বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহারের পর বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে। তৃতীয় দেশের গার্মেন্টস পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরে একটি বাংলাদেশি ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে। পেট্রাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কার্পাস (গেট পাস) না দেওয়ায় ভারতে প্রবেশ করতে পারেনি। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ফেরত নেওয়ার কথা ভাবছে। 

কাস্টমস ও বন্দর সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরের শ্রীপুরের রপ্তানিকারক ব্লু প্লানেট নিটওয়ার লিমিটেড ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধায় গার্মেন্টস সামগ্রী স্পেনে রপ্তানির জন্য বেনাপোল বন্দরে ট্রাক পাঠায়, যার আমদানিকারক পুল অ্যান্ড বেয়ার স্পেন। ঢাকা মেট্রো ট ২০-৯০০৫ নম্বর ট্রাকে ৩৬৭ প্যাকেজ টি-শাট ও মহিলাদের ট্যাংক টপ পণ্য আছে। ৪৩০১ কেজি গার্মেন্টস সামগ্রীর রপ্তানি মূল্য ৯৭ লাখ ৭৮ হাজার ৮৫৮ টাকা। পণ্য চালানটি রপ্তানির জন্য বেনাপোল কাস্টমসে কাগজপত্র দাখিল করেন রানা ইন্টারন্যাশনাল নামের সিএন্ডএফ এজেন্ট। 

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের কার্গো সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রাকিব বলেন, ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার এসব পণ্য পেট্রাপোল বন্দর হয়ে কলকাতার দমদম এয়ার পোর্ট ব্যবহার করে স্পেনসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়ে আসছিল। এসব পণ্য বাংলাদেশ থেকে বিমান পথে রপ্তানি হলে পরিবহন ব্যয় বেশি পড়ে এবং ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধায় খরচ কম পড়ে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। এর আগে বুধবার চারটি ট্রাক ফেরত গেছে, বন্দরের ভেতর একটি ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে। এ খবর জানতে পেরে অন্য রপ্তানিকারকরা পণ্য লোড বন্ধ করে রেখেছেন।   

বেনাপোল কাস্টমসের কার্গো শাখার রাজস্ব অফিসার আবু তাহের বলেন, তৃতীয় দেশে কোনো পণ্যের আজ রপ্তানির জন্য কার্পাস হয়নি।    

বেনাপোল স্থল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন, পেট্রাপোল কাস্টমস তৃতীয় দেশের পণ্যের কার্পাস না দেওয়ায় পণ্য বোঝাই একটি ট্রাক বেনাপোল বন্দরের টার্মিনালে দাঁড়িয়ে আছে। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প ল ক স টমস

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ

কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই 

ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।

পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।

এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।

তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ