মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরেছে সেনা-নৌবাহিনীর টিম
Published: 15th, April 2025 GMT
মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর বাংলাদেশ মানবিক কার্যক্রম এবং উদ্ধারকাজ সফলভাবে সম্পন্ন করে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর টিম।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ বানৌজা সমুদ্র অভিযান জাহাজে এই উদ্ধারকারী টিম চট্টগ্রামে ফিরে আসে।
বাংলাদেশ নৌবাহিনী যথাযথ সামারিত রীতিতে ফিরে আসা জাহাজ ও উদ্ধারকারী দলকে স্বাগত জানায়। ফিরে আসা টিমে ছিলে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর উদ্ধারকর্মী, ডাক্তার, নার্স এবং অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত সমন্বিত ইউনিট।
পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় সূত্র জানায়, সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যরা উদ্ধারকাজ ছাড়াও মিয়ানমার সরকারের অনুরোধে বাংলাদেশ ১৫১ দশমিক ৫ টন মানবিক সহায়তা মিয়ানমারে পৌঁছে দিয়েছে। যার মধ্যে খাদ্য, ওষুধ, তাঁবু, পানীয় জল, কম্বল, পোশাক, স্বাস্থ্যবিধি পণ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছিল।
দায়িত্বশীল প্রতিবেশী এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অভিজ্ঞ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ মিয়ানমারের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছিল এবং তাৎক্ষণিকভাবে মানবিক সহায়তা প্রদান করেছিল।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস মিয়ানমার সরকারের কাছে একটি সমবেদনাপত্র পাঠিয়ে মানবিক সহায়তা প্রদানের প্রস্তাব দেন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং মায়ানমারে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাসঙ্গিক মানবিক কার্যক্রমের সমন্বয় সাধন করে।
৩০ মার্চ থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত, তিনটি ধাপে, পাঁচটি বাংলাদেশি বিমান এবং একটি নৌবাহিনীর জাহাজ ১৫১ দশমিক ৫ টন সহায়তা পৌঁছে দেয়। মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তিন ধাপে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে বাংলাদেশের সহায়তা হস্তান্তর করেন। দূতাবাস মিয়ানমারে প্রবাসী বাংলাদেশিদেরও মান্দালয় শহরে মানবিক কর্মকাণ্ডে নিযুক্ত করেছিল বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
ঢাকা/রেজাউল/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।