অভিনেতা আফরান নিশো। রাজধানীর সিনেপ্লেক্সসহ দেশের আরও কিছু প্রেক্ষাগৃহে চলছে এই তার নতুন সিনেমা ‘দাগি’। এটি তার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সিনেমা। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মুক্তির দিন এ সিনেমা দেখতে দর্শকের ভিড় দেখা গেছে। সম্প্রতি এ সিনেমাসহ অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে।

‘দাগি’ মুক্তির দিন থেকে এ সিনেমা দেখতে দর্শকের ভিড় দেখা গেছে। দর্শক প্রতিক্রিয়া কেমন লক্ষ্য করছেন.

..
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমি খুব একটা সরব না। তারপরও সিনেমার রিভিউ অনেক চোখে পড়েছে। সবচেয়ে বড় কথা সিনেমাটি মুক্তির পর থেকে আমি অনেকগুলো সিনেমা হলে গিয়েছি। তখন সরাসরি দর্শকের প্রতিক্রিয়া পেয়েছি। সিনেমাটি মানুষ দারুণ পছন্দ করেছে। নিজের কাজ দর্শকের কাছে প্রশংসিত হলে, মনে অনেক আনন্দ জাগে। নিজের ছবি নিয়ে একটা তো ইমোশন কাজ করে। সে জায়গা থেকে সবার প্রশংসা আমার কাছে উৎসাহ বলে মনে করি।

‘দাগি’ সিনেমায় নিজেকে ও অন্য শিল্পীদের কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
‘দাগি’ সিনেমার সব চরিত্র ভীষণ জটিল এবং কঠিন। এ চরিত্রগুলো যদি ভালোভাবে উপস্থাপন না হতো তাহলে নিশান (আমার) চরিত্রটা আসতই না। সব চরিত্রের ওপর দিয়ে নিশান চরিত্রের যাত্রা। ফলে নিশান চরিত্রটা দর্শক ভালোভাবে নিয়েছে। এ ছাড়া তমা মির্জা, সুনেরাহ বিনতে কামাল, রাশেদ মামুন অপু যা করেছেন, তাদের অভিনয় মুগ্ধ হয়ে দেখেছি। এখানে তমা মির্জা, সুনেরাহসহ যারা অভিনয়ে ছিলেন তাদের সবাইকে আমি একেকটি পিলার বলব। এর মধ্যে একটা পিলার যদি পড়ে যেত তাহলে এ সিনেমার কিছু থাকত না।

এর আগে একটি টিভি নাটকের জন্য গান করেছিলেন। এবার নিজের সিনেমার জন্য গাইলেন...
দাগির টাইটেল ট্র্যাক নিয়ে প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিলের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। তিনি একদিন আমাকে গানটির একটা ডেমো ভার্সন শুনিয়ে জানতে চাইলেন, কেমন লেগেছে। আমি বললাম, ক্যাচি অ্যান্ড পাওয়ারফুল। গানটা নিয়ে কী করা যায়? এটি ভাবতে ভাবতে একসময় আমাকে জানানো হয়, গানটিতে আমি কণ্ঠ দিলে কেমন হয়? এটি তাঁর জন্য একরকম সারপ্রাইজ ছিল। এরপর নিধি [আরাফাত মহসীন] আমাকে ফোন করে স্টুডিওতে ডাকে। কিছু সংযোজন-বিয়োজনের পর গানটিতে ভয়েস দিই। নিধি সব ঠিকঠাক করে ৪৫-৪৫ মিনিটের মধ্যে গানটি রেডি করে আমাকে দিয়েছে। ফলে এ গানের পুরো কৃতিত্ব নিধির।

‘সুড়ঙ্গ’ ও ‘দাগি’ গল্পনির্ভর সিনেমা। এ ধারাতেই এগিয়ে যাবেন?
আপনি যদি টেলিভিশনে আমার কাজগুলো দেখেন, তাহলে দেখবেন, শুরু থেকেই আমি ভালো গল্পের সঙ্গে থাকতে চেয়েছি সবসময়। সেই সূত্র ধরে আমার অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘সড়ঙ্গ’তে কাজ করেছি। এরপর গল্পের কারণে দুই বছর পর ‘দাগি’ করলাম। আমি সব সময় চাই, গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে সিনেমায় অভিনয় করতে, যেখানে গল্পটিও একটি চরিত্র হবে। সেই দিক থেকে ‘দাগি’র গল্প খুব ভালো লেগেছে। সামনে আমি কমেডি, অ্যাকশন আর রোমান্টিক যে ঘরানার কাজ করি না কেন, সেখানেও একই চিন্তা থাকবে।

এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, এখন থেকে নিয়মিত সিনেমায় কাজ করবেন। তা বছরে কয়টি সিনেমায় অভিনয়ের পরিকল্পনা আছে?
দেখুন, আমাদের দেশে দর্শক অনুপাতে কিন্তু ভালো সিনেমা নেই। একেক জনের তিনটি করে সিনেমা হলে ভালো সিনেমার সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫ থেকে ২০-এর ঘরে। দর্শকের চাহিদা অনুযায়ী সিনেমা বানানো উচিত। দর্শক ঈদের মধ্যে ভালো সিনেমা দেখছে। পুরো বছর সিনেমা না থাকলে দর্শক দেখবে কী! দর্শককে আশাহত না করে সুন্দর সিনেমা দেওয়া উচিত। সেই জায়গা থেকে আমি চিন্তা করেছি ঈদসহ বছরে তিনটি সিনেমায় অভিনয় করব। শুধু একা বেঁচে লাভ নেই। আমাদের সবার বাঁচতে হবে।

নাটক-ওটিটিতে আপনাকে আর দেখা যাবে না?
নাটক দিয়ে আমার অভিনয়ে যাত্রা শুরু। নাটক আমার শিকড়। এটি আমি কখনোই ভুলি না, ভুলবোও না। মাঝে ওটিটিতে কিছু কাজ করেছি। বড়পর্দায় কাজ করতে গেলে ছোটপর্দায় সময় বের করাটা অনেক কঠিন। আমার পক্ষ থেকে কোনো মাধ্যমে না নেই। সময় সুযোগ এলে সব মাধ্যমে কাজ করব।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আফর ন ন শ ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

কোরবানির গরু কেনার আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতে ব্যবসায়ী জাকিরকে হত্যা করা হয়

রাজধানীর সবুজবাগের প্লাস্টিক ব্যবসায়ী জাকির হোসেনের সঙ্গে থাকা আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতেই ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাঁকে ছয় টুকরা করে লাশ বস্তায় ঢুকিয়ে কাছের একটি ঝোপের ভেতরে পুঁতে রাখা হয়। এর আগে আজহারুল ইসলাম (গ্রেপ্তার) মুঠোফোনে সবুজবাগের ভাইগদিয়ায় তাঁর ভাড়া বাসায় জাকিরকে (৫৫) ডেকে নেন।

গ্রেপ্তার আজহারুল ইসলাম (৩৯) আজ শুক্রবার আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা বলেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। আদালত তাঁর জবানবন্দি নিয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ ছাড়া এ হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার শুক্কুর আলী (৪৪), মো. রাজীব (২৬) ও স্বপনকে (২৫) পাঁচ দিন করে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। গ্রেপ্তার শুক্কুর আলী পেশায় রাজমিস্ত্রি এবং বাকিরা রংমিস্ত্রি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সবুজবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সামছুল আমিন আজ প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার আজহারুল, শুক্কুর আলী, রাজীব ও স্বপন জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় দুপুরে তাঁদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পাঠানো হয়। এর মধ্যে আজহারুল আদালত জবানবন্দি দেন। অপর তিনজন জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। পরে তাঁদের সাত দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার তদন্ত–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আজহারুল আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, জাকির হোসেনের সঙ্গে তাঁদের চারজনের (আজহারুল, শুক্কুর আলী, রাজীব ও স্বপন) বন্ধুত্ব ছিল। তাঁরা একসঙ্গে আড্ডা দিতেন। মাঝেমধ্যে জাকিরের সঙ্গে তাঁর ভাইগদিয়ার ভাড়া বাসায় তাঁরা একসঙ্গে মদ্যপান করতেন। ৪ জুন রাতে জাকির নন্দীপাড়ায় শেখের বাজারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে বাসায় ফিরছিলেন। তখন আজহারুল মুঠোফোনে জাকিরকে তাঁর বাসায় ডেকে নেন। ওই বাসায় আজহার একা থাকতেন। আগেই জাকির তাঁদের জানিয়েছিলেন, তাঁর কাছে কোরবানির গরু কেনার আড়াই লাখ টাকা আছে এবং ডেমরার আমুলিয়া পশুরহাট থেকে কোরবানির জন্য গরু কিনবেন। জাকির তাঁর বাসায় পৌঁছানোর পর ওই টাকার ওপর তাঁদের সবার লোভ জাগে। তাঁরা টাকা ছিনিয়ে নিতে গেলে জাকির বাধা দেন। তখন ইস্পাতের পাইপ দিয়ে জাকিরের মাথায় সজোরে আঘাত করেন আজহারুল। এতে জাকির অচেতন হয়ে যান। এ সময় তাঁর কাছ থেকে এক হাজার টাকার দুটি বান্ডিল ছিনিয়ে নিয়ে সেই টাকা শুক্কুর আলীর কাছে জমা রাখেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, আজহারুল আদালতকে জানান, জাকিরকে বাঁচিয়ে রাখা হলে তাঁরা সবাই ফেঁসে যাবেন—এমন আশঙ্কায় জাকিরকে হত্যা করে লাশ গুম করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জাকিরের শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। এরপর শুক্কুর, রাজীব ও স্বপন তাঁর শরীর টুকরা টুকরা করেন। পরে লাশের ছয়টি টুকরা রঙের দুটি পাত্রে ভরে একটি অটোরিকশায় করে দক্ষিণ ভাইগদিয়ায় নিয়ে যান। শুক্কুর, রাজীব ও স্বপন অন্য পথ দিয়ে দক্ষিণ ভাইগদিয়ায় আসেন। তখন তাঁরা সবাই মিলে বালতিভর্তি লাশের টুকরাগুলো পাশের ঝোপে নিয়ে যান। এরপর সেখানে খুঁড়ে লাশের টুকরাগুলো পুঁতে রাখেন।

আজহারুল আদালতকে বলেন, জাকিরের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া টাকা ভাগাভাগি করার আগেই তাঁরা পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।

পুলিশ কর্মকর্তা সামছুল আমিন বলেন, আজহারুলের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাহেরচরে। বাকি তিনজন ঢাকার সবুজবাগের ভাইগদিয়ার স্থায়ী বাসিন্দা।

প্লাস্টিক ব্যবসায়ী জাকির হোসেন সপরিবার সবুজবাগ থানার ভাইগদিয়া এলাকায় থাকতেন। ৪ জুন জাকির হোসেন নিখোঁজ হন। এরপর স্বজনেরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তাঁর সন্ধান পাননি। পরদিন জাকির নিখোঁজ রয়েছেন বলে তাঁর স্ত্রী রেখা বেগম সবুজবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এর মধ্যে জাকিরের খোঁজ না পাওয়ায় তিনি ১০ জুন আজহার আলীসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে সবুজবাগ থানায় একটি অপহরণের মামলা করেন।

পুলিশ কর্মকর্তা সামছুল আমিন বলেন, এ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এলাকার ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত আজহারুলকে শনাক্ত করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আজহারের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যায় জড়িত অভিযোগে গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অপর তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল রাতে জাকির হোসেনকে ভাইগদিয়ায় দাফন করা হয়।

সবুজবাগ থানার ওসি ইয়াছিন আলী প্রথম আলোকে বলেন, জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে জাকিরকে হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করলেও তদন্তে এখন পর্যন্ত এর সত্যতা পাওয়া যায়নি। জাকির হত্যায় আরও একজন জড়িত। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুরনো স্বাদের ঝুরা মাংসের
  • ভাত খাওয়ার সময় কেন ভাতটাই পরে খেতে বলেন চিকিৎসকেরা?
  • অ্যান্টার্কটিকায় বিরল স্কুইডের সন্ধান
  • পানিতে ভাসছিল ২২ দিনের শিশুর মৃতদেহ, ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন মা
  • বাঁধন কাঁদলেন, কিন্তু কেন...
  • মামাত বোনকে ধর্ষণ-হত্যা করে নিখোঁজের গল্প সাজায় নয়ন: পুলিশ
  • আমাদের যত ঘুঘু 
  • বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচের নিয়ম পাল্টাচ্ছে এমসিসি
  • কমিটি নেই, সবাই নেতা
  • কোরবানির গরু কেনার আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতে ব্যবসায়ী জাকিরকে হত্যা করা হয়