কুমিল্লা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে রোগীর শরীরে দেওয়া হলো ৩৪ হাজার টাকা দামের ইনজেকশন। তবে ইনজেকশন দেওয়ার পর বোতলের লেবেল খুলে দেখা গেল, ভেতরে আছে মাত্র চার হাজার টাকার একটি ওষুধ।

কুমিল্লার ‘মুন স্পেশালাইজড হসপিটাল’-এ ঘটনাটি ঘটেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, যা নিয়ে জেলা জুড়ে চলছে সমালোচনার ঝড়।

ভুক্তভোগী রোগীর মেয়ে ফারজানা আক্তার বিথী জানান, তিনি ছয় মাস ধরে তার মাকে ডা.

মো. আশরাফ উল মতিন (সাগর)-এর অধীনে চিকিৎসা করাচ্ছেন। গত শনিবার (৫ এপ্রিল) তার মাকে নিয়ে ওই চিকিৎসকের কাছে যান। কিছু পরীক্ষার পর চিকিৎসক জানান, রোগীর হাড় অত্যন্ত দুর্বল হয়ে গেছে এবং এটি অস্টিওপরোসিস পর্যায়ে পৌঁছেছে।

চিকিৎসক Aclasta 5mg নামের একটি ইনজেকশন প্রেস্ক্রাইব করেন, যার দাম বাজারে প্রায় ৩৮ হাজার টাকা বলে তিনি দাবি করেন। তবে চিকিৎসকের সহকারী বিজয় সরকার ইনজেকশনটি ৩৪ হাজার ৫০০ টাকায় সরবরাহ করবেন বলে জানান। চিকিৎসক তার সহকারীর মোবাইল নম্বরটি প্রেসক্রিপশনের পিছনে লিখে দেন এবং তার মাধ্যমেই ইনজেকশন প্রয়োগের কথা বলেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১০ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) সকালে রোগীকে নিয়ে তারা হাসপাতালে যান। কিছু ওষুধ কিনে আনার পর চিকিৎসকের সহকারী বিজয় সরকার ইনজেকশন প্রয়োগ করেন। তবে ইনজেকশনের আসল বোতল না দিয়ে মোড়ক দেখিয়ে বলেন, ‘এটাই প্যাকেট, ছবি তুলে পাঠিয়ে দিন। ইনজেকশন দিয়ে ফেলি, আমার তাড়া আছে।’

ইনজেকশন প্রয়োগের পর যখন রোগীর মেয়ে ফারজানা আক্তার বিথী ইনজেকশনের বোতলটি চেয়ে নেন, তখন দেখা যায় সেটি Aclasta নয়, বরং অন্য একটি ইনজেকশন যার বাজারমূল্য মাত্র ৪ হাজার ৮০০ টাকা। এসময় তারা বোতলটি জোর করে নিয়ে নেন এবং মোবাইলে ভিডিও করে পুরো প্রক্রিয়া ধারণ করেন।

পরবর্তীতে তারা ডা. আশরাফ উল মতিন ও হাসপাতাল ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কেউ তেমন সাড়া দেননি। 

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ওষুধ একই, শুধু নামের পার্থক্য। প্রকৃতপক্ষে বোতলের ওপর নতুন স্টিকার লাগিয়ে ভুয়া ওষুধ চালিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর পরিবারের।

এ বিষয়ে ডা. আশরাফ উল মতিন বলেন, “ঘটনার সময় আমি চেম্বারে ছিলাম না। ঘটনাটি আমার সহকারী নিজেই ঘটিয়েছে। তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

মুন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আব্দুল বাকি আনিসকে ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।

এ বিষয়ে কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. আলী নুর মো. বশির আহমেদ বলেন, “আমার কাছে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ঢাকা/রুবেল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইনজ কশন প র র ইনজ কশন র সহক র চ ক ৎসক

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ, চালক আটক

ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক কলেজছাত্রীকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। নবীগঞ্জ-শেরপুর সড়কে রোববার রাতে যাত্রীবাহী বাসে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই ছাত্রীর চিৎকার শুনে স্থানীয় জনতা সড়কের তিনতালাব পুকুর পাড় নামক স্থানে বাসটি আটক করে এবং বাসের ড্রাইভারকে আটক করে সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করে। এসময় বাসের হেলপার পালিয়ে যায়।
 
পরে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য ওই কলেজ ছাত্রী ও ড্রাইভারকে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে। এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

জানা যায়, ঢাকায় একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে ওই ছাত্রী। রোববার সকালে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে একটি বাসে উঠেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি যেতে বানিয়াচং যাওয়ার পথে শায়েস্থাগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডে নামার কথা থাকলেও তিনি বাসের মধ্যে ঘুমিয়ে যান। ফলে বাস তাকে শায়েস্থাগঞ্জে না নামিয়ে শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টায় ওই কলেজছাত্রী একটি লোকাল বাসে উঠে। সেই বাসে কয়েকজন যাত্রী ছিল, বাসটি নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি নামক স্থানে পৌঁছালে অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। এরপর ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে বাসের চালক ও হেলপার তাকে বাসে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

এ বিষয়ে ওই ছাত্রী জানায়, তিনি ঢাকায় একটি কলেজে লেখাপড়া করেন। তার পরিবারের সবাই ঢাকায় থাকে তিনি ঢাকায় ঈদ করেছে। ঈদের ছুটিতে তিনি বাড়ি আসেননি এই জন্য আজকে গ্রামের বাড়িতে আসছিলেন।

বানিয়াচং থানার সেনাক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা কলেজছাত্রী ও বাস চালককে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করেছি।

এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি দুলাল মিয়া জানান, ঘটনার পর বাস চালককে আটক করা হয়েছে এবং হেলপার পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে মামলা লেখার কাজ চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ