ভারতের আলোচিত হিন্দি সিরিয়াল ‘সিআইডি’। মাঝখানে ছয় বছর বিরতির পর গত বছরের ডিসেম্বরে অনেকটা চমকে দিয়ে স্মৃতিজাগানিয়া সিরিয়ালটি ফিরিয়েছে সনি টিভি। সিরিজটি প্রচারের মাঝেই সনি টিভি জানায়, জনপ্রিয় ‘এসিপি প্রদ্যুমন’ চরিত্রের মৃত্যু ঘটছে। অনেকেই তখন বিভ্রান্ত হয়েছিলেন চরিত্রটিতে অভিনয় করা শিবাজী সত্যম বুঝি মারা গেছেন! আর সে কারণেই বর্তমানে চর্চায় আছে এটি। তার মাঝেই নতুন বিতর্কে নাম জড়াল সিরিয়ালটির। ‘সিআইডি’র বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ এনেছেন এক গ্রাফিতি শিল্পী।
সিআইডিতে এখনকার পর্বে এখন দেখানো হচ্ছে এসিপি প্রদ্যুমনকে, যারা খুন করেছে, তাদের খোঁজার চেষ্টা করছে বাকি টিম। মুম্বাই শহরজুড়ে কিছু ইঙ্গিতবহ গ্রাফিতি দেখা যাচ্ছে, সেগুলোর উৎস এবং অর্থ খুঁজছে দয়া এবং অভিজিৎ। আর সেই গ্রাফিতিগুলোই নাকি চুরি করে ব্যবহার করা হয়েছে এই শোয়ে!
গত সোমবার মুম্বাইয়ের এক গ্রাফিতি শিল্পী মুজ গ্রাফিতি তাঁর ইনস্টাগ্রামে প্রমাণসহ একটি ভিডিও পোস্ট করেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে সিআইডি সিরিয়ালে তাঁর কাজ চুরি করে ব্যবহার করা হয়েছে। যেখানে ভঙ্গ করা হয়েছে কপিরাইট আইন।
ভিডিও পোস্ট করে ইনস্টাগ্রামে এ শিল্পী লেখেন, ‘প্রথমে খুব খুশি হয়েছিলাম, কারণ শৈশব থেকেই আমার ঘরে এ শো দেখা হয়েছে। আর সেখানেই নিজের কাজ দেখতে পাওয়া অনেক আনন্দের বিষয়। কিন্তু এখানে শুধু আমার নয়, অনুমতি ছাড়া আরও কিছু শিল্পীর কাজ ব্যবহার করা হয়েছে। নিজেরা কোনো শিল্পীকে দিয়ে কাজটা না করে ইউটিউব থেকে চুরি করে ব্যবহার করেছে।’
এই ঘটনায় কোনো আইনি পদক্ষেপ নেবেন কি না জানাননি এ শিল্পী। তবে তার ভিডিওর মন্তব্যে অনেক নেটিজেন তাকে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে এখনো নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেনি সনি টিভি। তবে এখন ভিডিওটি ওই শিল্পীর প্রোফাইলে দেখা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে, নিউজ ১৮।
উল্লেখ্য, ‘সিআইডি’তে এসিপি প্রদ্যুমনের বদলে এসেছেন পার্থ সামথন। পার্থকে এসিপি প্রদ্যুমনের চরিত্রে নয়, দেখা যাবে এসিপি অংশুমান নামে নতুন একটি চরিত্রে।
সিরিয়ালটি দিয়ে বেশ কয়েক বছর পর ছোট পর্দায় ফিরছেন পার্থ সামথন। এর আগে হিট শো ‘কাইসি ইয়ে ইয়ারিয়ান’-এ অভিনয় করে পরিচিতি পান। তাঁকে শেষবার ‘কসৌটি জিন্দেগি কে’ ধারাবাহিকে অভিনয় করতে দেখা গেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর স আইড
এছাড়াও পড়ুন:
তিনভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান আর্থিক ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে
সরকারের ওপর তিনভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো মাঝারি মাত্রায় আর্থিক ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে বলে মত প্রকাশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
বলা হয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানখাত সম্পর্কিত বিশ্লেষণে করে দেখা গেছে- সম্মিলিতভাবে এসওই খাত দেশের সরকারের জন্য মাঝারি মাত্রার ফিসকাল ঝুঁকি সৃষ্টি করে। এসওই এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো সার্বিকভাবে সরকারের আর্থিক অবস্থার ওপর তিনভাবে প্রভাব ফেলে।
প্রথমত, যদি এসওই-এর ঋণের জন্য গ্যারান্টি দেয় এবং তারা সেই ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়, তাহলে সরকারের তা পুনর্ভরণসহ আর্থিক ও অন্যান্য ক্ষতির ঝুঁকি থাকে। এটি ঘটতে পারে যদি প্রতিষ্ঠানগুলো দেউলিয়া হয়ে যায় বা তাদের প্রকল্পগুলো আশানুরুপ উৎপাদশীলতা দেখাতে ব্যর্থ হয়।
দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ঋণ খেলাপি না হলেও যদি তারা ক্রমাগত লোকসান করে, তাহলে তাদের সচল রাখতে সরকারকে বাড়তি পুঁজি যোগান দিতে হতে পারে।
তৃতীয়ত, যদি এসব প্রতিষ্ঠান প্রত্যাশিত মুনাফা না করতে পারে তাহলে সেটিও সরকারের রাজস্ব আয়ে চাপ বাড়াতে পারে। সার্বিকভাবে দেখা গেছে যে, এসওই সমূহের সম্পদকে সুচিন্তিতভাবে ব্যবহার করা প্রয়োজন, যাতে সর্ব্বোচ্চ উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত করা যায়।
এ পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারকে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদে আট ধরণের নীতি কৌশল গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়। এই নীতি কৌশলের মধ্যে বলা হয়েছে, নিম্ন আয়ের জনগণকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রভাব থেকে সুরক্ষা দিতে সরকার ওএমএস (খোলা বাজারে খাদ্য পণ্য বিক্রি) টিসিবি’র ফ্যামিলি কার্ডের মতো কর্মসূচি চালু করেছে। সরকার ডায়নামিক সোশ্যাল রেজিস্ট্রি তৈরির মাধ্যমে উপকারভোগীর সহায়তাপ্রাপ্তি ব্যবস্থা পূর্ণ অটোমেশন করার উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে পারে।
বিদ্যুৎখাতের পরিকল্পনা বিষয়ে নীতি কৌশলে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎখাতে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সরকার ২০২৬ -২০২৭ অর্থবছরে তিন বছর মেয়াদে একটি রোডম্যাপ তৈরি করছে, যার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিক্রয় মূল্যের মধ্যে সামঞ্জস্য রেখে ভর্তুকি কমিয়ে এখাতকে আর্থিকভাবে টেকসই করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার সার ব্যবস্থাপনা পুনঃমূল্যায়ন করছে এবং কৃষি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল উপকরণের প্রাপ্যতা ও সরবরাহে যেনন কোনো বিঘ্ন না ঘটে তা নিশ্চিত করছে।
ঋণ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন ও আর্থিক ঝুঁকি কমাতে সরকার অর্থ বিভাগের অধীনে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং বন্ড/বিল বাজার উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে।
নীতি কৌশলের বিষয়ে আরও রয়েছে, অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ জোরদারে সরকার আর্থিক লেনদেনের অটোমেশন করার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা যেতে পারে।
রাজস্ব আহরণ বাড়াতে ‘মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি রাজস্ব কৌশল(এমএলটিআরএস,২০২৫)’ ও ‘ট্যাক্স এক্সপেন্ডিচার নীতিমালা’ গ্রহণ করা হয়েছে। এসব কাঠামোগত সংস্কার পরিকল্পনা গ্রহণ ও কার্যকর করার মাধ্যমে সরকার ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধির জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান সমূহের সক্ষমতা উন্নয়নের জন্য দক্ষ এসেট ম্যানেজমেন্ট পদ্ধতি গ্রহণ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। একইসঙ্গে সরকার একটি দুর্যোগ ঝুঁকি অর্থায়ন কৌশলপত্র প্রণয়ন করেছে, যার মাধ্যমে মধ্যমেয়াদে বিভিন্ন ঝুঁকি অর্থায়নের উত্তম বিকল্পের মূল্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। একটি সামগ্রিক দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং সাড়া প্রদান কৌশল তৈরি করা যেতে পারে বলে অর্থমন্ত্রণালয়ের নীতি বিবৃতি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/হাসনাত/টিপু