বিএসইসির নিরাপত্তা জোরদার, দায়িত্বে আনসার
Published: 10th, April 2025 GMT
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮-এর ধারা ১৫ অনুযায়ী পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সরকার ঘোষিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো (সিআইআই) হওয়ায় এখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে, যাতে সব কার্যক্রম যথাযথ প্রক্রিয়ায় ও নির্বিঘ্নভাবে পরিচালনা করা যায়।
এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনের নিরাপত্তায় সশস্ত্র আনসার নিয়োজিত করেছে বিএসইসি। গত ১ এপ্রিল থেকে আনসার বাহীনির সদস্যরা এই পরিকাঠামোর নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো.
আরো পড়ুন:
লাভেলো আইসক্রিমের ১০ লাখ শেয়ার হস্তান্তরের ঘোষণা
ফু-ওয়াং ফুডসের আর্থিক প্রতিবেদনে নিরীক্ষকের আপত্তি
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন পুনর্গঠিত বিএসইসি নিরাপত্তা জোরদারের সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বাস্তবায়ন করছে।
বিএসইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২৬ জন আনসার সদস্য বিভিন্ন শিফটে দায়িত্ব পালনের কথা থাকলে এখন পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি। বর্তমানে বিএসইসির নিরাপত্তায় তিনটি শিফটে ১৫ থেকে ১৬ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে চারজন সদস্য অস্ত্রধারী রয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজন সদস্য চেয়ারম্যান ও কমিশনার ফ্লোরে দায়িত্ব পালন করছেন। অন্য দুজন প্রধান ফটকের দায়িত্বে রয়েছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, বর্তমানে চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের ফ্লোরে একজন আনসার সদস্য অস্ত্রসহ দায়িত্ব পালন করছেন। আরেকজনকে অস্ত্র ছাড়াই দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। এ ছাড়া লিফট থেকে বের হয়ে ওই ফ্লোরে প্রবেশের আগেই আরো একজন আনসার সদস্যকে অবস্থান করতে দেখা গেছে। ভবনের ভেতর ছাড়াও বিএসইসির সামনে বেশ কয়েকজন আনসার সদস্যকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে একজনকে বিএসইসিতে ঢোকার প্রবেশদ্বারে সার্বক্ষণিক অবস্থান করতে দেখা যায়।
কথা বলে জানা গেছে, এখনো আনসার সদস্যদের পুরোপুরি দায়িত্ব বণ্টন করা হয়নি। কোন ফ্লোরে কতজন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন, সেটাও নির্ধারণ করা হয়নি। বর্তমানে সকালে ছয়, বিকালে ছয় এবং রাতের শিফটে তিনজন করে আনসার থাকছেন।
আনসার সদস্যদের আবাসন ব্যবস্থার বন্দোবস্ত না হওয়ায় সেখানে নিয়োজিত ২৬ জন দায়িত্ব পালন করছেন না বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
বিএসইসিতে দায়িত্বরত একজন আনসার সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চেয়ারম্যানের সঙ্গে তাদের ডিউটি। অফিস চলাকালীন তাদের সবসময় ডিউটি পালন করতে হবে। নিরাপত্তার জন্য তাদের শটগান দেওয়া হয়েছে। সেখানে থাকার ব্যবস্থা না হওয়ায় সবাই এখনো কাজে যোগ দেননি। তবে যতটুকু জানতে পেরেছেন, থাকার ব্যবস্থার পরিবর্তে দায়িত্ব পালনের জন্য তাদের ভাতা দেওয়া হবে।
বিএসইসির সিদ্ধান্ত
সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনের নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে আনসার নিয়োজিত করার প্রসঙ্গে সভায় আলোচনা করা হয়েছে। আলোচনায় কমিশনকে গুরত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো (সিআইআই) বিবেচনায় কমিশন ভবনের নিরাপত্তা বিধানে ঢাকা মহানগর আনসার দক্ষিণ জোন থেকে গত ১৭ মার্চ বিএসইসিতে একটি চিঠি পাঠায়। চিঠিতে বর্ণিত শর্তে আবাসন সুবিধা ব্যতিরেকে মোট ২৬ জন সশস্ত্র আনসার নিয়োজিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ বিষয়ে বিএসইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
বিএসইসির কালো অধ্যায়
চলতি বছরের গত ৫ মার্চ বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে কমিশনার মো. মহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর ও ফারজানা লালারুখের উপস্থিতিতে নির্ধারিত কমিশন সভা চলাকালে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী সভাকক্ষে জোরপূর্বক এবং অনধিকার প্রবেশ করে তাদেরকে অবরুদ্ধ করেন। কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী একজন নির্বাহী পরিচালককে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর আদেশ প্রত্যাহারসহ চার দফা দাবিতে চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের প্রায় চার ঘণ্টা বোর্ড রুমে আটকে রাখেন।
তখন তারা ভবনের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে মারাত্মক অরাজকতা ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। তখন ভবনের সিসি ক্যামেরা, ওয়াই-ফাই, লিফট এবং সব প্রবেশদ্বার বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের উদ্ধার করে। পরের দিন ৬ মার্চ রাতে অবরুদ্ধের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের গানম্যান মো. আশিকুর রহমান। তবে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনে মুক্ত হয়েছেন তাদের সবাই।
রাইজিংবিডি ডটকমের সঙ্গে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালামের কথা হলে তিনি বলেন, “বিএসইসি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এর নিরাপত্তা জোরদার করা প্রয়োজন। প্রক্রিয়া মেনে নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য আনসার সদস্য চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। নির্ধারিত পদ্ধতি মেনে ২৬ জন আনসার দেওয়া হয়েছে। বিএসইসির নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন তারা।”
ঢাকা/এনটি/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এসইস র স ব যবস থ প রব শ ভবন র ন করত
এছাড়াও পড়ুন:
তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান। শনিবার (১ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন ঘোষিত চূড়ান্ত ফলে দেখা যায়, বুধবারের নির্বাচনে তিনি ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। খবর বিবিসির।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনে স্বচ্ছতার অভাব এবং ব্যাপক অস্থিরতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচন ঘিরে দেশটিতে গত কয়েক দিনে সহিংসতায় কয়েক শ’ মানুষ নিহত ও বহু আহত হয়েছে। দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে নিহতের সঠিক সংখ্যা যাচাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরকার সহিংসতার মাত্রা কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অস্থিরতা দমনে দেশজুড়ে কারফিউও বাড়ানো হয়েছে।
ক্ষমতাসীন চামা চা মাপিন্দুজি (সিসিএম) দলের প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসানের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভোটের আগে ভিন্নমত পোষণকারী ও বিরোধীদের ওপর কঠোর দমনপীড়ন চালানোর অভিযোগ রয়েছে। প্রধান দুই বিরোধী দলকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হয়নি।
ফলে নির্বাচনের পরই বৃহত্তম নগরী দার-এস-সালাম ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবারও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। অস্থিরতা বন্ধ করার জন্য সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা সামিয়ার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং অসংখ্য গাড়ি, পেট্রোল স্টেশন এবং থানায় আগুন দেয়।
বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেশিরভাগ তরুণ বিক্ষোভকারীরা, যারা নির্বাচনকে অন্যায্য বলে সমালোচনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, সরকার প্রধান বিরোধী নেতাদের দমন করে গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ন করছে। প্রধান দুই বিরোধী নেতার মধ্যে একজন কারাগারে রয়েছেন এবং অন্যজনকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বিরোধী চাদেমা দলের একজন মুখপাত্র শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে তানজানিয়ার একটি কূটনৈতিক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, কমপক্ষে ৫০০ জন মারা যাওয়ার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কম্বো থাবিত এই সহিংসতাকে ‘এখানে-সেখানে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা বাহিনী খুব দ্রুত ও দৃঢ়তার সাথে কাজ করেছে।”
প্রধান দুই বিরোধী দলীয় নেতার মধ্যে চাদেমা দলের টুন্ডু লিসুকে নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ আটক করা হয়, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং এসিটি-ওয়াজালেনডো দলের নেতা লুহাগা এমপিনাকে আইনি কৌশল খাটিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
১৬টি প্রান্তিক দল, যাদের কারোরই ঐতিহাসিকভাবে উল্লেখযোগ্য জনসমর্থন ছিল না, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
সামিয়ার ক্ষমতাসীন দল সিসিএম, দেশটির রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে কখনও কোনো নির্বাচনে সিসিএম হারেনি।
নির্বাচনের আগে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিরোধী ব্যক্তিত্বদের জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের নিন্দা জানিয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যুর পর ২০২১ সালে তানজানিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সামিয়া ক্ষমতায় আসেন।
ঢাকা/ফিরোজ