ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন
Published: 8th, April 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্কে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক পণ্যের রপ্তানির ওপর প্রভাব পড়বে, যা দেশের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছে সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন।
এই সংগঠন বলেছে, পাল্টা শুল্ক আরোপের ফলে দেশের তৈরি পোশাকশিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমে যাবে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা বিকল্প উৎসে পণ্য সংগ্রহ করতে উৎসাহিত হবে। সংগঠনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অনেক বাংলাদেশি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে সরে আসতে বাধ্য হতে পারে। ফলে এর সরাসরি প্রভাব পড়বে শ্রমিকদের ওপর। কিছু কারখানাও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ইতিমধ্যে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফলে শ্রমজীবী মানুষদের জীবন-জীবিকা চরম ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে।
উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বৈদেশিক আয়ের একটি বড় অংশ তৈরি পোশাক খাত থেকে অর্জিত হয়। এই খাতে প্রায় ৪০ লাখের বেশি শ্রমিক কাজ করেন, যাঁদের বেশির ভাগ নারী শ্রমিক। এ ছাড়া এই পোশাক খাতে কাজ করা নারীদের জন্য তেমন কোনো বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টিও হয়নি। এই খাতের ওপরই তাঁদের কর্মসংস্থানের জন্য নির্ভরশীল।
পাল্টা শুল্ক আরোপের বিষয়টি কূটনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় সংগঠনটি। এ ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব যেন শ্রমিকের মজুরির ওপর না পড়ে, তার দায়ভার ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিতে হবে।
শ্রমিকের চাকরির নিরাপত্তার স্বার্থে ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠান স্বচ্ছতা অবলম্বন করার আহ্বান জানানো হয়। এই পরিস্থিতিতে একমাত্র ক্রেতা প্রতিষ্ঠান পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রেখে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দিতে পারবে।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প শুধু দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে না, এটি নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্য হ্রাস এবং টেকসই উন্নয়নের অন্যতম চালক হিসেবে কাজ করে। তাই এই খাতে যেকোনো সংকট আমাদের জাতীয় অগ্রগতির ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে দুই স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ১
রাজবাড়ীর পাংশায় প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে দুই স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল রোববার রাতে পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
ভুক্তভোগী দুই ছাত্রীর মা ও বাবা গতকাল পৃথকভাবে বাদী হয়ে ধর্ষণের অভিযোগে পাংশা থানায় দুটি মামলা করেন। এতে হাসমত আলী (২২) ও শিহাব মণ্ডল (২০) নামের দুই তরুণকে আসামি করা হয়। তাঁদের বাড়ি উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নে। মামলা করার পর পুলিশ রাতে অভিযান চালিয়ে শিহাবকে গ্রেপ্তার করে।
ভুক্তভোগী দুই স্কুলছাত্রী স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাদের একজনের বয়স ১৪ বছর এবং অপরজনের বয়স ১৫ বছর।
মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল বেলা ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়া শেষে দুই বান্ধবী একসঙ্গে বাড়ি ফিরছিল। পথে উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের বনগ্রাম এলাকায় পৌঁছালে তাদের পথ রোধ করে হাসমত ও শিহাব। ধারালো ব্লেড বের করে স্কুলছাত্রী দুজনকে জিম্মি করে রাস্তার অদূরে একটি পানের বরজে জোর করে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানে পৃথক স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করেন ওই দুই তরুণ। বিষয়টি কাউকে না জানাতে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চলে যান তাঁরা।
গতকাল রাতে পাংশা মডেল থানায় মামলা করতে আসা ভুক্তভোগী দুই স্কুলছাত্রীর পরিবার জানায়, হাসমত ও শিহাব ওই দুই স্কুলছাত্রীকে মাঝেমধ্যে উত্ত্যক্ত করতেন। এ ঘটনায় দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।
পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘অষ্টম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে একজনের মা এবং অপরজনের বাবা বাদী হয়ে রোববার রাতে হাসমত আলী ও শিহাব মণ্ডলকে আসামি করে পৃথক দুটি মামলা করেন। রাতেই আসামি শিহাব মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর আসামি হাসমতকে গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।
ওসি সালাহ উদ্দিন আরও বলেন, গ্রেপ্তার শিহাব পুলিশের কাছে ধর্ষণের অভিযোগ স্বীকার করেছেন। তাঁর পোশাকেও ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তাঁকে সোমবার রাজবাড়ীর আদালতে পাঠানো হবে। দুই স্কুলছাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।