চীনের ‘হাত মেলানোর’ প্রস্তাব প্রত্যাখান অস্ট্রেলিয়ার
Published: 10th, April 2025 GMT
মার্কিন শুল্কের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চীনের ‘হাত মেলানোর’ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে অস্ট্রেলিয়া। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) অস্ট্রেলিয়া মার্কিন শুল্ক মোকাবেলায় বেইজিংয়ের একসাথে কাজ করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, তারা তাদের বাণিজ্যকে বৈচিত্র্যময় করে তুলবে এবং তাদের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার চীনের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনবে।
অস্ট্রেলিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী রিচার্ড মার্লেস স্কাই নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “বিশ্বে চলমান যেকোনো প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে আমরা চীনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে থাকব না।” তিনি চীনা রাষ্ট্রদূতের বাণিজ্যে ‘হাত মেলানোর’ প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে এ কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
চীন বাদে সব দেশের ওপর নতুন শুল্ক স্থগিত করলেন ট্রাম্প
চীনে নার্সিং হোমে আগুন, ২০ জনের মৃত্যু
অস্ট্রেলিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা সেটি করছি না। আমরা যা করছি তা হলো অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় স্বার্থ অনুসরণ করা এবং বিশ্বজুড়ে আমাদের বাণিজ্যকে বৈচিত্র্যময় করা।”
তিনি বলেন, “অস্ট্রেলিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, ব্রিটেন এবং মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করে তার অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করবে।”
দ্য এজ পত্রিকায় একটি মতামত কলামে, অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত জিয়াও কিয়ান অস্ট্রেলিয়ার প্রতি বহুপাক্ষিক বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থা রক্ষার জন্য বেইজিংয়ের সঙ্গে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
জিয়াও বলেন, “নতুন পরিস্থিতিতে, চীন বিশ্বের পরিবর্তনের সাথে যৌথভাবে সাড়া দেওয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়া এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে হাত মিলিয়ে যেতে প্রস্তুত।”
গতকাল বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করা শুল্ক নাটকীয়ভাবে স্থগিত করেন। তবে তিনি চীনের ওপর শুল্ক আরো বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করার ঘোষণা দিয়েছেন। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ বিশ্বের দুটি বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে।
বিষয়টি অস্ট্রেলিয়ার জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে, দেশটি তার পণ্যের প্রায় এক তৃতীয়াংশ চীনে পাঠায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অস্ট্রেলিয়ার মোট পণ্য রপ্তানির ৫ শতাংশেরও কম।
অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সতর্ক করে বলেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য প্রধান অর্থনীতির মধ্যে শুল্ক এবং অন্যান্য বাণিজ্য বিধিনিষেধ নিয়ে চলমান অনিশ্চয়তা দেশটির ব্যবসায়িক বিনিয়োগ এবং গৃহস্থালি ব্যয়ের ওপর শীতল প্রভাব ফেলতে পারে।
ট্রাম্প অস্ট্রেলিয়ার ওপর একতরফা ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যা অন্যান্য দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা পারস্পরিক শুল্কের সর্বনিম্ন স্তর।
প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা মিত্র অস্ট্রেলিয়ার ওপর শুল্কের ‘কোনো যুক্তিসঙ্গত ভিত্তি নেই’। তার সরকার যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেবে না।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রস ত ব র ওপর শ
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’