কেউ কেউ অধ্যাপক ইউনূসকে জোর করে ৫ বছর ক্ষমতায় রাখতে চান: মাহমুদুর রহমান মান্না
Published: 8th, April 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস একের পর এক ম্যাজিক দেখাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেছেন, খুবই নির্মোহভাবে কাজ করছেন মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর মধ্যে ক্ষমতার কোনো লোভ নেই, তিনি দেশের জন্য কাজ করতে চান। তবে তাঁকে দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চাইলে বিতর্ক তৈরি হবে।
মান্না বলেছেন, ‘কেউ কেউ দেখছি অধ্যাপক ইউনূসকে জোর করে পাঁচ বছর ক্ষমতায় রাখতে চান, কিন্তু কেন?’
‘জনশক্তি সভা’র আয়োজনে ‘রাষ্ট্রীয় মূলনীতি পর্যালোচনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মান্না। আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এ সভা হয়।
মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘ড.
মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘মানুষ এরই মধ্যে বুঝেছে, প্রধান উপদেষ্টার মধ্যে ক্ষমতার কোনো লোভ নেই, তিনি দেশের জন্য কাজ করতে চান। আমি যতটুকু বুঝতে পারি, ড. ইউনূস ভোটটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দিয়ে চলে যেতে চান। কিন্তু কেউ কেউ দেখছি তাঁকে জোর করে পাঁচ বছর ক্ষমতায় রাখতে চান, কিন্তু কেন? তিনি ভালো কাজ করছেন, তাই যদি মনে করেন তাঁকে দেশের কল্যাণে রাখতে হবে, তাহলে বিকল্প কিছু চিন্তা করেন। কেন তাঁকে দিয়ে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করে বিতর্কিত করতে হবে?’
রাষ্ট্রীয় মূলনীতি প্রসঙ্গে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এটা নিয়ে বিতর্ক চলতে থাকুক। আমাদের ভিন্নমতকে ধারণ করতে হবে। ভিন্নমতকে কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। রাষ্ট্রীয় মূলনীতি নিয়ে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে আমি একমত নই। সংস্কার কমিশনের শতাধিক প্রস্তাবের সঙ্গেই নাগরিক ঐক্য একমত নয়।’
মাহমুদুর রহমান মান্না আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রের তো কোনো ধর্মের পক্ষে থাকার কথা নয়। কিন্তু আপনি যদি রাষ্ট্রকে ধর্ম থেকে আলাদা করতে চান, তাহলে তো কেউ কেউ ধর্মবিরোধিতার প্রশ্ন তুলবে। এই জায়গাটায় বহুত্ববাদ একটা ভালো ভূমিকা রাখতে পারে। তবে অনেকেই আছেন, যাঁরা রাষ্ট্রীয় মূলনীতি সমাজতন্ত্র রাখার পক্ষে। আমি এই পক্ষে নই। আমার দলের পক্ষে সমাজতন্ত্র এখন আমাদের লক্ষ্য নয়। রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে সমাজতন্ত্রের ধস নামার পর মনে হয় রাষ্ট্রীয় মূলনীতিতে সমাজতন্ত্রের প্রয়োজন নেই।’
গণশক্তি সভার সভাপতি সাদেক রহমান এ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।