কুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশের ঘোষণা শিক্ষার্থীদের, পুলিশ মোতায়েন
Published: 13th, April 2025 GMT
বন্ধ থাকা খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েটে) ক্যাম্পাসে প্রবেশের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের হলে প্রত্যাবর্তনের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে অনেকটা উত্তেজনা বিরাজ করছে। কুয়েট প্রশাসন সার্বিক দিক বিবেচনা করে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করেছে।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুর ২ টায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ও হলে প্রবেশ করবেন বলে গত কয়েকদিন ধরে কুয়েট শিক্ষার্থীদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ (কুয়েট-১৯ পেজ) থেকে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। তবে হলে প্রবেশের জন্য কর্তৃপক্ষ তাদের ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানিয়েছে।
রবিবার ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, কুয়েটে প্রবেশের প্রধান ফটক এবং আইটি পার্কের গেটে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুয়েটে প্রবেশের অন্যতম কুয়েট পকেট গেটের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এক নিরাপত্তা কর্মী জানালেন রমজান মাস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি ঘোষণার পর থেকে গেটটি বন্ধ রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কমিটির সভাপতি প্রফেসর আবু ইউসুফ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে সার্বিক দিক বিবেচনা করে। শিক্ষার্থীদের প্রবেশ ঠেকাতে নিরাপত্তা জোরদার কিংবা পুলিশ মোতায়েন করা হয়নি। শিক্ষার্থীরা ইচ্ছা করলে আইডেন্টি কার্ড প্রদর্শন করে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে। তবে আবাসিক হলগুলো খোলার সিদ্ধান্ত না হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের হলে থাকার সুযোগ নেই। ১১ এপ্রিল ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট থানায় দুই গাড়ি পুলিশ চেয়েছিলাম। ১৮ ফেব্রুয়ারি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর থেকে ছাত্রদের নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আমরা কাজ করছি।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, হল বন্ধ থাকায় লেখাপড়া বিঘ্নিত হচ্ছে। অনেকের টিউশনিসহ আয়ের উৎস নষ্ট হচ্ছে। তারা শান্তিপূর্ণভাবে একসঙ্গে ক্যাম্পাসে ঢুকবেন। তারা যাতে ক্যাম্পাসে ফিরতে না পারেন সেজন্য কুয়েট কর্তৃপক্ষ নানা তৎপরতা চালাচ্ছে। এমনকি কুয়েট প্রশাসন বাইরের একজনকে উস্কানি দিয়ে তাকে দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করিয়েছে।
কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড.
এ ব্যাপারে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (নর্থ) আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, “কুয়েটের পরিস্থিতি তারা অবগত আছেন। ক্যাম্পাসের ২টি গেটে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।”
প্রসঙ্গত, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনার পর ২৫ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম ও আবাসিক হলগুলো বন্ধ ঘোষণা করেছিল কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/টিপু
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইসির ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠন করার নির্দেশ
বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ-সংক্রান্ত আলোচনা শেষে এমন নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ।
এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফররাজ হোসেন ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে যে অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত করা এবং তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন।
জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদবৈঠকে কমিশন সদস্যরা জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’
‘প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে’বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাঁদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তাঁরা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তাঁরা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে তাঁর (প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে আলোচনা করেছেন, মতামত দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেখানেই গিয়েছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, “আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?” আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে, সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।’