খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের প্রতিবাদ ও উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সমাবেশ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকাল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে এই প্রতিবাদী সমাবেশ আয়োজন করে রাবি শিক্ষার্থীরা।

প্রতিবাদী সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক আকিল বিন তালেব বলেন, “কুয়েটের শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতরা যে অমানবিক হামলা চালিয়েছে তারপরও সেখানকার উপাচার্য চুপ করে আছেন। তিনি বহিরাগতদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছে। নিজের ক্যাম্পাসের মধ্যে বহিরাগতদের দ্বারা হামলার শিকার হয়েও শিক্ষার্থীদের নামে মামলা হয়েছে। কিন্তু তিনি কোনো প্রতিবাদ করেননি। তার মানে তিনি নিজেও অন্যায়ের সঙ্গে যুক্ত।”

আরো পড়ুন:

রাবির পরীক্ষার জন্য শনিবার বন্ধ থাকবে জবি

ফ্যাসিবাদমুক্ত বর্ষবরণে রাবি শিক্ষার্থীদের অনুভূতি

তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের পাশে না থেকে তিনি হল বন্ধ করে দিয়েছেন। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে তিনি শিক্ষার্থীদের পাশে না থেকে বহিরাগতদের সঙ্গে এবং রাজনৈতিক পাওয়ারের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছে, যা আমরা ফ্যাসিবাদী আমলে দেখেছি।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং কুয়েটের শিক্ষার্থীরা তাদের উপাচার্যর পদত্যাগের দাবিতে যে প্রতিবাদ করেছে, আমরা তাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করছি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাবি শাখার সাবেক সমন্বয়ক মেশকাত চৌধুরি মিশু বলেন, “নতুন বাংলাদেশে ছাত্রদের রক্তের উপর পাড়া দিয়ে যে প্রশাসন দায়িত্ব নিয়েছে, সেই প্রশাসন'ই  রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য সাধারণ ছাত্রদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মামলা দিয়ে বহিষ্কার করছে। কুয়েট উপাচার্য যা করেছে, তার সাবধান হওয়ার কিছুই নেই। অনতিবিলম্বে তার পদত্যাগ চাই। যদি সে নিজের ইচ্ছায় পদত্যাগ না করে, তাহলে রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমতা দিয়ে তাকে বহিষ্কার করতে হবে।”

আরেক সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, “৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে প্রত্যেকটা ক্যাম্পাসে আধিপত্যবাদের রাজনীতি শুরু হয়েছে। আমাদের নয় দফা দাবির ৯ নাম্বারে উল্লেখ ছিল, ক্যাম্পাসে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি ও আধিপত্যবাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। কিন্তু বিপ্লবের ৯ মাস পার হয়ে গেলেও তার কোনো পদক্ষেপ আমাদের চোখে পড়েনি। কুয়েট উপাচার্য যা করেছে তা স্বৈরাচার হাসিনার সঙ্গে সমতুল্য।”

তিনি বলেন, “দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী কোনো উপাচার্যকে স্বপদে দেখতে চাই না। অবিলম্বে তার পদত্যাগ চাই এবং আমরা কুয়েট শিক্ষার্থীদের এক দফার সঙ্গে সম্পুর্ণভাবে একমত পোষণ করছি।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র পদত য গ উপ চ র য র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ