ট্রাম্পের পথে জার্মানিও, ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করায় চারজনকে বিতাড়নের নির্দেশ
Published: 15th, April 2025 GMT
জার্মানির বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনপন্থীদের কণ্ঠরোধ করার অভিযোগ উঠেছে। দেশটি ফিলিস্তিনপন্থী চার বিদেশি নাগরিককে বিতাড়নের নির্দেশ দিয়েছে। ওই চারজনের কারও বিরুদ্ধেই অপরাধে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ নেই।
যাঁদের জার্মানি থেকে বিতাড়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের তিনজন ইউরোপীয় ও একজন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
চারজনই এ বছর জানুয়ারিতে ডাকযোগে প্রথম এ বিষয়ে চিঠি পান। ওই চিঠিতে তাঁদের স্বাধীনভাবে চলাচলের অধিকার হারানোর কথা জানানো হয়।
দুই মাস পর ওই চারজনের আইনজীবীরা তাঁদের মক্কেলের পক্ষে বার্লিনের অভিবাসন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বিতাড়নের নির্দেশসংবলিত চিঠি পান। তাঁদের ২১ এপ্রিলের মধ্যে জার্মানি ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, নতুবা তাঁদের জোর করে বিতাড়ন করা হবে।
ওই চার ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারী হলেন মার্কিন নাগরিক ২৭ বছর বয়সী কুপার লংবটম। তিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। বাকি তিনজন হলেন পোল্যান্ডের নাগরিক ৩৫ বছরের কাসা ব্লেচেক এবং দুই আইরিশ নাগরিক শেন ও’ব্রায়ান (২৯) ও রবার্টা মারে (৩১)।
এই চারজনই বার্লিনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন।
এই চারজনের বিরুদ্ধে আনা একটি পুলিশি অভিযোগ আল–জাজিরা দেখেছে। ওই অভিযোগে জার্মান কর্তৃপক্ষ বলেছে, ওই চার ব্যক্তি ইহুদিবিদ্বেষ ছড়িয়েছেন এবং উসকানি দিয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগও করা হয়েছে।
তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারে বাধা দেওয়া, সম্পদের ক্ষতি করা এবং শান্তি বিঘ্নিত করার মতো অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগও আনা হয়েছে।
ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার হয়েছেন ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিল। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ডধারী। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছেন মার্কিন অভিবাসন আদালতের এক বিচারক।
আরও পড়ুনফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী খলিলকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়ন করা যেতে পারে বলে বিচারকের মত১২ এপ্রিল ২০২৫আরও পড়ুনফিলিস্তিনের জন্য বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করছে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়৩০ এপ্রিল ২০২৪.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ ল স ত নপন থ ওই চ র
এছাড়াও পড়ুন:
পদ্মা নদীর ভাঙনের ঝুঁকিতে দৌলতদিয়ার তিনটি ফেরিঘাট
পদ্মা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ভাঙন বেড়ে যাওয়ায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ার তিনটি ফেরিঘাট ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। এ ছাড়া ঘাটসংলগ্ন বহু স্থাপনা রয়েছে ভাঙনের ঝুঁকিতে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয় সূত্র জানায়, দৌলতদিয়ার সাতটি ফেরিঘাটের মধ্যে ৩, ৪ ও ৭ নম্বর ঘাট সচল। ৬ নম্বর ঘাট থাকলেও এখনো সচল করা যায়নি। এ ছাড়া কয়েক বছর আগে ১, ২ ও ৫ নম্বর ঘাট নদীভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে।
গতকাল বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, দৌলতদিয়ার তিনটি ফেরিঘাটসহ মধ্যবর্তী এলাকার ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে ৪ ও ৭ নম্বর ফেরিঘাটে কিছু বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) সূত্র বলছে, দৌলতদিয়া ঘাটের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দেওয়ায় বর্তমানে সচল সব ঘাটই (৩, ৪ ও ৭ নম্বর) ভাঙনের ঝুঁকিতে। এর মধ্যে ৪ ও ৭ নম্বর ফেরিঘাট বেশি ঝুঁকিতে।
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘ভাঙন দেখা দেওয়ায় ফেরিঘাট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিআইডব্লিউটিএকে ত্বরিত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছি। তিনটি ঘাট সচল থাকলেও ভাঙন আরও বৃদ্ধি পেলে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএ আরিচা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী নেপাল চন্দ্র দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ফেরিঘাটের দুই কিলোমিটারজুড়ে ভাঙন দেখা দেয়। ৪ ও ৭ নম্বর ঘাট বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় জরুরি মেরামত ও সংরক্ষণকাজের অংশ হিসেবে তিন দিনে প্রায় সাত শ বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে। তবে ফেরিঘাটের মধ্যবর্তী এলাকায় বস্তা ফেলা হয়নি। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ মিললে বাকি কাজ করা যাবে।
ঘাটসংলগ্ন এলাকায় ভাঙনের ঝুঁকি
ঘাটসংলগ্ন বাহিরচর ছাত্তার মেম্বার পাড়া, মজিদ মাতুব্বর পাড়া, শাহাদত মেম্বার পাড়া, বাজার, মসজিদ, স্কুলসহ একাধিক স্থাপনা ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে অনেকে স্থাপনা সরিয়ে নিয়েছেন। ছাত্তার মেম্বার পাড়ার চারটি পরিবার তাদের ঘর সরিয়ে নিয়েছে।
ছাত্তার মেম্বার পাড়ার নদীর পাড়ের শেষ বসতি আলতাফ মোল্লার পরিবারের। বসতভিটা রক্ষা করতে না পেরে দুটি ঘর অন্যত্র সরিয়ে ফেলছে পরিবারটি। আলতাফ মোল্লার স্ত্রী সূর্য বেগম ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘ছয়বার ভাঙনে ভিটামাটি হারায়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছিলাম। এইবার ভাঙলে সাতবার হইবে। এখন কোথায় দাঁড়াব বলতে পারছি না। ঘর, টিনের চাল, জিনিসপত্র ভেঙে পাশে রাখছি। এখন কোথাও জায়গা হলে চলে যাব।’
স্থানীয় আলতাফ মোল্লা, শাহাদৎ প্রামাণিক ও ময়ান সরদার বলেন, ‘কয়েক দিনে যে হারে ভাঙছে, এভাবে ভাঙন চললে ফেরিঘাট, বাহিরচর ছাত্তার মেম্বার পাড়া, মজিদ মাতুব্বর পাড়া, শাহাদত মেম্বার পাড়াসহ অনেক স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।’