ন্যাশনাল ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে শরীয়তপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং সাবেক উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীমসহ ১৯ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের পৃথক দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।

নিষেধাজ্ঞা দেওয়া অন্যরা হলেন-রন হক শিকদার, রিক হক শিকদার, আলম আহমেদ, হরিদাস বর্মন, আরিফ মুহাম্মদ শহীদুল হক, এ এস এম বুলবুল, এম এ ওয়াদুদ, চৌধুরী মোস্তাক আহমেদ, মোয়াজ্জেম হোসেন, আলহাজ্ব খলিলুর রহমান, জাকারিয়া তাহের, মাবরুল হোসেন, নাহিদ সারওয়ার, মোস্তফা মঈন সারওয়ার, রুমি ইমরোজ রশিদ, সৈয়দ শাহ আব্দুল বারি, মনোয়ারা সিকদার, নাইমুজ্জামান ভূইয়া।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানান, দুদকের পক্ষে আবেদন দুটি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক আশিকুর রহমান। আদালত আবেদন দুটি মঞ্জুর করেন।

এনামুল হক শামীমসহ ১৩ জনের আবেদনে বলা হয়, আসামিরা ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড এর গুলশান শাখা থেকে মরিয়ম কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের নামে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য সম্বলিত রেকর্ডপত্র তৈরি করে এবং তা জেনে শুনে খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে পরস্পর যোগসাজশে একে অপরের সহায়তায় অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে ৩০০ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর ও বিতরণ দেখিয়ে ঋণের অর্থ সুদসহ মোট ৫৮৩ কোটি ১৩ লাখ ৩ হাজার ৮৪৮ টাকা পরিশোধ না করে আত্মসাৎ করেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আসামিরা দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে যেতেন পারেন মর্মে বিশ্বস্তসূত্রে জানা যায়। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের বিদেশ যাওয়া বন্ধ করা প্রয়োজন।

আরেক আবেদনে বলা হয়, আসামিরা ন্যাশনাল ব্যাংক লিসিটেডের কুয়াকাটা শাখা থেকে দি ভিউ হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেডের নামে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য সম্বলিত রেকর্ডপত্র সৃষ্টি করে ও তা জেনে শুনে খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে পরস্পর যোগসাজশে একে অপরের সহায়তায় অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে ৪০ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর ও বিতরণ দেখিয়ে ঋণের অর্থ স্থানান্তর, রুপান্তর ও হস্তান্তর করে সুদসহ মোট ৬১ কোটি ২১ লাখ ২০ হাজার ২৭৯ টাকা পরিশোধ না করে আত্মসাৎ করেন। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আসামিরা দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়ন করতে পারেন বলে জানা যায়। এজন্য তাদের বিদেশ যাওয়া বন্ধ করা প্রয়োজন।

ঢাকা/মামুন/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে ইরানের নতুন হামলায় নিহত আরও ৩, আহত ২৯

ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে অন্তত চার জায়গায় হামলা চালিয়েছে ইরান। এ হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জেরুজালেম পোস্ট।

আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ