নাসার সঙ্গে আর্টেমিস চুক্তি স্বাক্ষর করল বাংলাদেশ
Published: 8th, April 2025 GMT
বাংলাদেশ এখন ‘আর্টেমিস অ্যাকর্ডস’-এর ৫৪তম স্বাক্ষরকারী দেশ, যা যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণ ও বেসামরিক মহাকাশ অনুসন্ধানকে উৎসাহিত করার একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ।
২০২০ সালের অক্টোবরে প্রতিষ্ঠিত আর্টেমিস অ্যাকর্ডস চুক্তিগুলো হলো অ-বন্ধনযোগ্য বহুপক্ষীয় ব্যবস্থার একটি সিরিজ; যার লক্ষ্য হলো মহাকাশ অনুসন্ধানে শান্তিপূর্ণ, স্বচ্ছ ও টেকসই সহযোগিতা।
আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের উপস্থিতিতে প্রতিরক্ষাসচিব মো.
এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ বৈশ্বিক মহাকাশ গবেষণা, মহাকাশ ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং মহাকাশ সম্পদের দায়িত্বশীল ব্যবহারে নিজেকে সম্পৃক্ত করল; যা দেশের জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
চৌধুরী আশিক বলেন, ‘এই চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মহাকাশ গবেষণায় নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ তার মহাকাশ গবেষণা কার্যক্রমকে আরও বেগবান করতে পারবে।’
প্রতিরক্ষাসচিব আশরাফ উদ্দিন বলেন, আর্টেমিস অ্যাকর্ডস মূলত আউটার স্পেস ট্রিটি রেজিস্ট্রেশন কনভেনশন এবং অ্যাস্ট্রোনট রেসকিউ এগ্রিমেন্টের নীতিগুলো অনুসরণ করে তৈরি একটি নির্দেশিকা; যা মহাকাশের শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও টেকসই ব্যবহারে সহায়ক। তিনি বলেন, ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ স্পারসো গঠন করে মহাকাশবিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে উৎসাহিত করতে কাজ শুরু করে এবং তখন থেকেই আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন মেনে চলেছে।
আর্টেমিস চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো মহাকাশে স্বচ্ছ ও দায়িত্বশীল কার্যক্রম পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দেয় বলে জানিয়েছেন প্রতিরক্ষাসচিব।
২০২৫ সালের ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত আর্টেমিস চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, অস্ট্রেলিয়া ও বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশ, লাতিন আমেরিকাসহ ৫৩টি দেশ স্বাক্ষর করেছে। বাংলাদেশ এই চুক্তিতে যুক্ত হয়ে একটি সম্মানজনক আন্তর্জাতিক মহাকাশ জোটের অংশ হলো।
আশরাফ উদ্দিন বলেন, এই চুক্তি প্রযুক্তি স্থানান্তর, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণার নতুন দরজা খুলে দেবে। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে নাসা ও স্পারসোর মধ্যে সহযোগিতার সুযোগ তৈরি হবে এবং বাংলাদেশের মহাকাশ কার্যক্রম জোরদার হবে।
আশরাফ উদ্দিন আরও বলেন, নাসা ও অন্যান্য মহাকাশ সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করলে বাংলাদেশ উন্নত স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ও বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রবেশাধিকার পাবে, যা বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট প্রোগ্রাম ও ভবিষ্যৎ মহাকাশ উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে।
এ ছাড়া বাংলাদেশের স্পারসোর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো পৃথিবী পর্যবেক্ষণ ও জলবায়ু মনিটরিং স্যাটেলাইট তৈরি করতে প্রযুক্তিগত সহায়তা পেতে পারে, যা বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সহায়ক হবে বলে প্রতিরক্ষাসচিব উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও বিজ্ঞানীরা বৈশ্বিক মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ গবেষণায় অংশ নিতে পারবেন আর শিক্ষার্থীরা নাসার প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম, বৃত্তি ও এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম থেকে উপকৃত হতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা উইংয়ের মহাপরিচালক ও চিফ অব প্রটোকল এ এফ এম জাহিদ-উল-ইসলাম এবং বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন সংস্থার (স্পারসো) চেয়ারম্যান মো. রাশেদুল ইসলাম।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আর ট ম স সহয গ ত স প রস
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলায় তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো দুই পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ২টার কিছু পর এক পারিবারিক বিরোধের তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। খবর বিবিসির।
আরো পড়ুন:
শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪
ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ ও থানায় হামলা, ভাঙচুর-আগুন
পেনসিলভানিয়া স্টেট পুলিশের কমিশনার কর্নেল ক্রিস্টোফার প্যারিস জানান, অভিযুক্ত বন্দুকধারী পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।
গুলির ঘটনার পর ইয়র্ক কাউন্টির নর্থ কোডোরাস টাউনশিপের স্প্রিং গ্রোভ এলাকার একটি স্কুল জেলা সাময়িকভাবে ‘শেল্টার ইন প্লেস’ ঘোষণা করে। তবে পরে জানানো হয়, স্কুল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জনসাধারণের জন্য বর্তমানে কোনো সক্রিয় হুমকি নেই। এ ঘটনা ঘটে ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিমি) পূর্বে অবস্থিত ইয়র্ক কাউন্টির এক গ্রামীণ এলাকায়।
তারা বলছে, আগের দিন শুরু হওয়া একটি তদন্তের অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে তদন্ত চলমান থাকায় বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।
পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জোশ শাপিরো বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, “আমরা তিনজন মহামূল্যবান প্রাণ হারালাম, যারা এই দেশকে সেবা দিয়েছেন। এই ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সমাজ হিসেবে আমাদের আরো ভালো করতে হবে।”
নিহত তিন কর্মকর্তার সম্মানে গভর্নর শাপিরো রাজ্যের সব সরকারি ভবন ও স্থাপনায় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেন।
ঢাকা/ইভা