Samakal:
2025-08-01@19:01:13 GMT

ফাইলে বন্দি ৭৭০ হারভেস্টার

Published: 17th, April 2025 GMT

ফাইলে বন্দি ৭৭০ হারভেস্টার

ভর্তুকি দামে দেওয়া সমন্বিত ধান মাড়াই যন্ত্র (কম্বাইন হারভেস্টার) নিয়ে লুকোচুরি গেল ১৫ বছর ধরে চলেছে সুনামগঞ্জের হাওরজুড়ে। এখনও সেটি অব্যাহত আছে। হিসাবের ফাইলে হারভেস্টার যন্ত্রের যে খতিয়ান, বাস্তবে তার দেখা নেই।

জেলায় ৭৭০টি হারভেস্টার মেশিন কাজ করছে বলে দাবি করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। অচল মেশিনের সংখ্যা ৬৯টি। অথচ স্থানীয় কৃষকদের দাবি, এতগুলো ধানকাটার যন্ত্র হাওরে নেই। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় হারভেস্টার আছে ৮৫টি, এর মধ্যে সচল ৭৮টি এবং কাজ করছে না ৭টি দাবি করা হয়েছে। বাস্তবতার সঙ্গে এই তথ্যের মিল পাওয়া যায়নি।

কৃষি অফিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গেল শনিবার সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার কাঠইর ইউনিয়নে গিয়ে সাতটি কম্বাইন হারভেস্টারের মধ্যে একটির দেখা মিলেছে। সেটিও বিকল।

ইউনিয়নের গোলেরগাঁও গ্রামে একই পরিবারের চার ভাইয়ের নামে ৭০ শতাংশ ভর্তুকির চারটি হারভেস্টার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। ২০২২ সালে বরাদ্দ পাওয়া ওই হারভেস্টার গেল দুই বছরে চোখে দেখেছেন– এমন কৃষক সেখানে খুঁজে পাওয়া যায়নি। যন্ত্রগুলো কোথায় আছে, এলাকার কেউ জানেন না। অনেকের ধারণা, এই হারভেস্টারগুলো বিক্রি হয়ে গেছে।

ইউনিয়নের কান্দারহাটি গ্রামের কৃষক ফারুক আহমেদ জানান, এলাকায় চারটি হারভেস্টার আছে; অথচ তারা দেখেন না। তারা নিশ্চিত, এলাকায় কোনো হারভেস্টার নেই। অভিযুক্তরা বলছেন, একটি যন্ত্র কোম্পানি তাদের না দিয়েই বিক্রি দেখিয়েছে। অন্য তিনটি যন্ত্রে ত্রুটি আছে। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার কাঠইর ইউনিয়নের সাতজনকে হারভেস্টার দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন– গোলেরগাঁও গ্রামের আবরু মিয়া, আনোয়ার হোসেন, আব্দাই মিয়া ও আয়ুব আলী, কাঠইর গ্রামের আব্দুল মতিন, শাখাইতির আব্দুল হান্নান ও কলাইয়ার মিরাজুল আমিন। 

এসব এলাকায় গিয়ে জানা যায়, আরজ আলীর পরিবার এলাকায় আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে পরিচিত। তাঁর এক ছেলে শাহ্‌ আলম দেলোয়ার আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা। তিনি বলেন, চার ভাইয়ের নামে ৭০ শতাংশ ভর্তুকির চারটি হারভেস্টার বরাদ্দ হয়েছে। আব্দাই মিয়ার নামে এস-কিউ কোম্পানির যে হারভেস্টার বরাদ্দ হয়েছিল, সেটি তারা পাননি। আব্দাই মিয়ার নামে বিতরণ দেখিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছে ওই কোম্পানি। এ বিষয়ে সম্প্রতি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তারা। অন্য তিনটি হারভেস্টার যন্ত্রের একটি বাড়িতে নষ্ট অবস্থায় মেরামত করতে দেখা যায়। অন্য দুটির একটি যশোরে, আরেকটি জেলার জামালগঞ্জে রয়েছে বলে জানান তিনি।
এস-কিউ কোম্পানির সুনামগঞ্জের মার্কেটিং অফিসার তানভির আহমেদকে এ ব্যাপারে কথা বলতে কয়েকবার ফোন করে এবং খুদে বার্তা পাঠিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।
কাঠইর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিনয় তালুকদার জানান, এখানে গেল বছরের জানুয়ারি মাসে যোগদান করেছেন তিনি। ইউনিয়নের সাতটি হারভেস্টার যন্ত্রের চারটি কাজ করছে না, এলাকায়ও নেই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের জানিয়েছেন। অন্য তিনটির একটি দেখার হাওরে, অন্য দুটি কৃষকের বাড়িতে আছে– চাইলে কৃষকরা ধান কাটার জন্য নিতে পারবেন।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাকিবুল আলমের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আব্দাই মিয়া হারভেস্টার যন্ত্রের টাকা দেওয়ার পর কোম্পানিকে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। কোম্পানি ৭০ শতাংশ ভর্তুকিও কৃষি বিভাগ থেকে নিয়েছে। ডেলিভারিও দেখানো হয়েছে। ২০২২ সালের শেষের দিকে অফিসিয়ালি হারভেস্টার যন্ত্রটি পেয়েছিলেন তিনি। সব কার্যক্রম শেষে বছরখানেক পর তিনি জানালেন, যন্ত্রটি পাননি। কৃষি অফিসের তদারক কর্মকর্তা বাড়িতে খোঁজ নিতে গেলে তিনি (আব্দাই মিয়া) জানান, যন্ত্র পাননি তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক মোস্তফা ইকবাল আজাদ বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে গেল অর্থবছর পর্যন্ত ৭০ শতাংশ ভর্তুকির হারভেস্টার যন্ত্র দেওয়া হয়েছে। ভর্তুকির হারভেস্টার দেওয়ার ক্ষেত্রে কৃষক নির্ধারণ করে উপজেলা যাচাই কমিটি। ওই কমিটিগুলোর সভাপতি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সদস্য সচিব কৃষি কর্মকর্তা। বরাদ্দকৃত হারভেস্টার থেকে বেশি কৃষক হারভেস্টার পেতে আবেদন করলে, যাচাই কমিটি কর্তৃক কৃষক নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ স ন মগঞ জ সদর উপজ ল কর মকর ত শ ভর ত ক ভর ত ক র অফ স র এল ক য় বর দ দ

এছাড়াও পড়ুন:

সিরাজ–কৃষ্ণাতে ম্যাচে ফিরল ভারত

অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফিতে মোহাম্মদ সিরাজের মতো আর কোনো পেসার নেই, এভাবে বলাই যায়। কারণ, সিরাজ ও ক্রিস ওকসই এই সিরিজের সব কটি ম্যাচ খেলেছেন। সেই ওকসও ওভাল টেস্টের প্রথম দিনে চোট পেয়ে টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন, টিকে আছেন সিরাজ।

টিকে থাকা সিরাজ কী করেছেন? গতকাল ওভাল টেস্টের দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনে ৮ ওভারের এক স্পেলে ফিরিয়েছেন ওলি পোপ, জো রুট, জ্যাকব বেথেলকে। এরপর আরও এক উইকেট। সিরাজকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন প্রসিধ কৃষ্ণা। দ্বিতীয় সেশনের শেষ ওভারে দুই উইকেটসহ তিনিও নিয়েছেন ৪ উইকেট। ভারতের ২২৪ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ড অলআউট হয়েছে ২৪৭ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ভারত কাল দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে ২ উইকেটে ৭৫ রান নিয়ে। দুই ‘জীবন’ পাওয়া যশস্বী জয়সোয়াল ৫১ ও আকাশ দীপ ৪ রান নিয়ে উইকেটে আছেন।

অথচ কাল প্রথম সেশন শেষে ম্যাচের চিত্র ছিল আলাদা। ইংল্যান্ড প্রথম ১৬ ওভারেই তোলে ১ উইকেটে ১০৯ রান। দুই ওপেনার জ্যাক ক্রলি ও বেন ডাকেট ৭৭ বলে গড়েন ৯২ রানের জুটি। এমন বাজবলীয় শুরুর পর চিত্র পুরোপুরি বদলে যায় দ্বিতীয় সেশনে। শুরুটা করেন কৃষ্ণা। তাঁর শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন ক্রলি। পরের গল্পটা সিরাজের। প্রথম স্পেলে ৪ ওভারে ৩১ রান দেওয়া সিরাজকে অধিনায়ক গিল যখন বোলিংয়ে আনেন, তখন ইংল্যান্ডের রান ২৪ ওভারে ২ উইকেটে ১৪২। তিনি একে একে ফেরান দুই সেট ব্যাটসম্যান পোপ (২২), রুটকে (২৯) ও বেথেলকে (৬)। এরপর কৃষ্ণার দুই উইকেটে দ্বিতীয় সেশনটা পুরোপুরি ভারতের হয়ে যায়। ইংল্যান্ড দ্বিতীয় সেশনে ১০৬ রান তুলতে হারায় ৬ উইকেট। তৃতীয় সেশনে আর ৩২ রান যোগ করতে পারে তারা।

আরও পড়ুনকাঁধের চোটে ভারতের বিপক্ষে আর খেলতে পারবেন না ওকস১১ ঘণ্টা আগেলোকেশ রাহুলকে আউট করার পর অ্যাটকিনসনের আনন্দ

সম্পর্কিত নিবন্ধ