শুধু বড় বিনিয়োগকারীরাই নয়, সিঙ্গাপুরের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরাও বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। একথা বলেছেন বাংলাদেশে সিঙ্গাপুরের নন-রেসিডেন্ট হাইকমিশনার ডেরেক লো। ঢাকায় বিনিয়োগ সম্মেলনে আসা সিঙ্গাপুরের প্রতিনিধিদের নিয়ে গত বুধবার বেসরকারি ইস্টার্ন ব্যাংক আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি বিশেষ অতিথি ছিলেন। ইস্টার্ন ব্যাংক গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। 

ঢাকার গুলশানে ইস্টার্ন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিবেশ এবং সিঙ্গাপুর-বাংলাদেশ ব্যবসার সুযোগ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে প্রকৃত সংলাপ, নতুন আইডিয়া এবং দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্ব উৎসাহিত করা। 
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এবং অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাকির হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সিঙ্গাপুরকে শুধু একটি বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবেই দেখি না। টেকসই উন্নয়ন অর্জন, আর্থিক উদ্ভাবনে গতি আনা এবং পারস্পরিক সমৃদ্ধি অর্জনে সিঙ্গাপুর আমাদের কৌশলগত মিত্র।’ 
বাংলাদেশে সিঙ্গাপুরের নন-রেসিডেন্ট হাইকমিশনার বলেন, ‘সিঙ্গাপুরে অধিক পরিমাণে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশের ভালো সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ তার কৃষিপণ্যে ‘হালাল সার্টিফিকেশন’ ব্যবহার করতে পারে। কারণ সিঙ্গাপুরে একটি বড় মুসলিম সম্প্রদায় রয়েছে, যারা এ ব্যাপারে আগ্রহী। 

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া শাখার পরিচালক হাসান আবদুল্লাহ তৌহিদ বলেন, বাংলাদেশের বৃহৎ ভোক্তা বাজার, তরুণ এবং প্রশিক্ষণযোগ্য জনবল, মূল্যসাশ্রয়ী উৎপাদন এবং দক্ষিণ এশিয়ার প্রবেশদ্বারের সুবিধা গ্রহণের জন্য সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানান।  
ইস্টার্ন ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ শাহীন বলেন, ‘আন্তঃসীমান্ত বিনিয়োগ এবং বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সহায়ক প্রয়োজনীয় ব্যাংকিং সল্যুশন এবং সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সুযোগ সৃষ্টিতে ইবিএল নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। চীন, কোরিয়া, জাপান ও ভারতের জন্য ইবিএলের আলাদা বিজনেস ডেস্ক রয়েছে, তা ইতোমধ্যে সফল হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। সিঙ্গাপুরের জন্য এমন একটি স্বতন্ত্র ‘বিজনেস ডেস্ক’ স্থাপনে ইবিএল চেষ্টা করছে।  
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিঙ্গাপুরের চার্জ দি অ্যাফেয়ার্স মিশেল লি, এন্টারপ্রাইজ সিঙ্গাপুরের ডেভেলপমেন্ট পার্টনার বেঞ্জামিন চুই, সুবর্না জুরংয়ের প্রধান এস.

আনন্দ, সাইক্লেট গ্রুপের পরিচালক মেলভিন ট্যাং, মহাব্যবস্থাপক আশরাফ সুপিয়াহ, ডিভিএস সিঙ্গাপুরের নির্বাহী পরিচালক চুন পোহ কোইসহ ইস্টার্ন ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ