মেহেরপুর জেলা স্টেডিয়ামে মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলা আয়োজনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় ক্রীড়ামোদীরা। গতকাল সোমবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এক কর্মসূচিতে তারা ওই মেলা অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। 
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ‘স্বপ্নচূড়া’ নামের একটি সংগঠনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা স্টেডিয়ামে বাণিজ্য মেলার অনুমতি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ। আগামী ২ মে শুরু হয়ে এই মেলা শেষ হওয়ার কথা ১ জুন। এখানে শতাধিক দেশীয় পণ্যের দোকানসহ খাবার ও বিনোদনের জন্য আলাদা স্টল বরাদ্দের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। 
সোমবারের কর্মসূচির উদ্যোক্তা ক্রিকেটার আসাদুর রহমান অনুর ভাষ্য, লেখাপড়ার জন্য সুস্থ দেহ ও মন দরকার। খেলার মাঠে সুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শরীরচর্চাসহ সুস্থ বিনোদন পায় শিক্ষার্থীরা। খেলাধুলা না থাকলে তারা বিপথগামী হতে পারে। তিনি মাঠ বাদ দিয়ে অন্য জায়গায় মেলা আয়োজনের আহ্বান জানান।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মারুফ আহাম্মেদ বিজন বলেন, ক্রীড়াঙ্গন টিকিয়ে রাখতে হলে মাঠের বিকল্প নেই। অথচ জেলা স্টেডিয়ামে বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হয়েছে, এটা দুঃখজনক। মেলার পর মাঠ খেলার জন্য তৈরি করতে দুই বছর সময় লেগে যাবে। 
তাঁর ভাষ্য, ৯ বছর ধরে এখানে প্রথম বিভাগ ফুটবল ও ক্রীকেট খেলা বন্ধ। যখন মাঠে ক্রিকেট ও ফুটবল ফিরবে– এমন আশায় ক্রীড়ামোদীরা বুক বেঁধেছিলেন, এই সময়ে আয়োজন করা হয়েছে মেলার।
অন্য বক্তারা বলেন, বাণিজ্য মেলার নামে স্টেডিয়ামে হাউজিসহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপের পাঁয়তারা চলছে বলে জানতে পেরেছেন। এই মাঠকে খেলার জন্য রেখে অন্য কোথাও মেলা আয়োজনের দাবি তাদের। 
কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আসাদুজ্জামান লিটন, ক্রিকেটার মাহামুদুল হাসানসহ অন্য ক্রীড়া সংগঠকরা।
মেলা আয়োজনের জন্য স্বপ্নচূড়াকে অনুমতি দেওয়া হলেও মাঠের অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে জানান মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ। তিনি বলেন, স্টেডিয়ামে মেলার আয়োজন করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। 
জেলা প্রশাসক যে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি পদে আছেন, তা মনে করিয়ে দিলে তিনি বলেন, স্টেডিয়াম পেতে এখনও কেউ আবেদন করেনি। মেলা নিয়েও পুরোপুরি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের হামলায় ২০ ইসরায়েলি নিহত: বিবিসি

ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা চারদিন ধরে চলছে। এসব হামলায় উভয় দেশের মধ্যে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। ইসরায়েলের জাতীয় পরিষেবা জানিয়েছে, আজ সোমবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। ফলে গত শুক্রবার থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ২০ জনে পৌঁছেছে। আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা বিবিসি।

অন্যদিকে আল জাজিরা বলছে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানান, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী, একজন পুরুষ। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ