মা-বাবার সঙ্গে হালখাতায় যেতাম: মিমি চক্রবর্তী
Published: 14th, April 2025 GMT
বাঙালির কাছে পহেলা বৈশাখ মানেই স্মৃতিবিধুরতা। সাজ-পোশাক থেকে খাবার, আড্ডা, হালখাতা— সবকিছুতেই বাঙালিয়ানার ছোঁয়া। যদিও সময়ের সঙ্গে এসবের অনেক কিছু বদলে গেছে। নববর্ষ উপলক্ষে পহেলা বৈশাখ নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে স্মৃতিকথা লিখেছেন ভারতীয় বাংলা সিনেমার অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী।
ছোটবেলায় মা বলতেন, ‘নতুন বছরে তুমি যা করবে, সারাবছর সেরকমই চলবে।’ তাই কাজ দিয়ে শুরু করাটাই আমার মনে হয়, সবথেকে ভালো। আর কাজ মানেই আমার কাছে ‘হ্যাপি প্লেস’। এবারের পহেলা বৈশাখে আমার ‘রক্তবীজ টু’-এর শুটিং রয়েছে। সেটেও খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। নববর্ষে খাওয়াদাওয়া আমার কাছে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। শুধু পহেলা বৈশাখ বলে নয়, আমি বরাবরই খাদ্যরসিক। কিন্তু যেদিন থেকে নিরামিষাশী হয়ে গিয়েছি, সেদিন থেকে অবশ্য খুব একটা খাওয়া হয় না। অগত্যা মিষ্টিটাই এখন আমার কাছে সবথেকে প্রিয়। নতুন বছরের শুরুটা হোক মিষ্টি দিয়েই। বছরভর মিষ্টি কাটুক, এই কামনা রাখি। আমি যেহেতু পোলাও খেতে খুব ভালোবাসি, তাই পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বাড়িতে পোলাও রান্না হবে।
প্রতিবছর পহেলা বৈশাখে আমাদের বাড়িতে পূজা হয়। ছোটবেলা থেকেই সেই রীতি দেখে আসছি। এদিন আমাদের বাড়ির সব ঠাকুররাও নতুন জামাকাপড় পরেন। শুধু নিজেরাই নতুন পোশাক পরলেই হবে? এছাড়াও মরশুমের প্রথম ফল ওনাকেই উৎসর্গ করা হয়। সারাবছর কাজের সূত্রে তো সকলের তেমন একসঙ্গে হওয়া হয় না। তাই পহেলা বৈশাখে সবাই একজোট হওয়ার চেষ্টা করি। আমার অবশ্য এ বছর সারারাত শুটিং রয়েছে। আর এদিন তো নতুন জামাকাপড় পরা মাস্ট!
আরো পড়ুন:
মিমি চান না বিয়ে হোক, সংসার হোক
মিমিকে ধর্ষণের হুমকিদাতাদের খুঁজছে পুলিশ
আমাদের বাড়িতে নববর্ষ উপলক্ষে একটা চল রয়েছে। সেটা হলো— পরস্পরকে উপহার দেওয়া। বিশেষ করে, এই উৎসবে নতুন জামাকাপড় কেনার সামর্থ নেই, তাদের জন্যই বেশি কেনাকাটা করা হয়। ছোটবেলা থেকে বাড়িতে মা-বাবাকে এই রীতি পালন করতে দেখে এসেছি। আমিও সেটাই করি। আমার দিদা বলতেন, ‘শুধু নিজে খুশি থাকলেই হয় না। অন্যকে খুশি রাখাটাও একটা দায়িত্ব।’ আর নববর্ষে এটা ম্যান্ডেটারি। যাতে তুমি সারাবছর নিজের আনন্দে অন্যকেও শামিল করতে পারো। আমার মনে হয়, এই দায়িত্বটা সবাই নিতে পারেন না। এটা ঈশ্বরপ্রদত্ত। উনি কোনো একজনকে দায়িত্ব দেন, চারপাশের মানুষগুলোকে খুশি রাখার। এটাও একপ্রকার নববর্ষের রেজলিউশন। আমি চেষ্টা করি বছরভর সেটা পালন করার।
মনে পড়ে, ছোটবেলায় জলপাইগুড়িতে এই দিনটায় মা-বাবার সঙ্গে হালখাতায় যেতাম। এছাড়াও সারাদিন সব আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে হইহই করে কাটাতাম। দিদু আমাদের সবাইকে নতুন জামা দিতেন। আর ওই নতুন জামা পরেই পূজায় বসতাম। আমার মামার যেহেতু নিজের হোলসেল মুদিখানার দোকান রয়েছে। কাজেই পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে পূজা হতো। তাই সকাল সকাল মামার দোকানে পৌঁছে যেতাম। আমার দায়িত্ব ছিল, তরমুজ কাটা। কখনো কখনো আবার ফলফলাদি সাজিয়ে রাখা।
যত মিষ্টি আসত, সেগুলো প্যাকেট করার দায়িত্ব আমার আর দিদিভাইয়ের উপর থাকত। বাক্সে দেওয়ার আগে অবশ্য বেশিরভাগ নিজেই খেয়ে ফেলতাম! আর ক্যালেন্ডার সংগ্রহ করতাম। কে কতগুলো কালেক্ট করলাম, সেটা রীতিমতো কম্পিটিশন হতো। মনে পড়ে, হলুদ রঙের প্যাকেটে রকমারি লাড্ডু, দরবেশ আসত। রাত্রিবেলা ভাই-বোনেরা একত্রিত হয়ে দেখতাম, কে কতগুলো, কোন লাড্ডু সংগ্রহ করতে পেরেছে। দারুণ মজার স্মৃতি। আশেপাশের গ্রাম থেকে আমন্ত্রিত অনেকে আসতেন। পহেলা বৈশাখে কেউ যেন মিষ্টিমুখ না করে যান, সেদিকটা বরাবর নজরে থাকত বাড়ির বড়দের।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র নত ন জ ম উপলক ষ নববর ষ আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট সময়কালে ফ্যাসিবাদী শক্তি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে, এসবির প্রতিবেদন
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কর্মসূচি পালনকালে ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইন-অফলাইনে প্রচারণা চালিয়ে সারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)।
গতকাল সোমবার এসবির এক প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনটি পুলিশের সব বিভাগকে পাঠিয়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছে এসবি। এসবির একটি সূত্র প্রথম আলোকে এই প্রতিবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সামাজিক সংগঠনগুলো ১ জুলাই থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। এই ধারাবাহিকতায় ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত কর্মসূচি পালনের সময়কাল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করে বিতাড়িত ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইন-অফলাইনে প্রচারণা চালিয়ে দেশব্যাপী নৈরাজ্য সৃষ্টি, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির কর্মসূচিতে বাধা প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা চালাতে পারে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ও জানমাল রক্ষায় পুলিশের বিভিন্ন বিভাগকে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে এসবি।
নির্দেশনাগুলো হলো ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা। ৮ আগস্ট পর্যন্ত নিয়মিত সন্দেহজনক ব্যক্তিসহ মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও অন্যান্য যানবাহন তল্লাশি করা। বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশন ও বিমানবন্দরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল অভিযান পরিচালনা করা। মোবাইল প্যাট্রোল জোরদার করা। গুজব রোধে সাইবার পেট্রোলিং কার্যক্রম অব্যাহত রাখাসহ গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা।
এ ছাড়া কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকলে তা তাৎক্ষণিকভাবে এসবিকে অবহিত করার কথাও বলা হয়েছে।