রাতের আঁধারে দুই কৃষকের ড্রাগন ও পেয়ারা বাগান কেটে সাবাড়
Published: 8th, April 2025 GMT
ঝিনাইদহের মহেশপুরে রকি আহমেদ ও রিঙ্কু মিয়া নামে দুই কৃষকের প্রায় ৩ হাজার ড্রাগন ও ৭শ পেয়ারা গাছ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
ক্ষতিগ্রস্ত এই দুই কৃষক মহেশপুর উপজেলার নাটিমা ইউনিয়নের বামনগাছি গ্রামের বাসিন্দা।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকালে মাঠে গিয়ে গাছগুলো কাটা অবস্থায় দেখতে পান কৃষকরা। এরআগে সোমবার (৭ এপ্রিল) দিবাগত রাতে বামনগাছি গ্রামের মাঠে দুর্বৃত্তরা এ অকাণ্ড ঘটায়।
স্থানীয়রা জানায়, ওই গ্রামের মাঠে কৃষক রকি আহমেদ আগে দুই বিঘা জমিতে ডাগ্রন ফলের আবাদ করেছিলেন। এই বাগান থেকে আগে কিছু ড্রাগন ফল বিক্রিও করেছেন তিনি। সোমবার রাতে ড্রাগন গাছগুলো গোড়া থেকে কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
রাতের আঁধারে কেটে ফেলা পেয়ারা গাছ
অন্যদিকে একই গ্রামের কৃষক রিঙ্কু মিয়ার আড়াই বিঘা জমির অন্তত ৭শ পেয়ারা গাছ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এসব গাছে পেয়ারা ধরেছিল। এ অকাণ্ডে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ওই কৃষক।
ক্ষতিগ্রস্থস্ত কৃষক রকি আহমেদ বলেন, “কে বা কারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তা জানি না। ফসলের সঙ্গে কেন এমন শত্রুতা? কোনো মানুষ এমন ক্ষতি করতে পারে? আমি এ ঘটনায় আইনের আশ্রয় নেব।”
কৃষক রিংকু মিয়া বলেন, “পূর্ব শত্রুতার জেরে কেউ এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। আমি দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানাচ্ছি।”
মহেশপুর থানার ওসি ফয়েজ উদ্দিন মৃধা বলেন, “এ রকম ফসলহানির ঘটনা জানা নেই। তবে খোঁজখবর নিচ্ছি। ঘটনার সঙ্গে যে বা যারাই জড়িত থাকুক না কেন, অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/শাহরিয়ার/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইলে ছয় মাসে ২ হাজার কর্মসংস্থান
দীর্ঘ ২২ বছর ধরে বন্ধ থাকা রাজশাহী টেক্সটাইল মিল পুনরায় চালু করে মাত্র ছয় মাসে দুই হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে শিল্পগ্রুপ প্রাণ-আরএফএল। টেলি মার্কেটিং ও তৈরি পোশাকসহ নতুন খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে আরো ১০ হাজার কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
শনিবার (২ আগস্ট) রাজশাহীর সপুরায় অবস্থিত ‘বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইল লিমিটেড’ কারখানা চত্বরে “দুই হাজার কর্মসংস্থান উদযাপন; লক্ষ্য ১২ হাজার” শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি কর্মসংস্থানের এই মাইলফলক উদযাপনের অংশ হিসেবে কেক কাটেন।
আরো পড়ুন:
আমরা যে চূড়ান্ত পরিবর্তন চেয়েছিলাম, তা সম্ভব হয়নি: আসিফ মাহমুদ
সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর পরিদর্শন করলেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরী, রাজশাহীর পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল করপোরেশনের (বিটিএমসি) ম্যানেজার নুরুল আলমসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের এ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা একটি রাষ্ট্রায়ত্ত মিল চালু করে এত অল্প সময়ে দুই হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি সত্যিই প্রশংসনীয়। এটি শুধু একটি কারখানা নয়, একটি অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনের সূচনা।”
তিনি আরো বলেন, “বর্তমানে যখন কর্মসংস্থানের অভাবে মানুষ গ্রাম থেকে শহরে ছুটছে, তখন প্রাণ-আরএফএল-এর মতো প্রতিষ্ঠান স্থানীয় পর্যায়ে শিল্পায়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে—যা টেকসই উন্নয়নের মূল ভিত্তি।”
অনুষ্ঠানে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কয়েকজন শ্রমিকের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন উপদেষ্টা।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট—আমরা চাই না কেউ আর কাজের জন্য ঢাকায় ছুটে যাক। শিল্প নিয়ে আমরা পৌঁছাতে চাই প্রত্যন্ত অঞ্চলে। রাজশাহীতে শ্রমঘন শিল্পে বিনিয়োগ করে আমরা ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছি।”
তিনি বলেন, “এই কারখানাটি হবে একটি সম্পূর্ণ সাসটেইনেবল গ্রিন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক। এখানে উৎপাদিত পণ্য শতভাগ রপ্তানিমুখী হবে। নারীদের কর্মসংস্থানের জন্য আমরা বিশেষভাবে কাজ করছি। টেলি মার্কেটিংয়ের মতো খাতে বিপুল সংখ্যক নারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।”
২০২৪ সালের অক্টোবরে রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল করপোরেশনের (বিটিএমসি) সঙ্গে প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপের ভিত্তিতে চুক্তি স্বাক্ষর করে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। পরের মাসেই বিটিএমসি থেকে দায়িত্ব বুঝে নিয়ে পুরোনো, পরিত্যক্ত ও জরাজীর্ণ অবস্থা থেকে কারখানাটিকে সচল করে তোলা হয়।
বর্তমানে কারখানাটির পরিত্যক্ত একমাত্র শেড মেরামত করে ব্যাগ, জুতা, লাগেজসহ বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছে প্রাণ-আরএফএল।
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ