শামীমসহ ১৯ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
Published: 13th, April 2025 GMT
ন্যাশনাল ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে শরীয়তপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং সাবেক উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীমসহ ১৯ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের পৃথক দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
নিষেধাজ্ঞা দেওয়া অন্যরা হলেন-রন হক শিকদার, রিক হক শিকদার, আলম আহমেদ, হরিদাস বর্মন, আরিফ মুহাম্মদ শহীদুল হক, এ এস এম বুলবুল, এম এ ওয়াদুদ, চৌধুরী মোস্তাক আহমেদ, মোয়াজ্জেম হোসেন, আলহাজ্ব খলিলুর রহমান, জাকারিয়া তাহের, মাবরুল হোসেন, নাহিদ সারওয়ার, মোস্তফা মঈন সারওয়ার, রুমি ইমরোজ রশিদ, সৈয়দ শাহ আব্দুল বারি, মনোয়ারা সিকদার, নাইমুজ্জামান ভূইয়া।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানান, দুদকের পক্ষে আবেদন দুটি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক আশিকুর রহমান। আদালত আবেদন দুটি মঞ্জুর করেন।
এনামুল হক শামীমসহ ১৩ জনের আবেদনে বলা হয়, আসামিরা ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড এর গুলশান শাখা থেকে মরিয়ম কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের নামে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য সম্বলিত রেকর্ডপত্র তৈরি করে এবং তা জেনে শুনে খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে পরস্পর যোগসাজশে একে অপরের সহায়তায় অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে ৩০০ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর ও বিতরণ দেখিয়ে ঋণের অর্থ সুদসহ মোট ৫৮৩ কোটি ১৩ লাখ ৩ হাজার ৮৪৮ টাকা পরিশোধ না করে আত্মসাৎ করেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আসামিরা দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে যেতেন পারেন মর্মে বিশ্বস্তসূত্রে জানা যায়। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের বিদেশ যাওয়া বন্ধ করা প্রয়োজন।
আরেক আবেদনে বলা হয়, আসামিরা ন্যাশনাল ব্যাংক লিসিটেডের কুয়াকাটা শাখা থেকে দি ভিউ হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেডের নামে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য সম্বলিত রেকর্ডপত্র সৃষ্টি করে ও তা জেনে শুনে খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে পরস্পর যোগসাজশে একে অপরের সহায়তায় অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে ৪০ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর ও বিতরণ দেখিয়ে ঋণের অর্থ স্থানান্তর, রুপান্তর ও হস্তান্তর করে সুদসহ মোট ৬১ কোটি ২১ লাখ ২০ হাজার ২৭৯ টাকা পরিশোধ না করে আত্মসাৎ করেন। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আসামিরা দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়ন করতে পারেন বলে জানা যায়। এজন্য তাদের বিদেশ যাওয়া বন্ধ করা প্রয়োজন।
ঢাকা/মামুন/সাইফ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।