বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, “দেশের বেশিরভাগ ইসলামী ব্যাংক বর্তমানে সংকটের মধ্যে আছে। ইসলামী ব্যাংকিং খাত সম্পূর্ণভাবে পুনর্গঠন করা হবে। আমরা অনেকগুলো ইসলামী ব্যাংককে একীভূত করতে যাচ্ছি। আশা করি, দুটি বড় ইসলামী ব্যাংক তৈরি করা হবে।”

বুধবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) আয়োজিত দুই দিনব্যাপী দশম বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলন-২০২৫ উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি।

গভর্নর বলেন, দেশে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের জন্য সঠিক নিয়ন্ত্রক কাঠামোর অভাব আছে। এ বিষয়ে আইনি ফাঁক রয়ে গেছে। আমরা এটি নিয়েও কাজ করছি। ইসলামী ব্যাংকগুলোকে একদম নতুন রূপ দেওয়া হবে। একটি বড় ও অনেকগুলো ছোট ছোট ইসলামী ব্যাংক আছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই সমস্যাগ্রস্ত। ইসলামী ব্যাংকের জন্য আইন ও তদারকির ব্যবস্থা চালু করা হবে। আন্তর্জাতিক উত্তম রীতি-নীতি অনুসরণ করে এসব করা হবে।

পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, যারা অর্থ পাচার করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যেন ভবিষ্যতে অন্যরা একই কাজ করতে নিরুৎসাহিত হয়। পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতায় চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসনের বিষয়ে আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমরা জানি, ব্যাংকিং খাতে অনেক ধরনের হস্তক্ষেপ ও দ্বৈত শাসনব্যবস্থা রয়েছে। এর অবসান হওয়া দরকার। সমগ্র ব্যাংকিং ব্যবস্থার জন্য একটি সমন্বিত নিয়ন্ত্রক কাঠামো প্রয়োজন। আমরা সেই লক্ষ্যেও কাজ করছি। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে শক্তিশালী করা হচ্ছে। স্বায়ত্তশাসন ও তদারকি বাড়াতে কাজ চলছে, যাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কার্যকর হয়ে ওঠে। ব্যাংক খাতে যেসব সমস্যা হচ্ছে বা হতে পারে, তা যেন আগেই জানা যায়, সে লক্ষ্যে কাজ হচ্ছে।

ঢাকা/এনএফ/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস থ ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ভুল ফলাফল

প্রতিবছর পাবলিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরই ভুল রেজাল্ট নিয়ে অসংখ্য অভিযোগ ওঠে। এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। শত শত শিক্ষার্থী প্রতিবছর জানায়, তাদের প্রাপ্ত নম্বর সঠিক নয়, জিপিএ মেলে না, এমনকি ভালো পরীক্ষা দেওয়ার পরও ফলাফল ‘ফেল’ দেখাচ্ছে। এই ভুলের চরম খেসারত দিতে হয় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। কেউ ভর্তি থেকে বঞ্চিত হয়, কেউ মানসিক ভারসাম্য হারায়, কেউ কেউ আত্মহননের পথ বেছে নেয়। এটি শুধু ভয়াবহ নয়, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য চরম লজ্জারও।

অভিযোগ বারবার উঠলেও শিক্ষা বোর্ডগুলোর মধ্যে কোনো দায় স্বীকার বা জবাবদিহির প্রবণতা দেখা যায় না। সবকিছু চাপানো হয় ‘টেকনিক্যাল সমস্যা’ কিংবা ‘সিস্টেম ত্রুটি’র ওপর। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই সিস্টেম ত্রুটি কেন বারবার হয়? কেন এখনো আধুনিক ও নির্ভরযোগ্য সফটওয়্যার এবং যথাযথ যাচাই-বাছাই পদ্ধতি গড়ে তোলা হয়নি?

একটি শিক্ষার্থীর জীবনে ফলাফল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি নম্বর কম বা বেশি হওয়া মানে তার স্বপ্নভঙ্গ। বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া অঞ্চলগুলোর শিক্ষার্থীরা সীমিত সুযোগ নিয়ে ভবিষ্যৎ গড়ার চেষ্টা করে। ভুল রেজাল্ট তাদের সেই প্রচেষ্টাকে ধ্বংস করে দেয়।

এই সংকট নিরসনে শিক্ষা বোর্ডের উচিত ফল প্রকাশের আগে কঠোরভাবে যাচাই-বাছাই করা, রিভিউ বা পুনর্নিরীক্ষার ফি ও সময়সীমা হ্রাস করে তা সহজলভ্য করা এবং যঁারা এ ধরনের ভুল করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

স্বপন বিশ্বাস

স্থানীয় সাংবাদিক ও প্রধান শিক্ষক

শালিখা, মাগুরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ