বিশ্বাসভঙ্গের মামলায় জাকারবার্গের বিচার শুরু, বিক্রি করতে হতে পারে ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ
Published: 15th, April 2025 GMT
মেটার প্রধান ও সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গের আলোচিত একটি মামলায় গতকাল সোমবার বিচারকাজ শুরু হয়েছে।
মার্ক জাকারবার্গের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপকে প্রতিযোগিতামূলকভাবে অধিগ্রহণ করা এড়াতে তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম (মেটা) বাজারক্ষমতার অপব্যবহার করেছে।
ফেডারেল ট্রেড কমিশনের (এফটিসি) কৌঁসুলিরা যুক্তি দিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক (পরে মেটা নাম গ্রহণ) বাজার প্রতিযোগিতাকে হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে ওই দুই প্রতিষ্ঠানকে ‘গ্রাস’ করেছে।
ইনস্টাগ্রামকে অধিগ্রহণ করাবিষয়ক ২০১২ সালের আরেকটি ই-মেইলে কোনো উন্নয়ন না করেই জনপ্রিয় এ অ্যাপ চালু রাখার ও ফেসবুকের নিজস্ব সেবার উন্নয়ন করার ইঙ্গিত দেওয়া হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল, ফেসবুকের হতাশ ব্যবহারকারীদের এ প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে যাওয়া এড়ানো।২০১১ সালে ফেসবুকের একটি অভ্যন্তরীণ ই-মেইলে সতর্ক করা হয়েছিল যে ইনস্টাগ্রাম স্মার্টফোনে একটি জনপ্রিয় অ্যাপ হয়ে উঠেছে এবং জাকারবার্গের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নেটওয়ার্ক (ফেসবুক) যা অফার দেয়, তা সহজেই অনুলিপি করতে পারে এটি।
ইনস্টাগ্রামকে অধিগ্রহণ করাবিষয়ক ২০১২ সালের আরেকটি ই-মেইলে কোনো উন্নয়ন না করেই জনপ্রিয় এ অ্যাপ চালু রাখার ও ফেসবুকের নিজস্ব সেবার উন্নয়ন করার ইঙ্গিত দেওয়া হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল, ফেসবুকের হতাশ ব্যবহারকারীদের এ প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে যাওয়া এড়ানো।
ইনস্টাগ্রামকে অধিগ্রহণ করার আগে এসব ই-মেইলকে প্রাথমিক কথাবার্তা হিসেবে খাটো করে দেখান মার্ক জাকারবার্গ।
আরও পড়ুনঅ্যাপলের নিন্দায় মার্ক জাকারবার্গ, কেন১৫ জানুয়ারি ২০২৫গতকাল ওয়াশিংটনের একটি ফেডারেল আদালতে এ মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হলে ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলাটির বিচার আর হবে না বলে আশা করছিলেন জাকারবার্গ। তবে এখন তাঁর সে আশায় ছেদ পড়েছে।
মামলায় হারলে ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ ছেড়ে দিতে বাধ্য হতে পারে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা, যা ওই দুই অ্যাপ কেনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জগতে বৈশ্বিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে।
তারা (মেটা) সিদ্ধান্ত নেয় যে প্রতিযোগিতা করাটা খুবই কঠিন। তাই প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামার চেয়ে এগুলো কিনে নেওয়াই সহজ।ড্যানিয়েল ম্যাথসন, এফটিসির অ্যাটর্নিমামলায় শুনানি শুরুর পর এফটিসির অ্যাটর্নি ড্যানিয়েল ম্যাথসন বলেছেন, ‘তারা (মেটা) সিদ্ধান্ত নেয় যে প্রতিযোগিতা করাটা খুবই কঠিন। তাই প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামার চেয়ে এগুলো কিনে নেওয়াই সহজ।’
তবে মেটার অ্যাটর্নি মার্ক হ্যানসেন এ বক্তব্যে পাল্টা যুক্তি দেন। তিনি বলেন, ‘কোনো প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য সেটি অধিগ্রহণ করা যুক্তরাষ্ট্রে বেআইনি নয়। ফেসবুক সেই কাজই করেছে।’
আরও পড়ুনমার্ক জাকারবার্গের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী০৪ অক্টোবর ২০২৪উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০২০ সালে মেটার বিরুদ্ধে ওই মামলা করা হয়। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হলে তিনি মামলাটি প্রত্যাহার করতে এফটিসিকে অনুরোধ করেন কি না, সেদিকে অনেকের নজর ছিল।
ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর বিশ্বের তৃতীয় ধনাঢ্য ব্যক্তি জাকারবার্গ একাধিকবার হোয়াইট হাউসে যান। ওই মামলা নিয়ে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে একটি সমঝোতায় আসার জন্য ট্রাম্পকে রাজি করানোর চেষ্টা করেন তিনি।
গতকাল ওয়াশিংটনের একটি ফেডারেল আদালতে এ মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হলে ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলাটির বিচার আর হবে না বলে আশা করছিলেন জাকারবার্গ। তবে এখন তাঁর সে আশায় ছেদ পড়েছে।এই তদবিরের অংশ হিসেবে জাকারবার্গ ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে অর্থায়নও করেন এবং মেটার কনটেন্ট–সংক্রান্ত (আধেয়) নীতিমালা ঢেলে সাজান। তা ছাড়া ওয়াশিংটনে ২ কোটি ৩০ লাখ ডলারে একটি ম্যানশনও কেনেন জাকারবার্গ। ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিটির কাছাকাছি থাকতেই তিনি এ ম্যানশন কিনেছেন বলে মনে করা হয়।
জাকারবার্গের সাবেক সহযোগী শেরিল স্যান্ডবার্গ ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাহীদের অনেকেরই এ মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার কথা রয়েছে। অন্তত আট সপ্তাহ ধরে মামলাটির বিচার চলতে পারে।
আরও পড়ুন মার্ক জাকারবার্গের করা সবচেয়ে বড় ভুল কোনটি জানেন১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ফেসবুক ২০১২ সালে শতকোটি ডলারে ইনস্টাগ্রাম কিনে নেয়। সেই সময় ইনস্টাগ্রাম ছোট হলেও ছবি আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে সম্ভাবনাময় একটি অ্যাপ ছিল। বর্তমানে এটির সক্রিয় ব্যবহারকারী ২০০ কোটি।
কোনো প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য সেটি অধিগ্রহণ করা যুক্তরাষ্ট্রে বেআইনি নয়। ফেসবুক সেই কাজই করেছে।মার্ক হ্যানসেন, মেটার অ্যাটর্নিজাকারবার্গের ই-মেইলের বরাত দিয়ে এফটিসি আদালতে বলেছে, ইনস্টাগ্রাম অধিগ্রহণ করার আগে তিনি এটির উত্থানকে ‘প্রকৃতপক্ষেই আতঙ্ক’ হিসেবে নিয়েছিলেন। ই-মেইলে জাকারবার্গ লিখেছিলেন, ‘(ইনস্টাগ্রামের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমে) এটির পেছনে আমরা কেন বিপুল অঙ্কের অর্থ গুনতে যাব।’
এফটিসি আরও যুক্তি দেয়, একই প্রক্রিয়ায় মেটা ২০১৪ সালে ১ হাজার ৯০০ কোটি ডলারে হোয়াটসঅ্যাপ কিনে নেয়।
আরও পড়ুনএবার ২০০ বিলিয়ন ডলারের ক্লাবে মার্ক জাকারবার্গ, আগে থেকে আছেন তিনজন২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম র ক জ ক রব র গ র ন জ ক রব র গ ইনস ট গ র ম ফ সব ক র টসঅ য প ব যবহ এফট স যবহ র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাক্তন স্ত্রী দেবশ্রীর সঙ্গে প্রেমের সিনেমা করতে চান প্রসেনজিৎ
ভারতীয় বাংলা সিনেমার তারকা জুটি প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি ও দেবশ্রী রায়। পর্দায় এ জুটির রোমান্স দেখে মুগ্ধ হয়েছেন অসংখ্য ভক্ত। রুপালি পর্দার রোমান্স ব্যক্তিগত জীবনেও গড়ায়। ভালোবেসে দেবশ্রী রায়কে বিয়ে করেন প্রসেনজিৎ। কিন্তু কয়েক বছর পরই এ বিয়ে ভেঙে যায়। তারপর দুজনের পথ আলাদা হয়ে যায়।
সংসার ভাঙার পাশাপাশি দর্শক হারান রুপালি পর্দার জনপ্রিয় এই জুটিকে। এরপর আর কোনো সিনেমায় একসঙ্গে দেখা যায়নি তাদের। অবশেষে দূরত্ব কমিয়ে দেবশ্রীর সঙ্গে সিনেমা করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করলেন প্রসেনজিৎ।
আরো পড়ুন:
নিজেকে তৈরি করে খোলামেলা দৃশ্যে অভিনয় করব: স্বস্তিকা
ছেলের বন্ধুরা ‘দিদি’ বলে ডাকে: শ্রাবন্তী
কিছুদিন আগে ‘আমি যখন হেমা মালিনী’ সিনেমার প্রচারে চিরঞ্জিত চক্রবর্তী বলেছিলেন—“দেব-শুভশ্রী জুটির পর আমি চাই আবার প্রসেনজিৎ-দেবশ্রী জুটি ফিরুক, এই জুটিটা ফেরার অত্যন্ত প্রয়োজন।” ‘দেবী চৌধুরানী’ সিনেমার প্রচারে চিরঞ্জিতের এই বক্তব্য প্রসেনজিৎকে জানানো হয়।
এ বিষয়ে প্রসেনজিৎ বলেন, “আমি তো চাই দীপকদা একটা স্ক্রিপ্ট লিখুক আমাদের জন্য, আমার বহুদিনের ইচ্ছা ছিল এবং আমি অনেকবার দীপকদাকে বলেছি যে, আমি তোমার পরিচালনায় একটা কাজ করতে চাই। দীপকদা, আমাদের জন্য যদি পরিচালনা করেন তাহলে অবশ্যই আমি সিনেমা করতে চাই। আর আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে দেবশ্রীর সঙ্গে আবারো একটা পরিণত প্রেমের সিনেমা করতে চাই।”
তাহলে কী পুরোনো তিক্ততা ভুলে গেছেন প্রসেনজিৎ? জবাবে এই নায়ক বলেন, “আমার কারো সঙ্গে কোনো তিক্ততা নেই। যে আমার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলবে, আমি সব সময় তাদের জন্য আছি। আর কোনো তিক্ততা নিয়ে বাঁচতে চাই না, যে কটা দিন আছি সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক নিয়েই থাকতে চাই।”
এক সময় দেবশ্রীকে নিয়ে কথা বলতে খুব একটা স্বাচ্ছন্দ বোধ করতেন না প্রসেনজিৎ। তবে অভিমান ভুলে কাজের ক্ষেত্রে আবার এক হওয়ার কথা বললেন তিনি। বর্তমানকে ভালোবেসে যেমন এগিয়ে যান, ঠিক তেমনই কি অতীতকেও আঁকড়ে বাঁচেন?
এ প্রশ্নের জবাবে প্রসেনজিৎ বলেন, “নিজের অতীতকে কখনো উপেক্ষা করা যায় না। মাঝেমাঝেই আমি আমার অতীতে ফিরে যাই; সেই সময়গুলোর জন্যই আজকের আমি। অতীত আমাকে অনেক ভালোবাসা, রাগ-দুঃখ-ক্ষোভ দিয়েছে। আমার ক্ষেত্রে যেটা অল্প কিন্তু তবু আছে সেটা হলো—ঘৃণা। সেটাও পেয়েছি, তবে অতীত যেমনই হোক না কেন, তাকে কখনো ফেলে দেওয়া যায় না। আমরা সবাই মাঝে মাঝে অতীতে ফিরে যাই।”
সময়ের সঙ্গে অনেক কিছু বদলে গেছে। বর্তমান প্রজন্মের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতেও দ্বিধাবোধ করেন না প্রসেনজিৎ।তার ভাষায়—“এই বদলগুলোকে মেনে না নিলে আমাকে পিছিয়ে পড়তে হবে। আমি প্রচুর বদল দেখেছি, তবে যেই সময় যেটা এসেছে, তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছি, এটাই তো করা উচিত। না হলে বর্তমান প্রজন্ম থেকে দূরে সরে যেতে হবে।”
ঢাকা/শান্ত