এফবিসিসিআই প্রশাসকের পদত্যাগ দাবি, আলটিমেটাম
Published: 12th, April 2025 GMT
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ দেওয়া প্রশাসক হাফিজুর রহমানের পদত্যাগ চেয়েছে সংগঠনের কয়েকজন সাবেক পরিচালকের নেতৃত্বে গঠিত এফবিসিসিআই স্বার্থ সংরক্ষণ পরিষদ। ওই পরিষদ গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানিয়েছে। প্রশাসকের পদত্যাগ এবং এফবিসিসিআই সংস্কারে সহায়ক কমিটি বাতিল করতে ১০ দিনের আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে।
গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন এফবিসিসিআই স্বার্থ সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন, সদস্য সচিব জালাল উদ্দীন, যুগ্ম আহ্বায়ক মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ, আবু মোতালেব, শফিকুল ইসলাম ভরসা। এরা সবাই এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন সাবেক পরিচালক হাফেজ হারুন।
লিখিত বক্তব্যে আনোয়ার হোসেন বলেন, গত বছর ১১ সেপ্টেম্বর ফেডারেশনের পর্ষদ বাতিল করে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য হাফিজুর রহমানকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তাঁকে ১২০ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত পর্ষদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে বলা হয়। কিন্তু তিনি প্রশাসক নিযুক্ত হয়ে পছন্দমতো ব্যক্তিদের নিয়ে সংস্কারের জন্য চার সদস্যের একটি সহায়ক কমিটি গঠন করেন। কমিটিতে একই সমিতি থেকে দু’জন রয়েছেন, যা বিধিসম্মত হয়নি। এ কমিটি সংস্কারের নামে নির্বাচন অনুষ্ঠানে কালক্ষেপণ করছে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, সম্প্রতি বিনিয়োগ সম্মেলনে এফবিসিসিআই থেকে প্রতিনিধি হিসেবে যাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তাদের অনেকেই এর সদস্য নন। অনেকেরই কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য নেই। তারা এফবিসিসিআইর হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। বিষয়টি প্রশাসকের নজরে আনার পরও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সাংবদিকদের প্রশ্নের জবাবে পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু মোতালেব বলেন, এফবিসিসিআইর কোনো বৈঠকে সাবেক কোনো সভাপতি বা পরিচালকদের ডাকা হয় না। নামধারী কিছু ব্যবসায়ী এসব বৈঠকে অংশ নেন। তিনি বলেন, এফবিসিসিআই এখন ভাতের হোটেল হয়ে গেছে। এখানে চাল-ডালের আড়ত নেই। কিন্তু চাল-ডাল ব্যবসায়ীদের আড্ডা আছে। এভাবে আর চলতে পারে না।
এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক মীর নিজাম উদ্দিন বলেন, একটা পক্ষ নির্বাচন চায় না। ছোট ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা এনবিআরের সঙ্গে আলোচনা করার সুযোগ থাকে না। তারা তাদের সমস্যার কথা শুধু এফবিসিসিআইকে জানাতে পারেন। কিন্তু নেতা না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এফবিসিসিআইর প্রশাসক হাফিজুর রহমান মোবাইল ফোনে সমকালকে বলেন, সংস্কারের প্রস্তাবনা সরকারের কাছে দেওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহে হয়তো সরকার এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। তাঁর পদত্যাগের দাবি ওঠার বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার তাঁকে নিয়োগ দিয়েছে। সরকার চাইলে তিনি চলে যাবেন। তবে কী জন্য পদত্যাগ চাওয়া হয়েছে, স্পষ্ট করা দরকার। তিনি মনে করেন, ব্যবসায়ীদের একটি অংশ সংস্কারকাজের বিরোধিতা করে আসছেন। সংস্কার হলে তাদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হতে পারে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবস য় দ র র পদত য গ সদস য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার পথে কোনো বাধা দেখছি না: নজরুল ইসলাম খান
আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনে বিএনপি কোনো বাধা দেখছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। আজ শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার পথে কোনো বাধা দেখছি না। যেহেতু বাধা দেখছি না, সেহেতু এটা না–ও হতে পারে, সেই দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। আমরা অপেক্ষা করছি, আশা করব শিগগিরই সরকার এ ব্যাপারে তাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য নিয়ে আসবে এবং নির্বাচন কমিশনকে সেই অনুযায়ী পরামর্শ দেবেন।’
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে যেসব প্রক্রিয়া করা প্রয়োজন বিএনপির পক্ষ থেকে তা করা হচ্ছে, তবে ৮২৬টির মধ্যে ৫১টি সুপারিশ নিয়ে ভিন্ন মত আছে।
এর আগে হাটহাজারীতে পৌঁছে সেখানে হেফাজতে ইসলামের প্রয়াত আমির মাওলানা শাহ আহমদ শফী ও জুনায়েদ বাবুনগরীর কবর জিয়ারত করেন বিএনপি এই দুই নেতা। পরে মাদ্রাসার মহাপরিচালক মুফতি খলিল আহমেদ কাশেমী এবং শায়খুল হাদীস শেখ আহমেদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
হাটহাজারী মাদ্রাসায় জুমার নামাজ আদায় শেষে সেখানে দুপুরের আহার করেন বিএনপির নেতারা। পরে তাঁরা চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির বাবুনগর আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম মাদ্রাসায় হেফাজত ইসলামের আমির মাওলানা শাহ মুহিববুল্লাহ বাবুনগরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রওনা হন।
বিএনপির দুই স্থায়ী কমিটির সঙ্গে দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মীর হেলাল উদ্দিন, উত্তর জেলা বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির নেতা নূর মোহাম্মদ, সরোয়ার আলমগীর; দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব হেলাল উদ্দিন, জাসাস চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি কাজী সাইফুল ইসলাম, ফটিকছড়ি উপজেলার বিএনপি আহ্বায়ক আজিম উল্লাহ বাহার প্রমুখ রয়েছেন।
বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সৌজন্য সাক্ষাতে হাটহাজারী মাদ্রাসায় গেছেন দলের নেতারা। বিএনপি নেতারা সৌজন্য সাক্ষাৎ বললেও আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দলটির নেতারা হেফাজতে ইসলামের নেতারাসহ আলেম-ওলামাদের সমর্থন ও সহযোগিতা চেয়েছেন।
গত ২০ জুলাই ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ সমাবেশে চট্টগ্রামে আসলে হাটহাজারী আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ নেতা-কর্মীরা। নাহিদ ইসলামের সঙ্গে ছিলেন দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, চট্টগ্রামের তত্ত্বাবধায়ক জোবাইরুল আরিফ প্রমুখ। নেতা-কর্মীরা হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী ও জুনায়েদ বাবুনগরীর কবর জিয়ারত করেন।