হারানো, চুরি ও ছিনতাই হওয়া ১০৬ মুঠোফোন মালিকদের ফিরিয়ে দিল ডিএমপি
Published: 10th, April 2025 GMT
হারানো, চুরি ও ছিনতাই হওয়া ১০৬টি মুঠোফোন উদ্ধার করে মালিকদের বুঝিয়ে দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
আজ বৃহস্পতিবার ডিএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মুঠোফোন হারানো, চুরি ও ছিনতাই হওয়ার বিভিন্ন ঘটনায় সংশ্লিষ্ট মালিকদের করা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ধানমন্ডি থানার পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গত এক মাসে ২৮টি মুঠোফোন উদ্ধার করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, একই সময় হাজারীবাগ থানার পুলিশ হারিয়ে যাওয়া, চুরি ও ছিনতাই হওয়া ৭৮টি মুঠোফোন উদ্ধার করে মালিকদের ফিরিয়ে দেয়।
হারিয়ে যাওয়া মুঠোফোনগুলো দ্রুততম সময়ে ফিরে পেয়ে আনন্দিত মালিকেরা পুলিশের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। মুঠোফোন ফিরে পেয়ে অনেকে এ সময় আবেগপ্রবণও হয়ে পড়েন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনার কয়রা: জোয়ার ঠেকাতে বাঁধের ওপর ‘দেয়াল’ দিচ্ছে এলাকার মানুষ
খুলনার কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের রত্নাঘেরি গ্রাম। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে শাকবাড়িয়া নদী। ওপারে দাঁড়িয়ে আছে সবুজে মোড়া সুন্দরবন। নদীর ঢেউ আর জোয়ারের গর্জনে আতঙ্কে থাকেন নদীপারের মানুষ। এলাকার বাসিন্দাদের এখন একমাত্র ভরসা একফালি মাটির বাঁধ। আর সেই বাঁধের ওপর হাতে গড়া নতুন দেয়াল।
সম্প্রতি এক সকালে কাদামাখা বাঁধের ওপরের সরু পথ ধরে বাজারের ব্যাগ হাতে হেঁটে যাচ্ছিলেন অরবিন্দ কুমার। এক হাতে শার্ট গুটিয়ে কাদায় সাবধানে পা ফেলছিলেন। কাছে গিয়ে কথা বলতেই তিনি হেসে বললেন, ‘ভাই, নদী এখন আর আগের মতো শান্ত নেই। জোয়ারের পানি বাঁধ ছাপায়ে গ্রামে ঢুকতি চায়। একবার যদি ঢুকে পড়ে, ঘরবাড়ি সব ভাইসে যাবে। তাই আর কারও মুখের দিকি না চায়ি এই বাঁধের ওপর আমরা নিজেরাই দেয়াল তুলিছি।’
জোয়ারের পানি থেকে বাঁচতে এই দেয়াল রত্নাঘেরির মানুষেরা গড়েছেন। প্রায় এক কিলোমিটার বাঁধের ওপর নদীর চরের মাটি কেটে, ঝুড়ি আর কোদাল হাতে নিয়ে দেয়াল তুলেছেন গ্রামের মানুষ। শাকবাড়িয়া নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে পাথরখালী মিলনী যুব সংঘের সভাপতি অভিজিৎ মহলদার জানান, সেই দেয়াল তৈরির কথা।
অভিজিৎ বলেন, ‘এই জায়গাটা খুব নিচু। জোয়ার একটু বাড়লেই পানি বাঁধ ছাপিয়ে ঢুকে পড়ে। তাই সম্প্রতি দুই শতাধিক যুবক আর গ্রামের নারী-পুরুষ মিলে আমরা স্বেচ্ছাশ্রমে মাটি কেটেছি, বস্তা টেনেছি, বাঁধের ওপর দেয়াল তুলেছি। আমাদের গ্রামে বেশির ভাগ মানুষ দিনমজুর। একদিন কাজ না করলে চুলায় আগুন জ্বলে না। তবুও সেদিন সবাই রোজগার ফেলে কোদাল হাতে নিয়েছে। কেউ মাটি কেটেছে, কেউ বস্তায় ভরেছে, কেউ দেয়ালে বসিয়েছে। কারণ আমরা জানি, একবার বাঁধ ভাঙলে কেমন কষ্ট হয়।’
রত্নাঘেরির এই দৃশ্য আসলে কয়রা উপজেলার প্রতিচ্ছবি। সরেজমিনে কয়রার মহেশ্বরীপুর, নয়ানি, বাবুরাবাদ, চৌকুনি, তেঁতুলতলার চর, মঠবাড়ি, হায়াতখালী যেখানেই যাওয়া যায়, দেখা যায় বাঁধের ওপর বানানো নতুন মাটির দেয়াল। ষাটের দশকে বানানো বাঁধগুলো এখন আর জোয়ারের পানি সামলাতে পারে না। নদীর বুক ভরাট হয়ে গেছে পলিতে, জেগেছে চর। বাঁধ উপচে পানি চলে আসে গ্রামে।
মহেশ্বরীপুরের অনুপম কুমার বলেন, ১০ বছর আগে এই নদীতে জোয়ারের সময় ৭০-৮০ হাত পানি থাকত। এখন পলি পড়ে থাকে ২৫-৩০ হাত। নদীর তলা যত ভরে, ততই জোয়ারে পানি উঁচু হয়। বাঁধ উপচে পানি ঢোকে। তাই নিজেরাই মাটি তুলে দেয়াল বানিয়েছেন।
উত্তর বেদকাশীর শাকবাড়িয়া নদীর ধারে দাঁড়িয়ে স্থানীয় বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম জানান, ‘প্রতি জোয়ারে গাঙের পানি এমন ওঠে, বুক ধড়ফড় করে। আগে ভরা জোয়ারে বাঁধের অর্ধেক পর্যন্ত পানি উঠত, এখন কানায় কানায় উঠে যায়। তাই আমরা দেয়াল তুলছি, না হলে গ্রাম তলিয়ে যেত।’
কয়রার মহেশ্বরীপুর, নয়ানি, বাবুরাবাদ, চৌকুনি, তেঁতুলতলার চর, মঠবাড়ি, হায়াতখালী এলাকায় বাঁধের ওপর মাটির দেয়াল বানানো হয়েছে