সৌরঝড় শব্দের সঙ্গে আমরা অনেকেই পরিচিত। সূর্যের পৃষ্ঠ থেকে নির্গত শক্তিশালী বিকিরণ ও চার্জিত কণার বিস্ফোরণের মাধ্যমে সৌরঝড় সৃষ্টির হয়। এই ঝড়ের সময় স্যাটেলাইট যোগাযোগ, জিপিএস, রেডিও তরঙ্গ ও বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটে থাকে। শিগগিরই আকারে বড় ও শক্তিশালী একটি সৌরঝড় বা সুপারস্টর্মের আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা। এতে বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট দুর্যোগ বা অ্যাপোক্যালিপস দেখা যেতে পারে। যেকোনো মুহূর্তে বড় আকারের সেই সৌরঝড় পৃথিবীর ওপরে আঘাত হানতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।
১ হাজার ২৫০ বছর আগে সর্বশেষ বড় আকারের সৌরঝড় আঘাত হেনেছিল পৃথিবীতে। সেই ঘটনাকে মিয়াকি ইভেন্ট বলা হয়ে থাকে। পৃথিবীতে আঘাত হানতে যাওয়া সৌরঝড়টি অনেকটা মিয়াকি ইভেন্টের মতো হতে পারে। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ম্যাথিউ ওয়েন্স বলেন, ‘আরেকটি মিয়াকি ইভেন্ট পৃথিবীতে বিপর্যয় ঘটাতে পারে। আপনি যদি মহাকাশ পদার্থবিজ্ঞানী হন তবে, তা আপনার জন্য উত্তেজনাপূর্ণ। যদিও এমন ঘটনা বিদ্যুৎ সরবরাহকারীদের জন্য উদ্বেগের। যদি আবার মিয়াকির মতো কোন ঘটনা ঘটে, তবে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনা দেখতে হবে।’
আরও পড়ুনপৃথিবীতে আঘাত হানবে সৌরঝড়, কবে ও কখন০৩ অক্টোবর ২০২৪সৌরঝড়ের কারণে জনজীবন থমকে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন ম্যাথিউ ওয়েন্স। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বড় আকারের কোন সৌরঝড় আঘাত হানার ঘটনা আগে থেকে জানার সুযোগ বেশ কম। এমন কোন ঘটনা ঘটলে ১৮ ঘণ্টা আগে কিছুটা আন্দাজ করা যেতে পারে। ঝড়ের কারণে স্যাটেলাইট বিকল হলে অনেক সংকট তৈরি হবে। বিমান চলাচলে বিভ্রাট দেখা যাবে।’
১৮৫৯ সালে পৃথিবীতে শক্তিশালী সৌর ঝড় আঘাত হেনেছিল। ক্যারিংটন ইভেন্ট নামে পরিচিত সেই ঝড়ের সময় আকাশে বিস্ময়কর অরোরা দেখা গেলেও সারাবিশ্বের টেলিগ্রাফ সিস্টেম বিকল হয়ে যায়। পৃথিবীতে আঘাত হানতে যাওয়া সৌরঝড়টি ক্যারিংটন ইভেন্টের চেয়েও ১০ গুণ বেশি শক্তিশালী হতে পারে।
সূত্র: ডেইলি মেইল
আরও পড়ুনঅরোরা সম্পর্কে জানতে চান বিজ্ঞানীরা২৮ জানুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, নিম্নমুখী চালের দাম
ঈদের বন্ধের আমেজ কাটতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে চট্টগ্রামের পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলো। ক্রেতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারগুলোতে বেড়েছে সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহ। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক দিনের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে সবজির দাম। পেঁয়াজ, রসুন ও চালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও নিম্নমুখী।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার পর নগরের কাঁচাবাজারে সবজির সরবরাহ কমে যায়। ফলে দাম ছিল কিছুটা বাড়তি। গত রোববার ও সোমবারের দিকে নগরের আড়তগুলোতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে। অধিকাংশ সবজির দামও ৪০ টাকার আশপাশে ছিল। তবে গত মঙ্গলবার থেকে আবারও বাজারে পুরোদমে সবজির সরবরাহ শুরু হয়েছে। যার কারণে দাম কমতে শুরু করেছে।
আজ শুক্রবার নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারের পাইকারি আড়তে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২০ থেকে ৪০ টাকা দরে। বেশির ভাগ সবজির দাম প্রতি কেজি ১০ থেকে ৩৫ টাকা। তবে খুচরা বাজারগুলোতে প্রায় দ্বিগুণ দামে সবজি বিক্রি হতে দেখা যায়। নগরের বহদ্দারহাট, চকবাজার, সাব এরিয়া ও কাজির দেউড়ি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম ৬০ টাকার বেশি। লাউ, মিষ্টিকুমড়া ও ফুলকপির দাম কিছুটা কম। এসব সবজির দাম ৫০ টাকার আশপাশে। খুচরা বাজারগুলোতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি দরে। পরিবহন খরচ ও আগে কেনার অজুহাতে বাড়তি দাম নিচ্ছেন বিক্রেতারা। রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তদার নুরুল ইসলাম বলেন, বাজারে সব সবজির দাম কম। কিন্তু খুচরা ব্যবসায়ীদের কারণে ভোক্তাদের ভোগান্তি হচ্ছে। আড়তের দামের দ্বিগুণ দামে তাঁরা সবজি বিক্রি করছেন।
সবজির বাজারের পাশাপাশি পেঁয়াজ, রসুন ও চালের দামও নিম্নমুখী। খাতুনগঞ্জের পাইকারি আড়তে আজ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫২ টাকা দরে। খুচরা পর্যায়ে দাম ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি। অন্যদিকে রসুনের কেজি আড়তে ছিল ৮৫ থেকে ১১০ টাকা। খুচরায় সেটি ১০০ থেকে ১৩০ টাকা।
পাহাড়তলী চালের আড়তে মোটা চাল (গুটি, স্বর্ণা) কেজিপ্রতি ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে জিরাশাইল ৭২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত তিন দিন আগ থেকে চালের বাজার কিছুটা নিম্নমুখী বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চালের দাম কমেছে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বলেন, চালের সরবরাহ যথেষ্ট আছে। চালের দাম বাড়ার আশঙ্কা নেই এখন।