মাছ শিকারে সমুদ্রে ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু আজ
Published: 15th, April 2025 GMT
সুষ্ঠু প্রজনন ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে সাগরে ৫৮ দিনের জন্য মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) থেকে। ৬৫ দিন থেকে সাতদিন কমিয়ে ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার।
জেলেদের দীর্ঘ দিনের দাবি ‘ভারত-বাংলাদেশ একই সময়ে সাগরে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা’ বাস্তবায়ন হয়েছে এবার। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে সহায়তার চাল নিয়ে নয়ছয় বন্ধের পাশাপাশি, জেলে কার্ড সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন জেলেরা।
আজ সকালে দেশের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বরগুনার পাথরঘাটা বিএফডিসি ঘাটে শত শত ট্রলার নোঙর করে থাকতে দেখা গেছে। কর্মহীন সময়ে বরগুনা উপকূলের জেলেরা জাল-দড়ি মেরামতে ব্যস্ত থাকলেও নোয়াখালী-চট্টগ্রামসহ দূর দূরান্তের জেলেরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন বাড়ি ফেরার।
আরো পড়ুন:
জেলের জালে ধরা পড়লো ১২ কেজির কোরাল
জেলের জালে ৩৪ কেজির ভোল মাছ, সাড়ে তিন লাখে বিক্রি
বিএফডিসি ঘাটে নোঙর করা এফবি নিলয়-২ ট্রলারের ১৮ জেলে জাল-দড়ি গুছিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছেন নিজ নিজ বাড়ি ফেরার। ট্রলারের মাঝি ফোরকান উদ্দিন বিশ্বাস জানান, সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাতে বঙ্গোপসাগর থেকে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে ফিরেছেন তারা। ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞার কারণে এখন স্বজনদের কাছে ফিরছেন তারা।
তিনি বলেন, “বিগত বছরগুলোতে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশি জেলেরা মাছ শিকার থেকে বিরত থাকলেও ভারতীয় জেলেরা বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় অনুপ্রবেশ করে মাছ শিকার করে নিয়ে যেত। এবার প্রথম নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে ৫৮ দিন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ভারতের সঙ্গে মিলিয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বাংলাদেশে। এর সুফল মিলবে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর।”
এফবি বরকত ট্রলারের জেলে হাবিব জানান, বাংলাদেশ ও ভারতে একই সময়ে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় খুশি জেলেরা। নিষেধাজ্ঞার সময়ে তারা বেকার থাকলেও নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন। ভারতীয় জেলেদের অনুপ্রবেশ, অবৈধ জালে মাছ শিকারসহ নানা কারণে সাগরে মাছের পরিমাণ কমেছে বলেও জানান তিনি। ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞায় সাগরে মাছের প্রজনন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন এই জেলে।
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে নোঙর করা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের এফবি তরিকুল ট্রলারের জেলেরা বলেন, বেকার সময়ে বরাদ্দের চাল নিয়ে নয়ছয় করে জনপ্রতিনিধিরা। অভিযোগ রয়েছে জেলে কার্ড নিয়েও।
জেলেরা অভিযোগ করে জানান, বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন সময়ে জেলেকার্ডে অনিয়ম করেছেন জনপ্রতিনিধি ও দায়িত্বরতরা। প্রকৃত জেলেদের তালিকায় নিবন্ধিত করা হয়নি। রিকশাচালক, ভ্যানচালক, মুদি দোকানীসহ ভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ পেয়েছিলেন জেলেকার্ড। জেলে তালিকা পুনরায় সংশোধন করে প্রকৃত জেলেদের নিবন্ধিত করার দাবিও তোলেন তারা।
ট্রলারের মাঝি আবু হানিফ বলেন, “সহায়তার চাল নিয়ে নয়ছয় করে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা। প্রকৃত জেলেদের সহায়তা না দিয়ে সহায়তা দেওয়া হয় জনপ্রতিনিধিদের স্বজনদের।” চাল বিতরণে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো.
ঢাকা/ইমরান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ৫৮ দ ন র ন ষ ধ জ ঞ সহ য ত মৎস য
এছাড়াও পড়ুন:
সিজারের সময় নবজাতকের পা ভেঙে ফেলার অভিযোগ
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সিজারিয়ান অপারেশনের সময় এক নবজাতকের পা ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ক্লিনিকের চেয়ারম্যান ও আবাসিক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে বিষয়টি নিয়ে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে নবজাতকসহ তাদেরকে ক্লিনিক থেকে বের করে দেওয়া হয়। ওই রাতেই শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম হাসপাতালে) নেওয়া হয়।
অভিযুক্ত চিকিৎসক পার্থ সমদ্দার কলাপাড়া পৌর শহরের জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আবাসিক চিকিৎসক এবং চেয়ারম্যান।শিশুটির
স্বজনদের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) প্রসব বেদনা নিয়ে জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হন লালুয়ার ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার মেয়ে ও রফিকুলের স্ত্রী মিম বেগম। ওই রাতেই মিমের সিজারিয়ান অপারেশন করেন ডা. পার্থ সমদ্দার। সিজারের কিছুক্ষণ পরই টিকার কথা বলে নবজাতকের পায়ে একটি ইনজেকশন পুশ করা হয়। পরের দিন থেকেই নবজাতকের বাম পা ফুলতে শুরু করে এবং কান্না বাড়তে থাকে। বিষয়টি চিকিৎসক ও নার্সদেরকে অবহিত করলে তারা তাতে কর্ণপাত করেননি। উল্টো ওই ক্লিনিকের কর্মী ও নার্সরা নবজাতকের স্বজনদের সঙ্গে অসদাচরণের পাশাপাশি তাদের ক্লিনিক থেকে বের করে দেন। পরে অন্যত্র এক্সরে করে জানা যায়, সিজারের সময় নবাজতকের পা ভেঙে ফেলেছেন চিকিৎসক।
নবজাতকের মা মিম আক্তার বলেছেন, বাচ্চা অনবরত কান্না করলে প্রথমে নার্স ও পরে চিকিৎককে অবহিত করা হয়। বাচ্চার বাম ফুলে গেলে তা জানানো হয়। কিন্তু, তারা এর কোনো প্রতিকার না করে আমাদের ধমকাতে থাকেন। ক্লিনিক ছেড়ে চলে যেতে চাপ প্রয়োগ করেন।
নবজাতকের নানা সিদ্দিক বলেন, টিকার কথা বলে আমার নাতিকে শরীর অবশ করার ইনজেকশন দিয়েছিল নার্সরা। ইনজেকশনের কার্যকারিতা শেষ হওয়ার পরপরই আমার নাতি অনেক কান্না করে। আমার স্ত্রী নার্সদের বললে তারা তাকে মারধরের চেষ্টা করে। আমাদের সঙ্গে ক্লিনিকের সবাই অনেক খারাপ আচরণ করেছে। এভাবে রোগীদের সঙ্গে প্রাইভেট ক্লিনিকের কর্মকর্তারাও যদি অসদাচরণ করে, তাহলে আমরা কোথায় যাব?
সিজারের সময় নবজাকের পা ভাঙেনি, দাবি করে জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান ডা. পার্থ সমদ্দার বলেছেন, আমি শিশু বিশেষজ্ঞ নই। নবজাতককে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেছেন, যদি সিজারিয়ান অপারেশনের প্রশিক্ষণ থাকে, তাহলে এনেস্থেসিস্টও সিজার করতে পারেন। তবে, এনেস্থেসিস্ট একাই সিজারিয়ান অপারেশন করতে পারেন না।
ঢাকা/ইমরান/রফিক