যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্কে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক পণ্যের রপ্তানির ওপর প্রভাব পড়বে, যা দেশের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছে সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন।

এই সংগঠন বলেছে, পাল্টা শুল্ক আরোপের ফলে দেশের তৈরি পোশাকশিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমে যাবে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা বিকল্প উৎসে পণ্য সংগ্রহ করতে উৎসাহিত হবে। সংগঠনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অনেক বাংলাদেশি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে সরে আসতে বাধ্য হতে পারে। ফলে এর সরাসরি প্রভাব পড়বে শ্রমিকদের ওপর। কিছু কারখানাও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ইতিমধ্যে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফলে শ্রমজীবী মানুষদের জীবন-জীবিকা চরম ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে।

উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বৈদেশিক আয়ের একটি বড় অংশ তৈরি পোশাক খাত থেকে অর্জিত হয়। এই খাতে প্রায় ৪০ লাখের বেশি শ্রমিক কাজ করেন, যাঁদের বেশির ভাগ নারী শ্রমিক। এ ছাড়া এই পোশাক খাতে কাজ করা নারীদের জন্য তেমন কোনো বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টিও হয়নি। এই খাতের ওপরই তাঁদের কর্মসংস্থানের জন্য নির্ভরশীল।

পাল্টা শুল্ক আরোপের বিষয়টি কূটনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় সংগঠনটি। এ ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব যেন শ্রমিকের মজুরির ওপর না পড়ে, তার দায়ভার ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিতে হবে।

শ্রমিকের চাকরির নিরাপত্তার স্বার্থে ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠান স্বচ্ছতা অবলম্বন করার আহ্বান জানানো হয়। এই পরিস্থিতিতে একমাত্র ক্রেতা প্রতিষ্ঠান পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রেখে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দিতে পারবে।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প শুধু দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে না, এটি নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্য হ্রাস এবং টেকসই উন্নয়নের অন্যতম চালক হিসেবে কাজ করে। তাই এই খাতে যেকোনো সংকট আমাদের জাতীয় অগ্রগতির ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ