ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, “স্বাধীনতার পর সব রাজনৈতিক দলকেই ক্ষমতায় দেখেছি, দেখেছি সবার দুর্নীতি। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি কেউই এর বাইরে নয়। দুর্নীতিতে বিএনপি পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এদেশে নির্বাচন করতে হলে আগে সংস্কার চাই। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন দিলে চাঁদাবাজরাই আবার ক্ষমতায় আসবে।”

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর বাস টার্মিনালে রায়পুর উপজেলা ইসলামী আন্দোলনের তৃণমূল প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ফয়জুল করীম বলেন, “নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে জুলাই অভ্যুত্থানের রক্ত আজ বিফলের পথে। স্বাধীনতার এতো বছরেও জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেনি। সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি, মানবিক মর্যাদা শূন্যের কোটায়।” 

তিনি আরো বলেন, “শাসকরা নিজেদের আঙ্গুল ফুলিয়ে কলাগাছ বানালেও কৃষক-শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। ছাত্ররা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছে, অথচ শিক্ষাঙ্গন এখনো দলীয় ক্যাডারদের দখলে।”

ইসলামী আন্দোলনের এই নেতা বলেন, “আমরা ২০২৫-এর নতুন বাংলায় আর কোনো বৈষম্য দেখতে চাই না। ফ্যাসিবাদের কবর রচিত হোক অঙ্গীকার।”

আন্তর্জাতিক ইস্যুতে তিনি বলেন, “ফিলিস্তিন ও গাজায় বছরের পর বছর ধরে যে অমানবিক নির্মমতা চলছে, তা মানবতার জন্য এক কলঙ্কময় অধ্যায়। বিগত কয়েকদিনে হাজার হাজার নিরীহ নারী-শিশু হত্যা করা হয়েছে। এই দৃশ্য সহ্য করা যায় না। অবিলম্বে সেখানে হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে হবে। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ওআইসি ও আরব লীগসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।”

সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলনের উপজেলা সভাপতি মাওলানা আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে ও থানা সেক্রেটারি মাওলানা হেলাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- দলটির লক্ষ্মীপুর জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাওলানা দেলাওয়ার হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা মহিউদ্দীন, জেলা যুব আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা মোখলেছুর রহমান, ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি মো.

ইউনুস খান, শ্রমিক সহ-সভাপতি মাওলানা আবুল বাশার, থানা জয়েন্ট সেক্রেটারি মাওলানা কাওসার মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাঈনউদ্দিন চিশতি।

ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ