণসরু ও সোজা প্রচুর কাঁটা বেরিয়েছে। পাতাগুলো দেখতে কিছুট পেয়ারাপাতার মতো। প্রচুর ডালপালায় গাছটার মাথা ঝাঁকড়া হয়ে আছে। ডালের আগায় শিষের মতো মঞ্জরিতে প্রচুর ঘিয়া ও সাদাটে রঙের খুদে ফুল ফুটেছে। চিনি না। তাই আজাহারকে জিজ্ঞেস করলাম, নাম কী? চট করেই বলে দিলেন, ছেচরা কই। মাছের নাম কই হয় জানি, কিন্তু কোনো গাছের নাম কই হতে পারে? অগত্যা ছবি তুলে ওই নামকেই মনে গেঁথে ফিরে এলাম ঢাকায়।
আজাহার বললেন, এখন ফুল দেখছেন। কদিন পরেই ওসব ফুল থেকে ছোট ছোট গুলির মতো প্রচুর ফল ধরবে। ছোটবেলায় আমরা সেসব কাঁচা ফল নিয়ে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে ফটকা বানিয়ে তার চোঙে একটা একটা করে ফল দিয়ে বন্দুকের মতো গুলি গুলি খেলতাম। চোঙের ভেতরে একটা সরু কাঠি ঢুকিয়ে চাপ দিয়ে সেসব ফল গুলির মতো ফাটাতাম। ফটাস করে শব্দ হতো। এ সময় মাসখানেকের জন্য আমরা এ গাছের ফল, পরে জালি খেজুর নিয়ে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলতাম। শালবনে সে সময় এ গাছের অভাব ছিল না। এখন তো দেখতে হলে খুঁজে বের করতে হয়।
ফিরে এসে সে ছবি পাঠালাম জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের সাবেক বোটানিস্ট সামসুল হক ভাইয়ের কাছে। দুই দিন পরেই তিনি জানালেন, গাছটার স্থানীয় নাম ছেচরা কই, উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Bridelia retusa, গোত্র ফাইলেনথেসি। বইপত্রে এ গাছের চারটি বাংলা নাম পেলাম—কাঁটাকই, কাঁটাকুশি, কামকই, আকদানা। বাংলাদেশ ছাড়াও এ গাছ আছে নেপাল, ভারত, শ্রীলঙ্কা, চীন, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশে। সাধারণত উঁচু ও শুষ্ক বনাঞ্চলে এ গাছ দেখা যায়। ছোট বৃক্ষজাতীয় গাছ, প্রায় ১০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়, দ্রুত বাড়ে। এ গাছের কাঁটা থাকায় বন্য প্রাণীরা এদের ধারে ঘেঁষে না, এমনকি এর বাকল দিয়েও বিষ তৈরি করা হয় বলে শুনেছি।
ফল গোলাকার, ছোট, কাঁচা ফল ময়লা সবুজ, পাকলে খোসায় লাল রং ধরে। ছেচরা কইগাছের কাঠ মাঝারি শক্ত থেকে শক্ত, কাঠের রং ময়লা লাল। রঙে ও গুণে কাঠ উৎকৃষ্ট। নির্মাণকাজ ও গরুর গাড়ির চাকা বানাতে ব্যবহার করা হয়। জ্বালানি কাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হলেও শুষ্ক তৃণভূমিতে যদি কোনো গাছ থাকে, তবে সেসব ঘাসে আগুন দিলে এ গাছ পোড়ে না বলে কথিত রয়েছে। বীজ দ্বারা সহজে বংশবৃদ্ধি বা চারা হয়।
পূর্বাচল উপশহরের শালবনে দেখা পাটখই ফল