খেলার মাঠে মেলা বন্ধ চাইলেন ক্রীড়ামোদীরা
Published: 7th, April 2025 GMT
মেহেরপুর জেলা স্টেডিয়ামে মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলা আয়োজনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় ক্রীড়ামোদীরা। গতকাল সোমবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এক কর্মসূচিতে তারা ওই মেলা অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ‘স্বপ্নচূড়া’ নামের একটি সংগঠনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা স্টেডিয়ামে বাণিজ্য মেলার অনুমতি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ। আগামী ২ মে শুরু হয়ে এই মেলা শেষ হওয়ার কথা ১ জুন। এখানে শতাধিক দেশীয় পণ্যের দোকানসহ খাবার ও বিনোদনের জন্য আলাদা স্টল বরাদ্দের অনুমতি নেওয়া হয়েছে।
সোমবারের কর্মসূচির উদ্যোক্তা ক্রিকেটার আসাদুর রহমান অনুর ভাষ্য, লেখাপড়ার জন্য সুস্থ দেহ ও মন দরকার। খেলার মাঠে সুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শরীরচর্চাসহ সুস্থ বিনোদন পায় শিক্ষার্থীরা। খেলাধুলা না থাকলে তারা বিপথগামী হতে পারে। তিনি মাঠ বাদ দিয়ে অন্য জায়গায় মেলা আয়োজনের আহ্বান জানান।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মারুফ আহাম্মেদ বিজন বলেন, ক্রীড়াঙ্গন টিকিয়ে রাখতে হলে মাঠের বিকল্প নেই। অথচ জেলা স্টেডিয়ামে বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হয়েছে, এটা দুঃখজনক। মেলার পর মাঠ খেলার জন্য তৈরি করতে দুই বছর সময় লেগে যাবে।
তাঁর ভাষ্য, ৯ বছর ধরে এখানে প্রথম বিভাগ ফুটবল ও ক্রীকেট খেলা বন্ধ। যখন মাঠে ক্রিকেট ও ফুটবল ফিরবে– এমন আশায় ক্রীড়ামোদীরা বুক বেঁধেছিলেন, এই সময়ে আয়োজন করা হয়েছে মেলার।
অন্য বক্তারা বলেন, বাণিজ্য মেলার নামে স্টেডিয়ামে হাউজিসহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপের পাঁয়তারা চলছে বলে জানতে পেরেছেন। এই মাঠকে খেলার জন্য রেখে অন্য কোথাও মেলা আয়োজনের দাবি তাদের।
কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আসাদুজ্জামান লিটন, ক্রিকেটার মাহামুদুল হাসানসহ অন্য ক্রীড়া সংগঠকরা।
মেলা আয়োজনের জন্য স্বপ্নচূড়াকে অনুমতি দেওয়া হলেও মাঠের অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে জানান মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ। তিনি বলেন, স্টেডিয়ামে মেলার আয়োজন করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।
জেলা প্রশাসক যে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি পদে আছেন, তা মনে করিয়ে দিলে তিনি বলেন, স্টেডিয়াম পেতে এখনও কেউ আবেদন করেনি। মেলা নিয়েও পুরোপুরি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।