নিজ স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ে করলেন প্রধান শিক্ষক; তদন্তে কমিটি
Published: 8th, April 2025 GMT
নওগাঁর মান্দায় ছাত্রীকে বাল্যবিয়ে করে ভাইরাল প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার ১৩ দিন পেরিয়ে গেলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এলাকাবাসীকে নিয়ে মানববন্ধন করেন অভিভাবকরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজ স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ আলম মিয়া আজ মঙ্গলবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
এর আগে গত রোববার বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হলে দুজন দু’ধরনের বক্তব্য দেন। ইউএনও অভিযোগ পেয়েই মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে জানালেও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান। বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক ও অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হলে আজ মঙ্গলবার তড়িঘড়ি করে তিন সদস্যের কমিটি করেন ইউএনও। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- চক-কামদেব বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ ও স্থানীয় অভিভাবক সদস্য রিপন। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ থেকে জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন নিজ প্রতিষ্ঠানের এসএসসি পরীক্ষার্থীকে বিয়ে করেন। জন্মসনদ অনুযায়ী ওই শিক্ষার্থীর বয়স ১৬ বছর ৬ মাস। গত ২৬ মার্চ তাকে বিয়ে করে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে ঘরে তোলেন প্রধান শিক্ষক। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠে। স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকেরা মানববন্ধন করে প্রধান শিক্ষকের অপসারণসহ বিচার দাবি করেন। তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগও দেন। এরপর ১৩ দিন পেড়িয়ে গেলেও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা ময়েজ উদ্দিন বলেন, আকরাম হোসেনের প্রথম স্ত্রী স্কুল শিক্ষক। দ্বিতীয় স্ত্রীও তার ছাত্রী ছিলেন। অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি জানাজানি হলে তাকে বিয়ে করেন। এরপর আবারও ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন। এবারও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
জানতে চাইলে শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম সরওয়ার স্বপন বলেন, ঘটনাটি নিয়ে শিক্ষক সমাজ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও সাড়া মেলেনি। বিদ্যালয়ে গিয়েও তার দেখা পাওয়া যায়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ আলম শেখ বলেন, আজ চিঠি পেয়েছি। যথাসময়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
ইউএনও শাহ আলম মিয়া বলেন, তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তদন্ত কমিটি নিয়ে অসত্য তথ্য দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: নওগ আকর ম হ স ন কর মকর ত সদস য র ব ষয়ট উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন অভিনেতা সমু চৌধুরী
অভিনেতা সমু চৌধুরী পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার পর পুলিশ তাঁকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এর আগে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মাজারের গাছতলায় গামছাপরিহিত সমু চৌধুরীর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নানা জল্পনা শুরু হয়।
গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, অভিনেতা সমু চৌধুরীকে রাত ৩টা ২০ মিনিটের দিকে খালাতো ভাই অপু চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সময় অভিনয়শিল্পী সংঘের লোকজনও ছিলেন। তিনি বলেন, সমু চৌধুরী এর আগে মাজারটিতে কয়েকবার এলেও কেউ তাঁকে চিনতে পারেননি। এবারও মাজারে একাকী সময় কাটাতে এসেছিলেন তিনি।
এর আগে গত বুধবার রাতে ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নে অবস্থিত মুখী শাহ্ মিসকিনের মাজারে আসেন সমু চৌধুরী। পরদিন গতকাল দুপুরে মাজারের গাবগাছের নিচে শুয়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। মাজারের পাশের বাসিন্দা আল মামুন হৃদয় ফেসবুকে তাঁর গাছতলায় শুয়ে থাকার ছবি পোস্ট করেন। দ্রুত সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা সমু চৌধুরীকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে দাবি করেন। সমু চৌধুরীকে এমন অবস্থায় দেখতে পেয়ে সেখানে ভিড় করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিকেল গাড়িয়ে সন্ধ্যা হলে পুলিশের অনুরোধেও থানায় যাননি সমু চৌধুরী। সন্ধ্যার পর লোকজন আরও বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় পুলিশের পাশাপাশি মাজার প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনী অবস্থান নেয়। এ সময় সমু চৌধুরী জানান, তিনি সুস্থ আছেন। সারা রাত মাজারে ধ্যানে ছিলেন।
আরও পড়ুনঅভিনেতা সমু চৌধুরীকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছে পুলিশ, কী হয়েছিল তাঁর২১ ঘণ্টা আগেগতকাল রাত ৯টার দিকে সমু চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন গফরগাঁওয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন। সমু চৌধুরী সুস্থ আছেন কি না, তা জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন সেখানে উপস্থিত হন।
ইউএনও এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এক ঘণ্টার বেশি সময় অভিনেতার সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং তাঁকে সুস্থ পাওয়া যায়। তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়, পুরো ঘটনা তাঁর জবানিতে শোনা হয়। অভিনেতা মাজারভক্ত মানুষ। এ মাজারে আগেও এসেছিলেন। তাঁকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিলেও গতকাল তাঁর ভাষায় গুরুবার ও গুরুত্বপূর্ণ রাত হওয়ায় তিনি মাজারেই অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবির কারণে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়।’
সমু চৌধুরীর বয়স ৬২ বছর। তিনি ১৯৯০ সালে একটি নাটকের মাধ্যমে অভিনয়জীবনে প্রবেশ করেন। এ ছাড়া উদীচীর সঙ্গে ছিলেন ১২ বছর। ব্যক্তিজীবনে তিনি অবিবাহিত। তাঁর বাড়ি যশোর। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শুধু মা জীবিত আছেন। সমু চৌধুরী যশোরে থাকেন বলেও জানান ইউএনও।
আরও পড়ুনমাজার থেকে সরতে চাইছেন না সমু চৌধুরী১৮ ঘণ্টা আগে