কয়েক দিন পরই নববর্ষ। নববর্ষ মানেই বৈশাখী মেলা। এই মেলা ঘিরে বাঁশির কদর একটু বেশিই। মেলায় বাঁশির জোগান দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। এমন ব্যস্ততা দেখা গেছে বাঁশির গ্রাম শ্রীমুদ্দিতে।
কুমিল্লার হোমনা উপজেলা সদর থেকে ২ কিলোমিটার দূরে তিতাস নদীর তীরে শ্রীমুদ্দি গ্রাম। এই গ্রামে তৈরি হয় হাতে তৈরি বাহারি রকমের বাঁশের বাঁশি। এখানকার বাঁশি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে। গ্রামের প্রায় সবাই বাঁশি তৈরি করে থাকেন। এ কারণে শ্রীমুদ্দি বাঁশির গ্রাম নামে পরিচিত।
সরেজমিন শ্রীমদ্দি গ্রাম ঘুরে চোখে পড়েনি বেকার কোনো তরুণ-তরুণী দুঃখময় চেহারা। গ্রামের প্রায় সব বাড়ি দোচালা ঘরের। প্রতিটি বাড়ির আঙিনা ও অলিগলিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বিভিন্ন রকমের নকশা করা বাঁশি। নারী-পুরুষ-শিশুসহ সব বয়সের মানুষই বাঁশিশিল্পের বিভিন্ন নকশা তৈরি, ছিদ্র করা, ধোয়া-শুকানো ও রং করার কাজে নিয়োজিত। প্রত্যেকে নিজ নিজ কাজের ফাঁকে সময় অনুযায়ী বাঁশি তৈরি করছেন। বাঁশের বাঁশি তৈরি করে ৪০-৫০টি পরিবার জীবিকা নির্বাহ করছে। এখান থেকে বছরে প্রায় কোটি টাকার বাঁশি বিক্রি হয়। ময়মনসিংহ, গৌরীপুর, চট্টগ্রাম থেকে সংগ্রহ করা হয় বাঁশি তৈরির কাঁচামাল মুলি বাঁশ। প্রতিটি বাঁশির খুচরা মূল্য সর্বনিম্ন ৫ টাকা থেকে শুরু করে ১০, ১৫, ১৮, ৩০, ৫০, ৩০০, ৫০০, ১০০০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।
শ্রীমদ্দি গ্রামে ঢুকতেই চোখে পড়ল একজন বাড়ির উঠানে বসে বাঁশের বাঁশি তৈরিতে ব্যস্ত। তাঁর কাছেই এলাকার বাঁশি শিল্প সম্পর্কে পাওয়া গেল নানা তথ্য। জজ মিয়া নামে এই কারিগর জানান, দৈনিক ১০০ বাঁশি তৈরি করেন তিনি। তাদের গ্রামে বাঁশি তৈরির কাজ কবে শুরু হয়েছে তা সঠিকভাবে বলতে না পারলেও তিনি জানান, তাঁর দাদা-বড়দাদার আমল থেকেই এই বাঁশি তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। তাঁর বয়স এখন ৪৫ বছর। ৩০ বছর ধরে বাঁশের বাঁশি তৈরি করেন। তা ছাড়া এই কাজ খুবই সহজ। ফাল্গুন থেকে বৈশাখ মাস পর্যন্ত অধিক বাঁশি তৈরি ও বিক্রি হলেও শ্রীমদ্দি গ্রামের শিল্পীরা সারাবছরই বাঁশি তৈরি করেন। দেশের বিভিন্ন এলাকার লোকজন এসে এখান থেকে পাইকারি দরে বাঁশি কিনে নিয়ে যান।
কথা হয় বৃদ্ধ কারিগর আবুল কাশেমের সঙ্গে। দুঃখ করে তিনি জানান, ১০০ থেকে ১৫০ বছর ধরে চলছে বাঁশি তৈরির কাজ। পূর্বসূরিদের দেখানো পথে এখনও অন্তত ৪০-৪৫টি পরিবার বাংলার ঐতিহ্য লালন করতে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে বাঁশি তৈরির কাজ। তিনি প্রায় ৪৫ বছর ধরে বাঁশি তৈরি করছেন।
কারিগর আবুল কাশেম বলেন, ‘আমরা প্রায় ১৫ ধরনের বাঁশি তৈরি করে থাকি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে– তোতা (মুখ) বাঁশি, মোহন বাঁশি, ফেন্সি বাঁশি, খানদানি বাঁশি, আড় বাঁশি (ক্লাসিক্যাল সুরের বাঁশি), বীণ বাঁশি, বেলুন বাঁশি, পাখি বাঁশি।’ তাঁর দাবি, খানদানি বাঁশির মূল্য সব থেকে বেশি। প্রতিটি বাঁশির মূল্য ১০ হাজার টাকা। বিদেশে বাঁশির কদর অনেক বেশি। দেশের বংশীবাদকদের কাছেও খানদানি বাঁশির কদর অনেক বেশি। তবে লম্বা, মোটা নিখুঁত কাজের ওপর বাঁশির দাম নির্ভর করে। কিন্তু বাচ্চাদের মুখ বাঁশি তৈরি ও বিক্রি হয় বেশি। তিনি বছরে ১০-১৫ লাখ টাকার বাঁশি বিক্রি করে থাকেন। খানদানি বাঁশি নিতে হলে আগে অর্ডার করতে হয়।
বাঁশি তৈরি করে থাকেন শ্রীমুদ্দি গ্রামের যতীন্দ্র বিশ্বাস ও তাঁর স্ত্রী রিনা বিশ্বাসও। তারা জানান, তাদের তৈরি বাঁশি বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কাতার, ওমান, লন্ডন, জাপান, কানাডা, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। রিনা বিশ্বাস তিন সন্তানের মা, সারাক্ষণ গৃহকর্ম ও বাঁশি তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকেন।
তারা জানান, বৈশাখী মেলা ছাড়াও হোমনার মিরাশের মেলা, শ্রীমদ্দি কালীবাড়ির মেলা, কচুয়ার সাচারের রথমেলা, ধামরাইয়ের রথমেলা, মতলবের বেলতলীর লেংটার মেলা, ব্রাক্ষণবাড়িয়া খরমপুরের মেলা, গণি শাহের মেলা, রাহাত আলী শাহের মেলা, চট্টগ্রামের জব্বারের বলীখেলা, নাঙ্গলবন্দের অষ্টমী স্নান, সাতক্ষীরার পূজার মেলা, কুষ্টিয়ার লালন শাহ মেলায় অনেক বাঁশি বিক্রি হয়। এ ছাড়া প্রায় সারা বছরই দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, শহর, বন্দর, হাট-বাজারে বাঁশি বিক্রি করে থাকেন তারা। বাঁশিশিল্পীদের দাবি সরকারি সহযোগিতা বিদেশে বাঁশিশিল্পের সুনাম অর্জন করতে পারবেন।
হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেলালিকা চাকমা সমকালকে জানান, এশিয়া মহাদেশে শ্রীমদ্দি গ্রামের বাঁশিশিল্পের ব্যাপক সুনাম রয়েছে। তাদের যে কোনো সহায়তা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। শিল্পটি ধরে রাখতে যদি ক্ষুদ্রঋণের প্রযোজন হয়, তারা আবেদন করলে ব্যবস্থা করা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হ মন শ র মদ দ খ নদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
শব্দগুলো সাজাও, বাক্য বানাও
ইংরেজি: রি–অ্যারেঞ্জ
প্রাথমিক বিদ্যালয়–শিক্ষার্থী মেধা যাচাই পরীক্ষায় ইংরেজি ৮ নম্বর প্রশ্নটি রি–অ্যারেঞ্জের ওপর। নম্বর থাকবে ৬।
# Rearrange words in the correct order to make meaningful sentences
Set-1
a. poetry/ time/ in/ my/ free/ father/ his/ writes.
b. I/ can/ questions/ ask/ some/ you?
c. us/ let/ for/ a/ go/ picnic.
d. should/ eat/ you/ chocolate/ not/ of/ lot/ a.
e. beautiful/ girl/ the/ how/ is!
Ans:
a. My father writes poetry in his free time.
b. Can I ask you some questions?
c. Let us go for a picnic.
d. You should not eat a lot of chocolate.
e. How beautiful the girl is!
আরও পড়ুনসবুজ উদ্ভিদ থেকে খাদ্যশৃঙ্খল শুরু১০ ডিসেম্বর ২০২৫Set-2
a. hare/ for/ slept/ hour/ an/ the.
b. walk/ you/ can’t/ faster?
c. believe/ his/ hare/ the/ couldn’t/ eyes.
d. too/ for/ play/ don’t long.
e. steady/ race/ the/ wins/ slow/ but!
Ans:
a. The hare slept for an hour.
b. Can’t you walk faster?
c. The hare couldn’t believe his eyes.
d. Don’t play for too long.
e. Slow but steady wins the race!
Set-3
a. myself/ I/ introduce/ May?
b. club/ person/ the/ a/ there/ new/ is/ in/ today.
c. down/ please/ sit.
d. hour/ I/ you/ can/ in/ meet/ an.
e. Andy/ can/ when/ meet/ Tamal?
Ans:
a. May I introduce myself?
b. There is a new person in the club today.
c. Please sit down.
d. I can meet you in an hour.
e. When can Tamal meet Andy?
ইকবাল খান, প্রভাষক
বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, ঢাকা