বাংলাদেশের প্রথম আমেরিকান এক্সপ্রেস মেটাল কার্ড নিয়ে এলো দেশের বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংক লিমিটেড পিএলসি। এর নাম সিটি ব্যাংক আমেরিকান এক্সপ্রেস প্ল্যাটিনাম রিজার্ভ ক্রেডিট কার্ড। আমন্ত্রণের মাধ্যমে প্রাপ্ত এ কার্ড ব্যক্তিগত সেবা, আন্তর্জাতিক ভ্রমণের সহায়তা, সাশ্রয় এবং আকর্ষণীয় সুবিধার সমন্বয়ে গঠিত, যা গ্রাহকের ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ঢাকার একটি হোটেলে সিটি ব্যাংক আমেরিকান এক্সপ্রেস প্ল্যাটিনাম রিজার্ভ ক্রেডিট কার্ড উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মাসরুর আরেফিন, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক অরূপ হায়দার, হেড অব কার্ড তৌহিদুল আলমসহ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এই কার্ডে মেম্বাররা তাদের জীবনধারার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ২০ হাজার টাকা মূল্যের এক্সক্লুসিভ ওয়েলকাম গিফট ভাউচার পাবেন। দুই বছরের জন্য বিনামূল্যে ট্যাবলেট প্লাসের মেম্বারশিপ উপভোগ করবেন। যা আন্তর্জাতিক বিলাসবহুল বুটিক হোটেল এবং ব্র্যান্ডসমূহে বিশেষ সুবিধা দেবে ব্যাংকটি।

কার্ড মেম্বাররা এই কার্ডের আওতায় বিনামূল্যে প্রায়োরিটি পাস মেম্বারশিপ পাবেন এবং দুজন অতিথিসহ বিশ্বের এক হাজার ৭০০-এরও বেশি বিমানবন্দর লাউঞ্জে অবারিত প্রবেশাধিকার উপভোগ করবেন। এছাড়াও ফাস্টট্র্যাক ভিআইপি মিট অ্যান্ড গ্রিট সার্ভিসে ১০ শতাংশ ছাড়ে তাদের বিমানবন্দরের অভিজ্ঞতা আরো উন্নত হবে।

অন্যান্য সুবিধার মধ্যে রয়েছে সিক্সট রেন্ট-এ-কার লয়্যালটি প্রোগ্রামে বিনামূল্যে সদস্য পদ, যেখানে কাউন্টারে প্রাধান্য সেবা, ছাড়, ফ্রি আপগ্রেড এবং আরো অনেক সুবিধা।

এই কার্ডে প্রত্যেক কার্ড মেম্বারের জন্য থাকছে একজন নির্ধারিত রিলেশনশিপ ম্যানেজার, যিনি তাদের অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত সব ধরনের সহায়তা দেবেন। এছাড়া থাকছে রিয়েল-টাইম অটো-ডেবিট সুবিধা, যা নির্বিঘ্নে তাদের সব কার্ড লেনদেন নিশ্চিত করবে। আর এই কার্ডে নির্বাচিত মার্চেন্টদের কাছে কার্ড ব্যবহার করে গ্রাহকেরা ১০ গুণ পর্যন্ত মেম্বারশিপ রিওয়ার্ডস পয়েন্ট উপার্জন করতে পারবেন।

এই পয়েন্ট ব্যবহার করে বার্ষিক ফি, বকেয়া বিল পরিশোধ, এমনকি খ্যাতনামা আউটলেটে কেনাকাটা ও ডাইনিং করতে পারবেন। এই কার্ডে আরো রয়েছে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অভিজ্ঞতা, যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন দেশের রেস্টুরেন্টে কিউরেটেড ডাইনিং এবং বাংলাদেশের শীর্ষ ফাইভ-স্টার হোটেলে ‘বাই ১ গেট ২’ ব্যুফে অফার।

ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার বলেন, “সিটি ব্যাংক আমেরিকান এক্সপ্রেস প্ল্যাটিনাম রিজার্ভ ক্রেডিট কার্ডে আমাদের গ্রাহকদের সর্বোচ্চ অভিজ্ঞতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হয়েছে। যা বাংলাদেশে প্রিমিয়াম অভিজ্ঞতার সংজ্ঞা নতুনভাবে তৈরি করেছে এবং গ্রাহকদের জন্য ভ্রমণ ও জীবনধারার বিশেষ সুবিধা নিয়ে এসেছে। এটি ক্রেডিট কার্ড সেবায় একটি নতুন স্থাপন করবে, যা সিটি ব্যাংক ও আমেরিকান এক্সপ্রেসের সম্মিলিত উৎকর্ষকে তুলে ধরে।”

সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসরুর আরেফিন বলেন, “মেটাল কার্ড আমার কাছে খুব একটা বড় বিষয় নয়। যেটা সত্যিকার অর্থে এটিকে আলাদা করে তোলে তা হলো আমেরিকান এক্সপ্রেসের শতবর্ষের গ্রাহক প্রতিশ্রুতির ঐতিহ্য।”

আমেরিকান এক্সপ্রেসের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও জেনারেল ম্যানেজার, গ্লোবাল নেটওয়ার্ক সার্ভিসেস, এশিয়া এবং সাউথ প্যাসিফিক গ্রোথ মার্কেটস দিব্যা জৈন বলেন, “এই উদ্বোধন আমাদের সিটি ব্যাংকের সঙ্গে অংশীদারত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এটি বাংলাদেশের প্রথম মেটাল কার্ড। কার্ডটি শুধুমাত্র একটি পেমেন্ট সল্যুশন নয়, বরং এটা তাদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে যারা প্রিমিয়াম অভিজ্ঞতা এবং সুবিধাকে মূল্য দেন।”

সিটি ব্যাংক আমেরিকান এক্সপ্রেস প্লাটিনাম রিজার্ভ ক্রেডিট কার্ড মেম্বারদের ক্রমবর্ধমান প্রত্যাশাকে পূরণ করে এবং শুধু আর্থিক সুবিধাই নয়, বরং একটি সত্যিকার অসাধারণ জীবনধারা উপহার দেয়।

ঢাকা/সুমন/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এই ক র ড র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

মৃত্যু যেখানে রমরমা ব্যবসা হয়ে উঠছে

দক্ষিণ কোরিয়ার বন্দর নগরী বুসানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে কফিন। দেশটিতে ভবিষ্যতের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া পরিচালকদের প্রশিক্ষণের জন্য এগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় ব্যাপক জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের ফলে মৃত্যুর ব্যবসায় ক্রমবর্ধমান সংখ্যক লোক কাজ খুঁজে পাচ্ছে। কারণ দেশটিতে জন্মহার বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম এবং জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের বয়স ৫০ বা তার বেশি।

বুসান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা ঐতিহ্যবাহী কোরিয়ান অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কাপড়ে সাবধানে একটি পুতুল জড়িয়ে, কাপড়টিকে আসল চামড়ার উপর মসৃণ করে, তারপর আলতো করে কফিনে নামিয়ে দিচ্ছিল।

অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া প্রশাসনের শিক্ষার্থী ২৭ বছর বয়সী জ্যাং জিন-ইয়ং বলেন, “আমাদের সমাজের বয়স বাড়ার সাথে সাথে, আমি ভেবেছিলাম এই ধরণের কাজের চাহিদা আরো বাড়বে।”

আরেক ছাত্র, ২৩ বছর বয়সী ইম সে-জিন তার দাদীর মৃত্যুর পর মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয়।

তিনি বলেন, “তার (দাদীর) অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় আমি দেখেছি পরিচালকরা তাকে শেষ বিদায়ের জন্য কতটা সুন্দরভাবে প্রস্তুত করেছেন। আমি গভীর কৃতজ্ঞ বোধ করছি।”

দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষ ক্রমশ একাকী জীবনযাপন করছে এবং নিঃসঙ্গ অবস্থায় মারা যাচ্ছে। এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির প্রায় ৪২ শতাংশ এখন একাকী জীবনযাপন করে।

এই পরিসংখ্যান দেশটিতে একটি নতুন পেশার আবির্ভাবকে প্রতিফলিত করছে।

উন্নত দেশগুলির মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি। এই ‘একাকী মৃত্যু’-তে সেইসব ব্যক্তিরাও অন্তর্ভুক্ত যারা আত্মহত্যা করেছেন।

অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ব্যবসায়ের একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি কিম ডু-নিয়ন বলেন, তার ২০ বছর বয়সী ক্রমবর্ধমান সংখ্যক নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মী রয়েছে।

তিনি বলেন, “মানুষ যখন একসাথে থাকে, তখন তারা জিনিসপত্র ভাগ করে নেয়... এমনকি যদি একজন ব্যক্তি মারা যায়, সেই জিনিসপত্রগুলি থেকে যায়। কিন্তু যখন কেউ একা মারা যায়, তখন সবকিছু পরিষ্কার করতে হবে।”

তবে নিজের পেশা নিয়ে ভয়ও পান কিম।

তিনি বলেন, “আমি ভয় পাচ্ছি। আপনি যতই প্রস্তুতি নিন না কেন, একজন মৃত ব্যক্তির মুখোমুখি হওয়া ভীতিকর।”

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মৃত্যু যেখানে রমরমা ব্যবসা হয়ে উঠছে