বলিউডের প্রয়াত জনপ্রিয় অভিনেত্রী পারভীন ববি। সত্তর ও আশির দশকে রূপ ও অভিনয় গুণে দর্শক মাতিয়েছেন। অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে জুটি বেঁধে বেশ কিছু সিনেমায় অভিনয় করেন। কিন্তু এক পর্যায়ে অমিতাভ আর তার স্ত্রীর কারণে অনেক কেঁদেছিলেন এই অভিনেত্রী।

পারভীন ববির সঙ্গে অভিনেতা রঞ্জিতের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ। এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সম্পর্কের সমীকরণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আড়ালের ঘটনা জানান এই অভিনেতা

বলিউডের খলনায়ক রঞ্জিত বলেন, “পারভীন ববি আমার প্রিয় বন্ধু ছিল। সে নিঃসঙ্গ ছিল। পারভীন ববি চমৎকার একজন মানুষ ছিল। সবসময় হাসত, তার দাঁতের জন্য আমরা তাকে ‘ফাওয়াদা’ বলে ডাকতাম।”

পারভীন ববির কান্নার ঘটনা বর্ণনা করে রঞ্জিত বলেন, “একবার তার খুব মন খারাপ ছিল এবং কাঁদছিল। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘কী হয়েছে পারভীন?’ আমরা তখন কাশ্মীরে ছিলাম। নাম উল্লেখ করতে সমস্যা নেই। কারণ এটা সম্পূর্ণ সত্য ঘটনা। আসলে ‘সিলসিলা’ সিনেমা নির্মাণের কথা চলছিল। আর পারভীন ববি ছিল সিনেমাটির নায়িকা; তার সঙ্গে ছিলেন রেখা। কিন্তু কাজটি পারভীন ববির হাতছাড়া হয়ে যায়।”

‘সিলসিলা’ সিনেমা থেকে বাদ পড়ার কারণ জানিয়ে রঞ্জিত বলেন, “একটি চটকদার বিতর্কের জন্য বাদ দেওয়া হয় পারভীন ববিকে। ববির পরিবর্তে জয়া ভাদুড়িকে কাস্ট করা হয়। অথচ সিনেমাটিতে রেখা ও পারভীন ববির কাজ করার কথা ছিল।”

‘মজবুর’, ‘দিওয়ার’, ‘অমর আকবর অ্যান্টনি’-এর মতো সিনেমায় একসঙ্গে কাজ করেছেন অমিতাভ বচ্চন ও পারভীন ববি। ফলে দুজনের রোমান্টিক সম্পর্ক নিয়ে কানাঘুষাও হয়েছিল।

১৯৭২ সালে মডেলিং দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন পারভীন ববি। তখনই সুযোগ পান অভিনয়ের। এর পরের বছর মুক্তি পায় তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘চরিত্র’। অর্থাৎ ১৯৭৩ সালে এ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক ঘটে তার। অভিনয় ক্যারিয়ারে ‘সুহাগ’, ‘কালা পাথর’, ‘শান’-এর মতো সিনেমা উপহার দিয়েছেন এই অভিনেত্রী।   

পারভীন ববিই প্রথম বলিউড তারকা, যে টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে মডেল হন। ১৯৭৬ সালের ১৯ জুলাই সাময়িকীটির ইউরোপীয় সংস্করণের প্রচ্ছদে দেখা যায় তাকে।

অমিতাভ ছাড়াও অভিনেতা ড্যানি, কবির বেদির সঙ্গে তার প্রেমের খবর চাউর হয়েছিল। পরিচালক মহেশ ভাটের সঙ্গে শেষমেশ প্রণয়ে জড়ান। মহেশ ভাট সেটা বরাবরই স্বীকার করেছেন। যদিও মহেশ সেসময় বিবাহিত, তবু নিঃসঙ্গ পারভীনের প্রেমে পড়েছিলেন এই নির্মাতা।

নিঃসঙ্গ পারভীন ববির সঙ্গী ছিল মানসিক ব্যাধি আর ডায়াবেটিস। ২০০৫ সালের ২০ জানুয়ারি তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুর তিন দিন পর পচন ধরা নিথর দেহটা উদ্ধার করা হয়েছিল।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ