নরসিংদীতে দুই বান্ধবীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
Published: 8th, April 2025 GMT
নরসিংদীর রায়পুরায় দুই বান্ধবীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার চরআড়ালিয়া ইউনিয়নে ঘটনাটি ঘটে। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে বিষয়টি জানাজানি হয়। ভুক্তভোগীরা ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
অভিযুক্তরা হলেন- চরআড়ালিয়া এলাকার সেন্টু মিয়ার ছেলে কাইয়ুম, শাহ মিয়ার ছেলে মুন্না, কাদির মিয়ার ছেলে সাইফুল মিয়া, খলিল মিয়ার ছেলে রমজান মিয়াসহ আটজন।
স্বজন ও এলাকাবাসী জানান, গতকাল বিকেলে কাইয়ুম (২১) ও মুন্না (২২) নামে দুই যুবকের সঙ্গে নৌকায় ঘুরতে যায় দুই বান্ধবী। সন্ধ্যার দিকে কৌশলে কাইয়ুম ও মুন্না নৌকা তীরে ভিড়ায় এবং দুই কিশোরীকে একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনের নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। পরে কাইয়ুম ও মুন্না তাদের আরো ছয় বন্ধুকে ডেকে এনে ভয়ভীতি দেখিয়ে দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে চলে যায়। কিশোরীরা বাড়ি ফিরে পরিবারকে বিষয়টি জানায়।
আরো পড়ুন:
ফরিদপুরে মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে বাবা আটক
শিশু ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি
ভুক্তভোগী এক কিশোরীর বাবা বলেন, “আমরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছে বিচার চেয়েছি, চেয়ারম্যান বলেছেন বিচার করে দেবেন। আমরা বিচারের অপেক্ষায় আছি। থানা পুলিশের ঝামেলায় যেতে চাই না। মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করছি।”
অপর ভুক্তভোগীর বাবা বলেন, “রাতে বাড়ি ফিরে ঘটনা শুনেই আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। অভিযুক্তরা প্রভাবশালী। আমরা তাদের সঙ্গে পারব না। মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এলাকার চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দিয়েছি। চেয়ারম্যান যে বিচার করবে আমি তাই মেনে নেব।”
তিনি আরো বলেন, “আমি গরিব মানুষ, থানা পুলিশ করার মতো সমর্থ্য আমার নেই।”
চরআড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাসুদা জামান সরকার বলেন, “তারা আমাকে ঘটনাটি জানিয়েছে। আমি ঘটনা শুনেছি। সব বিষয় চিন্তা করে আমি তদন্তের জন্য লোক পাঠিয়েছি। ঘটনার বিস্তারিত জেনে বিষয়টি নিয়ে এলাকার গণ্যমান্যদের নিয়ে বিচারে বসব।”
ধর্ষণের ঘটনা গ্রাম আদালতে মীমাংসা যোগ্য কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান। বিচারে বিলম্ব হলে ধর্ষণের আলামত নষ্ট হয়ে যাবে, তখন বিচার কীভাবে করবেন এ প্রশ্নের জবাবেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।
রায়পুরা থানার ওসি আদিল মাহমুদ বলেন, “ধর্ষণের ঘটনা সম্পর্কে আমি অবগত নই। তাছাড়া কেউ থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/হৃদয়/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’