জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার ও আহতদের সহায়তা করার লক্ষ্যে গঠন করা জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অর্থ আত্মসাতের মামলায় জাতীয় নাগরিক কমিটির ফতুল্লা থানা কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন পিংকিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জেনিফার জেরিনের আদালত শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ কামরুল হোসেন তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।

দিলশাদ আফরিন পিংকির পক্ষে তার আইনজীবী ঢাকা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হোসেন আলী খান হাসান জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

শুনানিতে তিনি বলেন, আসামি সম্পূর্ণ নির্দোষ। মামলার ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানেন না। তাকে হয়রানি করার জন্য আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের যে কথা বলা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তার জামিন প্রার্থনা করছি।

শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন রমনা মডেল থানার আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-পরিদর্শক জিন্নাত হোসেন।

দিলশাদ আফরিন পিংকিকে বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাতে রমনা থানাধীন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

প্রতারণা করে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ফাউন্ডেশনের লিগ্যার অফিসার ফাতেমা আফরিন পায়েল রমনা মডেল থানায় মামলা করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জুলাই বিপ্লবে আহত হিসেবে ক্ষতিপূরণ পেতে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে আবেদন করেন বুলবুল সিকদার ও রকিবুল সিকদার। তাদের কাগজপত্র দেখে সন্দেহ হওয়ায় জুলাই ফাউন্ডেশনে তথ্য দেওয়ার জন্য আসতে বলা হয়। ২১ মার্চ তারা ফাউন্ডেশনে উপস্থিত হলে জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত না হওয়া সত্ত্বেও দিলশাদ আফরিন ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র সত্যায়ন করার ব্যবস্থা করেন। পরবর্তী সময়ে গুরুতর আহতদের তালিকায় রকিবুলের নাম দিতে ৫০ হাজার এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে আরো ৩০ হাজার টাকা নেন। জুলাই বিপ্লবে শহীদ আহসান কবির শরিফের স্ত্রী হাদিসা আক্তার হ্যাপিকে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে আড়াই লাখ টাকা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ৫০ হাজার টাকা নিয়েও আত্মসাৎ করেন। এছাড়া, আরো কয়েক জনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করে।

গত ৮ এপ্রিল জাতীয় নাগরিক কমিটির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে দিলশাদ আফরিন পিংকিকে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়।

ঢাকা/মামুন/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কম ট র

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫

টাঙ্গাইলে ট্রেনের ছাদে অবৈধভাবে ভ্রমণের সময় বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম রিপন আলী (৩৭)। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

রেলওয়ে পুলিশের টাঙ্গাইল ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ জানান, ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর পর ছাদে রক্তাক্ত অবস্থায় ছয়জনকে পাওয়া যায়। আহত যাত্রীরা পুলিশকে জানান, তাঁরা ঢাকা থেকে ট্রেনের ছাদে উঠেছিলেন। টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর ১৫–২০ মিনিট আগে রেলপথের ওপর দিয়ে অতিক্রম করা একটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নিচের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তাঁরা আহত হন।

আহত ছয়জনকে পুলিশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে রিপন আলীর মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে আশরাফুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত আমিরুল ইসলাম (২৫), আলিম (২৫) ও ফয়সাল (২৭) চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। অজ্ঞাতপরিচয়ের এক কিশোর (১৫–১৬) এখনো টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, তার হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় শুয়ে আছে। কর্তব্যরত নার্স জানান, ছেলেটি কথা বলতে পারছে না।

এদিকে নিহত রিপন আলীর রাজশাহীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কালিয়ানপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির ভেতরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আহাজারি করছেন। বাইরে রিপনের দাফনের জন্য কবর খোঁড়া হচ্ছে, কেউ বাঁশ কাটছেন।

রিপনের বাবা ইসরাফিল হোসেন জানান, রিপন ঢাকার একটি ইলেকট্রনিকস কোম্পানিতে চাকরি করত। কয়েক মাস আগে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন কাজ খুঁজছিল। গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল হাসপাতাল থেকে রিপনের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে তার ছোট ছেলের ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তখনই তাঁরা জানতে পারেন, রিপন ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কমিটি পুনর্বহাল
  • সিলেটে পাথরবাহী ট্রাক্টরচাপায় পর্যটক নিহত, আহত ৫
  • ক্রিকেট ম্যাচের দায়িত্ব পালন করতে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনা, আহত ২৭ নারী পুলিশ সদস্য
  • ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫