শ্বাসরোধে স্ত্রীকে হত্যা, কার্টনবন্দি করে লাশ সড়কে ফেলেন স্বামী
Published: 9th, April 2025 GMT
মানিকগঞ্জে বিউটি গোস্বামী (৩৯) নামের এক নারী তার স্বামীর হাতে খুন হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ বিষয়ে গ্রেপ্তার অলোক রঞ্জন গোস্বামী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন, দাম্পত্য কলহের জেরে স্ত্রী বিউটি গোস্বামীকে নিজেই শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে এসির কার্টনে ভরে ভাড়া করা প্রাইভেট কারে ঢাকার উত্তরা থেকে মানিকগঞ্জের মিতরা-বরুন্ডি আঞ্চলিক সড়কে এগারোশ্রী এলাকায় ফেলে দেন তিনি।’
ঘটনার চারদিন পর ফরিদপুর থেকে মানিকগঞ্জ ডিবি পুলিশের একটি টিম স্ত্রী হত্যার অভিযোগে অলোক গোস্বামীকে গ্রেপ্তার করে। আদালতে স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার রাতে মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জানা যায়, গত শুক্রবার মিতরা-বরুন্ডি আঞ্চলিক সড়কে এগারোশ্রী এলাকা থেকে এয়ার কন্ডিশনার (এসি) কার্টন থেকে এক নারীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের ছবি দেখে পরিবারের লোকজন নিশ্চিত করেন, উদ্ধার হওয়া মরদেহটি বিউটি গোস্বামীর। দুই সন্তানের জননী বিউটি গোস্বামী লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার নিহারঞ্জন গোস্বামীর মেয়ে। স্বামী অলোক রঞ্জনের সঙ্গে ঢাকার উত্তরায় বসবাস করতেন তিনি। অলোক রঞ্জন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। তিনি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার তরা গ্রামের মৃত প্রদীপ কুমার গোস্বামীর ছেলে। বিউটির লাশ উদ্ধারের পর দিন নিহতের বাবা নিহারঞ্জন গোস্বামী বাদী হয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলা হওয়ার পর ডিবিপুলিশ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে মাঠে নামে। ৭ এপ্রিল রাতে ফরিদপুর থেকে বিউটির স্বামী অলোক রঞ্জন গোস্বামীকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অলোক রঞ্জন জানিয়েছেন, স্ত্রী বিউটির সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না। অলোকের দাবি, বেশির ভাগ সময় ফেসবুক, অনলাইন বিজনেস ও লাইভ ভিডিও করে সময় কাটাতেন তার স্ত্রী বিউটি। এ কারণে দুই সন্তানকেও সময় দিতে পারতেন না। কিছু বললেই মা-বাবা তুলে গালাগালি করতেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার দিন তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে বিউটি গোস্বামী রান্না করতে গেলে পেছন থেকে মুখ ও গলা চেপে ধরেন অলোক। পরে ছেড়ে দিলে মেঝেতে পড়ে মাথায় আঘাত পান ও প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় তার। পরে এসির কার্টনে ভরে রশি দিয়ে তা বাধা হয়। গ্রামের আত্মীয়-স্বজনদের ঈদ উপহার পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে এক ব্যক্তির সহায়তায় একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করা হয়। প্রাইভেট কারটির পেছনের সিটে কার্টনটি বসিয়ে রাজধানীর উত্তরা থেকে মানিকগঞ্জের মিতরা এলাকায় আসেন তারা। সহযোগীর মাধ্যমে কৌশলে প্রাইভেট কারচালককে সামনে ডেকে নেওয়া হয়। এর পর মানিকগঞ্জের মিতরা-বরুন্ডি আঞ্চলিক সড়কের এগারোশ্রী এলাকায় স্ত্রীর মরদেহটি ফেলে দেন অলোক। শেষে ওই প্রাইভেট কারেই পালিয়ে যান তিনি ও সহযোগী।
গ্রেপ্তার অলোক রঞ্জন গোস্বামীকে মঙ্গলবার আদালতে পাঠায় হয়। পরে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম ন কগঞ জ স ত র ক হত য ম ন কগঞ জ র
এছাড়াও পড়ুন:
দৃষ্টিহীন বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গেপ্তার ২
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে নুরুল আমিন সর্দার (৭০) নামে দৃষ্টিহীন এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। শনিবার (১৪ জুন) রাতে পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
রবিবার (১৫ জুন) দুপুরে র্যাব-১১ নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ডু স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ এলাকার রুহুল আমিনের ছেলে মাকছুদ (২৪) ও একই এলাকার মনিরের ছেলে আলমগীর (২৩)।
আরো পড়ুন:
মুক্তিপণ না পেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশিকে হত্যা
বগুড়ায় বাল্য বিয়ে দিতে না চাওয়ায় বাবাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
মামলার বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, গত ৭ এপ্রিল রাতে পূর্বশত্রুতার জেরে মাকছুদ ও আলমগীর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দৃষ্টিহীন বৃদ্ধ নুরুল আমিনের ছেলে বজলুর রহমান ভুলুকে (৩০) মারধর করেন। ভুক্তভোগীর চিৎকার শুনে তার বাবা নুরুল আমিন বাড়ি থেকে বেরিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এসময় তাকেও মারধর করা হয়। আহতদের জেলা সদর হাসপাতালে নিলে নুরুল আমিনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
এ ঘটনায় নিহতের ছেলে বজলুর রহমান বাদী হয়ে গত ১০ এপ্রিল কমলনগর থানায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে ও নাম না জানা ১৫-২০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এরপর থেকেই আসামিদের ধরতে অভিযান শুরু করে র্যাব।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল শনিবার রাতে নোয়াখালী জেলার কবিরহাট থানাধীন ঘোষবাদ ইউনিয়নের রামবল্লভপুর গ্রাম থেকে মামলার এজাহার নামীয় ৪ নম্বর আসামি মাকছুদকে ও কোম্পানীগঞ্জ থানাধীন বসুরহাট পৌরসভার সামনে থেকে ৬ নম্বর আসামি আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কমলনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ