গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ১৯ ফিলিস্তিনি নিহত
Published: 11th, April 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায়য় ইসরায়েলি হামলায় আরও ১৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এসব ফিলিস্তিনি প্রাণ হারান। এর মধ্যে গাজা নগরীতে নিহত হন ১১ জন। গতকাল বুধবার ইসরায়েলের হামলায় আরও ৪৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছিলেন। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এসব তথ্য জানিয়েছে।
গাজায় ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। গত ১৯ জানুয়ারি থেকে প্রথম যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। কিন্তু যুদ্ধবিরতির শর্ত ভেঙে গত ১৮ মার্চ থেকে আবারও গাজায় হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েলের হামলায় ১ হাজার ৫২৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩ হাজার ৮৩৪ জনা।
এদিকে আরও ৮০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তাঁরা সবাই গাজা উপত্যকার বাসিন্দা। স্থানীয় সূত্রগুলো বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে এই তথ্য জানিয়েছে।
সূত্রটি আরও জানায়, গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসের কিসুফিম ক্রসিংয়ে এসব বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়। ক্রসিংটি ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, মুক্তি পাওয়া বন্দিদের মধ্যে অন্তত ১০ জনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ কারণে তাদের দের আল–বালাহ শহরের আল–আকসা মার্টারস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বন্দিদের মুক্তি দেওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন হাসপাতালটির কর্মীরা। কারণ এসব বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার আগে তাদের কোনো তথ্য জানানো হয়নি। সাধারণত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি প্রক্রিয়ার সঙ্গে আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থা সম্পৃক্ত থাকে।
বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার পর তাদের স্বজনেরা হাসপাতালে ছুটি আসেন। সেখানে এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। হাসপাতালে গিয়ে দীর্ঘদিন পর বাবার সঙ্গে দেখা হয় ফারাহ নামের এক তরুণীর।
আরও পড়ুনগাজায় যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাব মিসর-কাতারের৩০ মার্চ ২০২৫ফারাহ সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ভেবেছিলেন তাঁর বাবাকে মেরে ফেলা হয়েছে। তাঁর সম্পর্কে কোনো তথ্যই জানতে পারেননি। তিনি ইসরায়েলের কুখ্যাত সাদি তেইমান কারাগারে ছিলেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের সশস্ত্র যোদ্ধারা ইসরায়েলে হামলা চালায়। ইসরায়েলের হিসাব অনুসারে এ হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে বন্দী করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। পাল্টা হিসেবে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজা উপত্যকা অনেকটাই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুসারে, এসব হামলায় এরইমধ্যে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। হামলায় গাজা উপত্যকার বেশির ভাগ বাড়িঘর ও অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে।
আরও পড়ুনগাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩০, বেশির ভাগ নারী ও শিশু১৮ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বন দ দ র ম ইসর য় ল র
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার
ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।
আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।
বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।
অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।
আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।