যুবদল নেতার মাদক সেবনের ভিডিও ধারণের পর টাকা দাবি
Published: 9th, April 2025 GMT
গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়িতে যুবদলের এক নেতার মাদক সেবনের দৃশ্য কৌশলে ভিডিও ধারণ করে ভাইরাল করেছেন অন্য এক নেতা। ভাইরাল হওয়ার আগে বিষয়টি ছড়িয়ে না দেওয়া ও মীমাংসার জন্য ১০ লাখ টাকা দাবি করেন আরেক যুবদল নেতা। দুই নেতার অডিও-ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর দল ও দলের বাইরে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতিবেদকের হাতে আসা ৪৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, সাদা শার্ট পরা ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব মিয়া কোনো এক কক্ষে বসে মাদক সেবন করছেন। অপরদিক থেকে রাজিব মিয়ার ইয়াবা সেবনের ভিডিও ধারণ করছেন অপর একজন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাদক সেবনের দৃশ্যটি ভিডিওটি করেছেন ওই ওয়ার্ডের যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমরুল সরকার। পরে সেটি যুবদলের সদস্য সচিব আজিজুলের কাছে দেয়। এরপর সেটি মীমাংসা করতে বলা হলে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন আজিজুল। দাবি করা টাকা দিতে অস্বীকার করলে সেটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
যুবদল নেতা ইমরুল ও আজিজুলের কথপোকথন একটি অডিও প্রতিবেদকের হাতে আসে। সেখানে ইমরুলকে মাদকসেবন বিষয়টি আজিজুলকে মীমাংসা করতে বলে। তবে সেটি মীমাংসার জন্য ১০ লাখ টাকা লাগবে বলতে শোনা যায়। তখন ইমরুল বলেন- যে কোন মূল্যে সেটি সমাধান করবেন।
ইমরুল সরকার বলেন, “ভিডিও কে ভাইরাল করেছে আমি বলতে পারব না। আমি ওই ভিডিও ভাইরাল করিনি। কীভাবে ভাইরাল হয়েছে সেটিও জানি না।” টাকা কেনো চাইছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
টাকা দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে কোনাবাড়ী থানা যুবদলের সদস্য সচিব আজিজুল ইসলাম বলেন, “আমি কোন টাকা দাবি চাইনি। অডিও-ভিডিও যদি পেয়ে থাকেন সেটা ফেইক। তাছাড়া রাজিব একজন প্রফেশনাল মাদকসেবী এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখেন।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুবদল নেতা রাজিব মিয়া বলেন, “আমি ১৫ বছর ধরে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। অসংখ্য রাজনৈতিক মামলা রয়েছে, জেলও খেটেছি একাধিকবার। ৫ তারিখের পর আজিজুলসহ কয়েকজন চাঁদাবাজি করেছে। আমি প্রতিবাদ করায় তারা আমার বিরুদ্ধে লেগেছে। কিছুদিন আগে ছিল আমার একটি পারিবারিক সমস্যা চলছিল এমন সময় ইমরুল আমাকে ফোন দিয়ে তার অফিসে নিয়ে যায়। তারা মাদক সেবন করছিল, তারা কৌশলে তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে। এই সুযোগে গোপনে আমার ভিডিও করে। এরপর সেই ভিডিও দেখে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকার করায় ভিডিও ভাইরাল করে দিয়েছে।”
ঢাকা/রেজাউল/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ১০ ল খ ট ক য বদল ন ত য বদল র আজ জ ল স বন র ইমর ল
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে
মাদারীপুরে মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের প্রেমের টানে চীনের নাগরিক শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসেছেন। বিয়ে করে বর্তমানে মাদারীপুরে শশুরবাড়িতে আছেন। ভিনদেশি যুবককে দেখার জন্য ওই বাড়িতে মানুষ ভিড় করছেন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষেরচর এলাকার বাসিন্দা সাইদুল হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৯)। সুমাইয়া মাদারীপুর শহরের সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তারা তিন বোন। সুমাইয়া বড়। মেঝ সাদিয়া আক্তার (১২) মাদ্রাসায় পড়ে। ছোট বোন আরিফা (৬)।
চীনের সাংহাই শহরের সি জিং নিং এর ছেলে শি তিয়ান জিং (২৬)। তারা দুই ভাই। বড় শি তিয়ান জিং। তার চীনের সাংহাই শহরে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে।
আরো পড়ুন:
‘একজন ছেলে মানুষ আমাদের পরিবারের বৌ হয়েছিল’
এক বিয়ের বরযাত্রী খেয়ে ফেলল অন্য বিয়ের খাবার
শি তিয়ান জিংকে টিকটকে দেখেন সুমাইয়া। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা আদান-প্রদান হয়। উভয়ই গুগলের মাধ্যমে লেখা অনুবাদ করে মনের ভাব আদান- প্রদান করেন। এক পর্যায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। মাত্র চার মাসের প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ২৪ জুলাই চীন থেকে বাংলাদেশ আসেন শি তিয়ান জিং। এরপর এক দিন ঢাকার একটি হোটেলে থাকেন। ২৬ জুলাই মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেচরের সুমাইয়ার বাড়িতে আসেন।
সুমাইয়া, সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম ও তার দুইজন আত্মীয় মিলে ঢাকা থেকে শি তিয়ান জিংকে মাদারীপুরে নিয়ে আসেন। বাংলা ভাষায় কথা বলতে না পারায় মোবাইলে অনুবাদ করে কথা আদান-প্রদান করেন শি তিয়ান জিং। এরপর ২৭ জুলাই তারা বিয়ে করেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সুমাইয়ার বাড়িতে মানুষ ভিড় করতে থাকে।
সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘‘টিকটক দেখে আমি ওর ভক্ত হই। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা হয়। পরে দুজনেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। মাত্র চার মাসের প্রেমের সূত্র ধরে চীন থেকে বাংলাদেশ আমার কাছে চলে আসবে, তা কখনো ভাবিনি। ও প্লেনে উঠার সময় বলেছে, আমি বাংলাদেশে আসছি। আমি বিশ্বাস করিনি। যখন ইন্ডিয়া এসে আমাকে জানায়, তখন বিশ্বাস করেছি।’’
সুমাইয়া আক্তার আরো বলেন, ‘‘ও ওর মা-বাবাকে আমার কথা বলেছে। তারাও মুসলিম। ওর মা বলেছেন, আমাকে বিয়ে করে চীনে নিয়ে যেতে। তাই শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করেছেন।’’
সুমাইয়া বলেন, ‘‘এরই মধ্যে পাসপোর্ট করতে দিয়েছি। শি তিয়ান জিং এক মাস বাংলাদেশে থাকবে। এর মধ্যে আমার কাগজপত্র রেডি করা হবে। তারপর ও আমাকে চীনে নিয়ে যাবে। আমিও চীনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’
শি তিয়ান জিং বলেন, ‘‘বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে। তবে অনেক গরম। আর অনেক মানুষ আমাকে দেখতে আসে। তাই আমার ভয় লাগে। আমি ভালোবেসে চীন থেকে এখানে এসেছি। সুমাইয়াকে বিয়ে করেছি। এখন ওর কাগজপত্র রেডি করে চীনে নিয়ে যাবো। আমার পরিবার সব জানে। তারাই সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যেতে বলেছেন।’’
সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘শি তিয়ান জিং আমাদের এখানে আছে। ও খুব ভালো ছেলে। খুবই অমায়িক। কোনো অহংকার নেই। এক মাস থাকবে এবং আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে। আমরা খুব খুশি।’’
পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুবেল হাওলাদার জানান, প্রথমে আদালতের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। পরে সামাজিকভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। চীনে ওই ছেলের ব্যবসা আছে। কিছু দিনের মধ্যে সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যাবে।
ঢাকা/বকুল