অমিতাভ-জয়ার কারণে কেঁদেছিলেন ‘নিঃসঙ্গ’ পারভীন ববি
Published: 8th, April 2025 GMT
বলিউডের প্রয়াত জনপ্রিয় অভিনেত্রী পারভীন ববি। সত্তর ও আশির দশকে রূপ ও অভিনয় গুণে দর্শক মাতিয়েছেন। অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে জুটি বেঁধে বেশ কিছু সিনেমায় অভিনয় করেন। কিন্তু এক পর্যায়ে অমিতাভ আর তার স্ত্রীর কারণে অনেক কেঁদেছিলেন এই অভিনেত্রী।
পারভীন ববির সঙ্গে অভিনেতা রঞ্জিতের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ। এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সম্পর্কের সমীকরণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আড়ালের ঘটনা জানান এই অভিনেতা
বলিউডের খলনায়ক রঞ্জিত বলেন, “পারভীন ববি আমার প্রিয় বন্ধু ছিল। সে নিঃসঙ্গ ছিল। পারভীন ববি চমৎকার একজন মানুষ ছিল। সবসময় হাসত, তার দাঁতের জন্য আমরা তাকে ‘ফাওয়াদা’ বলে ডাকতাম।”
পারভীন ববির কান্নার ঘটনা বর্ণনা করে রঞ্জিত বলেন, “একবার তার খুব মন খারাপ ছিল এবং কাঁদছিল। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘কী হয়েছে পারভীন?’ আমরা তখন কাশ্মীরে ছিলাম। নাম উল্লেখ করতে সমস্যা নেই। কারণ এটা সম্পূর্ণ সত্য ঘটনা। আসলে ‘সিলসিলা’ সিনেমা নির্মাণের কথা চলছিল। আর পারভীন ববি ছিল সিনেমাটির নায়িকা; তার সঙ্গে ছিলেন রেখা। কিন্তু কাজটি পারভীন ববির হাতছাড়া হয়ে যায়।”
‘সিলসিলা’ সিনেমা থেকে বাদ পড়ার কারণ জানিয়ে রঞ্জিত বলেন, “একটি চটকদার বিতর্কের জন্য বাদ দেওয়া হয় পারভীন ববিকে। ববির পরিবর্তে জয়া ভাদুড়িকে কাস্ট করা হয়। অথচ সিনেমাটিতে রেখা ও পারভীন ববির কাজ করার কথা ছিল।”
‘মজবুর’, ‘দিওয়ার’, ‘অমর আকবর অ্যান্টনি’-এর মতো সিনেমায় একসঙ্গে কাজ করেছেন অমিতাভ বচ্চন ও পারভীন ববি। ফলে দুজনের রোমান্টিক সম্পর্ক নিয়ে কানাঘুষাও হয়েছিল।
১৯৭২ সালে মডেলিং দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন পারভীন ববি। তখনই সুযোগ পান অভিনয়ের। এর পরের বছর মুক্তি পায় তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘চরিত্র’। অর্থাৎ ১৯৭৩ সালে এ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক ঘটে তার। অভিনয় ক্যারিয়ারে ‘সুহাগ’, ‘কালা পাথর’, ‘শান’-এর মতো সিনেমা উপহার দিয়েছেন এই অভিনেত্রী।
পারভীন ববিই প্রথম বলিউড তারকা, যে টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে মডেল হন। ১৯৭৬ সালের ১৯ জুলাই সাময়িকীটির ইউরোপীয় সংস্করণের প্রচ্ছদে দেখা যায় তাকে।
অমিতাভ ছাড়াও অভিনেতা ড্যানি, কবির বেদির সঙ্গে তার প্রেমের খবর চাউর হয়েছিল। পরিচালক মহেশ ভাটের সঙ্গে শেষমেশ প্রণয়ে জড়ান। মহেশ ভাট সেটা বরাবরই স্বীকার করেছেন। যদিও মহেশ সেসময় বিবাহিত, তবু নিঃসঙ্গ পারভীনের প্রেমে পড়েছিলেন এই নির্মাতা।
নিঃসঙ্গ পারভীন ববির সঙ্গী ছিল মানসিক ব্যাধি আর ডায়াবেটিস। ২০০৫ সালের ২০ জানুয়ারি তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুর তিন দিন পর পচন ধরা নিথর দেহটা উদ্ধার করা হয়েছিল।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা
রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।
এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।
রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।
এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।
সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।
এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।
রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।
রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।
আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫