জামিনে মুক্তির পর জেল গেটে হামলার শিকার সাবেক এমপি আব্দুল আজিজ
Published: 9th, April 2025 GMT
সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল আজিজ জামিনে মুক্তির পর জেলে গেটে হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাত সোয়া ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, একদল ব্যক্তি তাকে জোরপূর্বক গাড়িতে তোলার চেষ্টা করেন। সে সময় সিরাজগঞ্জের সেনা ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে হামলাকারীদের হাত থেকে রক্ষা করেন। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ২৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে একই দৃশ্য দেখা গেছে।
আরো পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে ২ পক্ষের সংঘর্ষে নিহতের জেরে ১৫ বাড়িতে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
কক্সবাজারে রেস্টুরেন্টে হামলার ঘটনায় মামলা, আসামি ৩০০
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল আজিজ ছাড়া পেয়েছেন, এমন খবরে একদল লোক সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারের সামনে জড়ো হন। আবদুল আজিজ জেলা কারাগার থেকে বের হলে সবাই তাকে ঘিরে ধরেন। একপর্যায়ে টেনে-হিঁচড়ে হেনস্তা ও মারধর করা হয়। জোরপূর্বক গাড়িতে তোলার চেষ্টা করা হয়।
সিরাজগঞ্জ জেলা কারা সুপার কামরুল হুদা বলেন, ‘‘দুদিন আগে হাইকোর্ট থেকে আবদুল আজিজের জামিন মঞ্জুর হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে সিরাজগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে সেই আদেশ আমাদের কাছে আসে। আদেশ হাতে পাওয়ার পর সেটি পরীক্ষা–নিরীক্ষা করতে কিছুটা সময় লাগে। রাত ৮টার দিকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’’
সিরাজগঞ্জ আর্মি ক্যাম্প অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুনায়েদ বলেন, ‘‘বিষয়টি সম্পর্কে সেনাবাহিনী অবগত ছিল না। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি দল দ্রুত তাকে (সাবেক সংসদ সদস্য) পুলিশের কাছে সোপর্দ করতে উদ্যোগ নেয়।’’
সিরাজগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.
উল্লেখ্য, গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বাংলা মোটর এলাকার পদ্মা জেনারেল হাসপাতাল থেকে ডা. আজিজকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তাকে ২০২৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তাড়াশ থানায় ইউনিয়ন বিএনপির এক নেতার দায়ের করা ‘হত্যাচেষ্টা’ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ মামলায় আজিজসহ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ৯৯ জন নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
ঢাকা/রাসেল/রাজীব
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর স র জগঞ জ দ ল আজ জ সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস