মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ফাঁসি হওয়া বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ায় এক মুক্তিযোদ্ধাকে আটক করেন স্থানীয় কিছু লোক। এরপর পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ওই মুক্তিযোদ্ধাকে সেখান থেকে থানায় নিয়ে যান। কোনো মামলা বা অভিযোগ না থাকায় প্রায় ১৯ ঘণ্টা পর ছাড়া পান তিনি।

কক্সবাজারের রামুতে ঘটেছে এ ঘটনা। গতকাল সকাল ১০টার দিকে রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়ার আবদুল গণি নামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে নুরুল আবছার (৮০) নামের ওই মুক্তিযোদ্ধাকে আটক করেন স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা। দুপুরে তাঁকে ঘটনাস্থল থেকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। আজ শুক্রবার ভোর পাঁচটার দিকে তিনি ছাড়া পান।

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৫ সালে ফাঁসি কার্যকর হয় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর। তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করা মামলায় সাক্ষী হিসেবে ছিলেন নুরুল আবছার। তিনি চট্টগ্রাম নগরের চন্দনপুরা এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ জানায়, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে নুরুল আবছার আত্মগোপনে চলে যান। কয়েক মাস ধরে তিনি রামুতে এসে আবদুল গণির বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন। আবদুল গণি একসময় নুরুল আবছারের বাড়িতে কাজ করতেন।

রামুর কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক এনামুল হক বলেন, নুরুল আবছারের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর স্থানীয় কিছু লোক বাড়ি ঘেরাও করে নুরুল আবছারকে আটক করেন। নুরুল আবছার বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে করা মামলার ১০ নম্বর সাক্ষী ছিলেন। তাঁকে আটকের পর পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমন কান্তি চৌধুরী বলেন, মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আবছারের বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা বা অভিযোগ নেই। তাই পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে। নিরাপত্তার কথা ভেবে তিনি ভোররাত পর্যন্ত থানায় অবস্থান করেন। আজ শুক্রবার সকালে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে চট্টগ্রামে নিয়ে গেছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র ল আবছ র ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

সোনারগাঁয়ে কারখানা চালু করল সুইজারল্যান্ডের সিকা

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে নতুন কারখানা চালু করেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক রাসায়নিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিকা বাংলাদেশ। আজ সোমবার দুপুরে সোনারগাঁয়ের টিপরদী এলাকায় মেঘনা অর্থনৈতিক অঞ্চলে (এমআইইজেড) প্রতিষ্ঠানটির কারখানা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।

কারখানার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেটো রেংগলি। বিশেষ অতিথি ছিলেন মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজিআই) চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল। এ ছাড়া সিকা বাংলাদেশের প্রধান সঞ্জীবন রায়, সিকা এশিয়া প্যাসিফিক ম্যানেজমেন্টের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক ইউমি কানসহ মেঘনা গ্রুপ ও সিকা বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিকা বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড সঞ্জীবন রায় বলেন, ‘সিকা বাংলাদেশ’ হলো সিকার ১০০তম সহযোগী প্রতিষ্ঠান, যা আমাদের জন্য এক গৌরবের মাইলফলক। সিকা এখন বিশ্বজুড়ে টেকসই উন্নয়ন ও উদ্ভাবনের প্রতীক। নির্মাণ ও শিল্প খাতে স্থায়িত্ব, শক্তি এবং উপকরণের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আমরা নিরন্তরভাবে কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশের নির্মাণ খাতের রাসায়নিক বাজার বর্তমানে প্রায় ১০ কোটি মার্কিন ডলারের। এ বাজারে সিকার অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৫০ কোটি সুইস ফ্রাঁ বিনিয়োগে নতুন কারখানা করেছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রায় ৮ হাজার বর্গমিটার জায়গাজুড়ে স্থাপিত কারখানাটিতে দুটি আধুনিক উৎপাদন লাইন রয়েছে। যার মধ্যে একটি লিকুইড অ্যাডমিক্সচার ও অন্যান্য কংক্রিট পণ্য উৎপাদনের জন্য এবং অপরটি পাউডারভিত্তিক পণ্য তৈরির জন্য। বিশ্বজুড়ে নির্মাণ ও মোটরগাড়ি শিল্পের জন্য বন্ডিং, সিলিং, রিইনফোর্সিং, প্রটেকশন ও ড্যাম্পিং পণ্যে শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান সিকা বর্তমানে ১০০টিরও বেশি দেশে কার্যক্রম রয়েছে।

সিকা বাংলাদেশকে শুভেচ্ছা জানিয়ে রাষ্ট্রদূত রেটো রেংগলি বলেন, সিকা মানেই গুণগত মান, উদ্ভাবন এবং আধুনিক প্রযুক্তির সংমিশ্রণ। ‘সিকা’ বিশ্বজুড়ে নির্মাণ খাতে উচ্চমানের উদ্ভাবনী পণ্য এবং সমাধান দিয়ে আসছে। বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার।

সিকার এই যাত্রা মেঘনা অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বাংলাদেশের জন্য গর্বের বলে উল্লেখ করেন এমজিআইয়ের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ‘নির্মাণ খাতে সিকা বিশ্বে নেতৃত্বদানকারী একটি প্রতিষ্ঠান। সিকার বিনিয়োগ আমাদের অঞ্চলের সমৃদ্ধি বয়ে আনতে সহায়ক হবে। মেঘনা অর্থনৈতিক অঞ্চল বিনিয়োগ নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য অবকাঠামোসহ যাবতীয় সুযোগ–সুবিধা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের পাশে থাকবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ